সামাজিক ন্যায়বিচার ও রাষ্ট্র সংস্কারই এই সরকারের প্রধান চ্যালেঞ্জ: প্রধান উপদেষ্টা

প্রধান উপদেষ্টা
  © সংগৃহীত

সামাজিক ন্যায়বিচার ও রাষ্ট্র সংস্কারই এই সরকারের প্রধান চ্যালেঞ্জ বলে মন্তব্য করেছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা নোবেলজয়ী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

শনিবার (১৫ নভেম্বর) রাজধানীতে আন্তর্জাতিক ভূরাজনৈতিক সম্মেলনের উদ্বোধনী ভাষণে তিনি এ মন্তব্য করেন।

ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, আগামীর বাংলাদেশ হবে ন্যায়বিচার, মানবাধিকার ও বাকস্বাধীনতার।

তিনি আরও বলেন, আমরা মাত্র ১০০ দিন আগে একটি ঐতিহাসিক রাজনৈতিক পরিবর্তনের সাক্ষী হয়েছিলাম। এটি ছিল ছাত্র-জনতার একটি বিপ্লব, যা গত ১৬ বছর ধরে শাসন করা এক ফ্যাসিস্ট সরকারকে উৎখাত করেছে। এর জন্য এক হাজার ৫০০ শিক্ষার্থী, শ্রমিক এবং সাধারণ প্রতিবাদকারীকে প্রাণ দিতে হয়েছে। আহত হয়েছেন প্রায় ২০ হাজার ছাত্র-জনতা। এই আন্তর্জাতিক সম্মেলনের মাধ্যমে আসুন আমরা তাদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করি- যারা নিজেদের জীবন উৎসর্গ করেছেন, যারা চিরদিনের জন্য তাদের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ, দৃষ্টিশক্তি এবং শারীরিক সক্ষমতা হারিয়েছেন এবং যারা এখনও জীবনযুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছেন।

এর আগে, শুক্রবার (১৫ নভেম্বর) সেন্টার ফর গভর্নেন্স স্টাডিজের (সিজিএস) নির্বাহী পরিচালক জিল্লুর রহমান এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে উদ্বোধনী বক্তা হিসেবে পেয়ে আমরা সম্মানিত বোধ করছি।

জিল্লুর রহমান আরও বলেন, সেন্টার ফর গভর্নেন্স স্টাডিজ (সিজিএস) গত দুই বছর ধরে বার্ষিক বে অব বেঙ্গল কনভারসেশনের আয়োজন করে আসছে। বিগত বছরগুলোতে এ সম্মেলন আয়োজন করতে সরকারের পক্ষ থেকে নানা বাধা দেওয়া হয়েছিল। তবে এ বছর আমরা অনেক সহযোগিতা পাচ্ছি। এটি আমাদের তৃতীয় বছর এবং আমাদের সবচেয়ে বড় আয়োজন করতে যাচ্ছি।

সিজিএসের এই নির্বাহী পরিচালক বলেন, সাম্প্রতিক ঘটনাবলি আমাদের জন্য সংলাপ ও সহযোগিতার জন্য নতুন পথ উন্মুক্ত করাসহ, গণতান্ত্রিক নীতি নতুনভাবে সংজ্ঞায়িত করার বড় ধরনের সুযোগ তৈরি করেছে। এই সম্মেলনে গণতন্ত্র, মানবাধিকার, জলবায়ু পরিবর্তন থেকে শুরু করে অর্থনৈতিক উন্নয়ন, নিরাপত্তা, প্রযুক্তিগত পরিবর্তন, সীমান্ত পেরিয়ে সব চ্যালেঞ্জগুলো অন্বেষণ করা হবে।

তিনি বলেন, আমরা বিশ্বাস করি, এ অঞ্চলের দেশগুলোর কূটনৈতিক সম্পর্ক উন্নয়নে ও শান্তি প্রতিষ্ঠায় এ সম্মেলন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। বিশেষভাবে, এ সম্মেলনের মাধ্যমে নতুন বাংলাদেশ পুনর্গঠনে কুটনৈতিকভাবে লাভবান হবে। রাজনৈতিক, মানবাধিকার, অপতথ্য, গুজবসহ সব বিষয় নিয়ে আমরা কথা বলতে চাই।

প্রসঙ্গত, আজ থেকে রাজধানীর প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে তিন দিনব্যাপী এ সম্মেলন শুরু হয়ে চলবে আগামী ১৮ নভেম্বর পর্যন্ত। এতে ৮০টিরও বেশি দেশ থেকে ২০০ জনের বেশি আলোচক, ৩০০ জন প্রতিনিধি এবং ৮০০ জন অংশ নেবেন। এবারের থিম নির্ধারণ করা হয়েছে ‘এ ফ্র্যাকচারড ওয়ার্ল্ড’।