এক-দেড় বছরের মধ্যে সংস্কার বাস্তবায়ন করা আমাদের লক্ষ্য: অর্থ উপদেষ্টা
- মোমেন্টস ডেস্ক
- প্রকাশ: ০৬ জানুয়ারি ২০২৫, ০৮:২৯ AM , আপডেট: ০৬ জানুয়ারি ২০২৫, ০৮:২৯ AM
এক থেকে দেড় বছরের সংক্ষিপ্ত মেয়াদে অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কার বাস্তবায়ন করার লক্ষ্য রয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ।
গতকাল রবিবার (৫ জানুয়ারি) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আয়োজিত ‘সৌদি-বাংলাদেশ অর্থনৈতিক সম্পৃক্ততা বৃদ্ধি: প্রবণতা, মূল চ্যালেঞ্জ ও দীর্ঘমেয়াদি প্রবৃদ্ধির সম্ভাবনা’ শীর্ষক প্রতিবেদনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, বাংলাদেশ এখনও ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের শাসনামলের দুর্নীতির ক্ষতিকর প্রভাব মোকাবেলা করার চেষ্টা করছে এবং তাদের বাস্তবায়িত ত্রুটিপূর্ণ নীতির কারণে বিদেশি বিনিয়োগ বিঘ্নিত হয়েছে, যা অর্থনৈতিক অগ্রগতির পথে বাধা সৃষ্টি করেছে।
তিনি জানান, অতীতের এই নীতিগত ভুলের কারণে সৌদি আরবের আরামকো এবং দক্ষিণ কোরিয়ার স্যামসাংসহ বেশ কিছু বৃহৎ বিদেশি বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশে বিনিয়োগ করতে পারেনি। তাদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আগ্রহ ছিল, কিন্তু সঠিকভাবে স্বাগত জানানো হয়নি, যার ফলে স্যামসাং ভিয়েতনামে চলে গেছে। এসব নীতিগত ভুল এখনই সংশোধন করতে হবে।
ড. সালেহউদ্দিন বলেন, আমাদের লক্ষ্য এক থেকে দেড় বছরের মধ্যে অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কার কার্যকরভাবে বাস্তবায়ন করা এবং অল্প সময়ের মধ্যে একটি স্বচ্ছ এবং অনুসরণযোগ্য পথ তৈরি করা।
তিনি বাংলাদেশ এবং সৌদি আরবের মধ্যে শক্তিশালী বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক গড়ে তোলার উপর গুরুত্ব আরোপ করেন। তিনি বলেন, সৌদি আরব বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার এবং বর্তমানে দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্যের পরিমাণ দুই বিলিয়ন মার্কিন ডলারে পৌঁছেছে, যা ভবিষ্যতে আরও বৃদ্ধি পেতে পারে।
তিনি আরও জানান, বাংলাদেশ সম্প্রতি বিভিন্ন উৎস থেকে ১.৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার পেয়েছে এবং শিগগির আরও ৭০০ মিলিয়ন ডলার পাওয়ার আশা রয়েছে। তবে চ্যালেঞ্জ হচ্ছে এই তহবিলের সর্বোত্তম ব্যবহার এবং পরিশোধ নিশ্চিত করা।
শেয়ারবাজারের সমালোচনা করে উপদেষ্টা বলেন, কিছু কোম্পানির কারখানা বন্ধ হয়ে গেলেও তাদের শেয়ারের দাম বাড়ছে, যা বাজারের স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন তুলছে। এ ধরনের অসঙ্গতিগুলো অবশ্যই নিরসন করতে হবে।
অনুষ্ঠানে পররাষ্ট্রবিষয়ক উপদেষ্টা তৌহিদ বলেন, বাংলাদেশকে আরও অনেক কিছু করতে হবে অর্থনৈতিক সুযোগ আকৃষ্ট করতে। তিনি বলেন, দীর্ঘদিন ধরে দাবি করা হলেও বাস্তবে বাংলাদেশ সবসময় বিনিয়োগবান্ধব ছিল না। তবে, অন্তর্বর্তী সরকার বিনিয়োগকারীদের জন্য ব্যবসার পরিবেশ সহজ করতে সচেষ্ট থাকবে।
সৌদি রাষ্ট্রদূত ইসা জানান, আরামকো বাংলাদেশে তেল শোধনাগার স্থাপন করতে আগ্রহী, যা বাংলাদেশ ও আশেপাশের অঞ্চলের জন্য একটি বড় সুযোগ হতে পারে। তিনি আরও বলেন, চট্টগ্রাম ও জেদ্দা বা দাম্মামের মধ্যে একটি সামুদ্রিক রুট স্থাপন করলে এটি ব্যবসা ও বাণিজ্যে বড় পরিবর্তন আনতে পারে।
বিদায়ী সৌদি রাষ্ট্রদূত অতীতের চ্যালেঞ্জগুলোর কথা তুলে ধরে বলেন, ২০১৬ থেকে ২০১৮ সালের মধ্যে আরামকো বাংলাদেশে তিনবার উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধিদল পাঠিয়েছিল, কিন্তু সে সময় তাদের গ্রহণ করা হয়নি। তবে, তিনি ভবিষ্যতের বিষয়ে আশাবাদী।