অন্তর্বর্তী সরকারের ১০০ দিন: সাফল্য ও ব্যর্থতা

অন্তর্বর্তী
  © ফাইল ছবি

গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানের মুখে পদত্যাগ করে ভারতে পালিয়ে যান টানা সাড়ে ১৫ বছর ধরে ক্ষমতায় থাকা আওয়ামী লীগ সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর ৮ আগস্ট ড. মোহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত হয় অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। ১৬ নভেম্বর এই সরকারের ১০০ দিন পূর্ণ হয়েছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অন্তর্বর্তী সরকারের ১০০ দিনে রেমিট্যান্স বৃদ্ধি, ব্যাংকিং খাতে সুশাসনসহ অর্থনৈতিক খাতে বড় ধরনের পরিবর্তন এসেছে। উল্লেখযোগ্য সফলতা হলো, নতুন বাংলাদেশ গড়তে ১০টি সংস্কার কমিশন গঠন, রেমিট্যান্স বৃদ্ধি, সরকার বেসরকারি ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদে সংস্কার, দুর্বল ব্যাংককে সহায়তা, বিদেশি ঋণ পরিশোধ, নতুন টাকা না ছাপানো, অযাচিত প্রকল্পে অর্থ বরাদ্দ স্থগিত, ব্যাংক, পুঁজিবাজারে সংস্কার কমিশন, অর্থনৈতিক শ্বেতপত্র কমিটি গঠন, বিচার ব্যবস্থা, সাংবিধানিক ও রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানে যোগ্য ব্যক্তিদের নিয়োগ দেওয়া।

সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের সিনিয়র রিসার্চ ফেলো তৌফিকুল ইসলাম খান বলেন, সুশাসন আনার ক্ষেত্রে যে পদক্ষেপগুলো নেওয়া হয়েছে বিশেষ করে ব্যাংকের ভেতরে যে কর্পোরেট গভর্নেন্স, এ বিষয়ে ইতিবাচক একটি পদক্ষেপ এসেছে।

তিনি আরও বলেন, বিভিন্ন শুল্ক কমানো এবং কর ছাড় দেওয়ার বিষয়টিও ইতিবাচক। এ ছাড়া বৈদেশিক লেনদেনের ক্ষেত্রেও এক ধরনের প্রাথমিক স্থিতিশীলতা এসেছে।

এদিকে, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি, বাহিনীগুলোর সংস্কার, মূল্যস্ফীতি, দুর্নীতি দূর করা ও রাজনৈতিক দলের সংস্কারের ক্ষেত্রে এখনও গুণগত পরিবর্তন সম্ভব হয়নি।

বিশ্লেষকরা বলছেন, সাফল্যের পাশাপাশি অনেকগুলো সমস্যাও রয়েছে। কর ছাড় দিয়েও নিত্যপণ্যের দাম কমানো যাচ্ছে না। পুলিশ ও আনসার বাহিনীতে শৃঙ্খলা ফেরেনি, জনপ্রশাসনে শুদ্ধি অভিযান শেষ হয়নি, রাজনৈতিক দলগুলোর সংস্কার করা সম্ভব হয়নি। এসবে বিশেষ নজর দিতে হবে।

এ বিষয়ে রাজনৈতিক বিশ্লেষক আশরাফ কায়সার বলেন, দ্রব্যমূল্য হলো প্রথম চ্যালেঞ্জ। কারণ, মানুষ বাজারে গিয়ে সঠিক দামে পণ্য কিনতে না পারলে তারমধ্যে হতাশা তৈরি হবে এবং একসময় সে বিক্ষুব্ধ হয়ে যাবে।

তিনি বলেন, আমরা আশা করেছিলাম সরকার অনেক তীব্র গতির হবে, তৎপরতা দেখাবে—কিন্তু সেভাবে দেখিনি। প্রশাসনকে ঢেলে না সাজানোর কারণে পদেপদে তার খেসারত দিতে হচ্ছে।

রাষ্ট্র সংস্কারে গঠিত কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়ন করতে পারলে দেশের সব সেক্টরে আমূল পরিবর্তন সম্ভব বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। সরকারের সামনে এখন চ্যালেঞ্জ দ্রুত সংস্কার শেষে নির্বাচনের রূপরেখা ঘোষণা।