ঢাবি শিক্ষার্থী রনির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার কথা ভাবছে কর্তৃপক্ষ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) থিয়েটার অ্যান্ড পারফরম্যান্স স্টাডিজ বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী মহিউদ্দিন রনি গত ১১ দিন ধরে বাংলাদেশ রেলওয়ের অনিয়ম, অব্যবস্থাপনা ও যাত্রী হয়রানির প্রতিবাদসহ ৬ দফা দাবিতে রাজধানীর কমলাপুর রেলস্টেশনে একাই অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন।

রনির প্রতিবাদের বিষয়ে কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন ম্যানেজার মোহাম্মদ মাসুদ সারওয়ার জানিয়েছেন, রনির কার্যক্রম উদ্দেশ্যপ্রণোদিত কি না এবং এর পেছনে অন্য কোনো উদ্দেশ্য আছে কি না তা খতিয়ে দেখা হবে। যাত্রীসহ সবার নিরাপত্তার স্বার্থে তাকে স্টেশনের বাইরে অবস্থান করতে বলা হয়েছে। তাছাড়া স্টেশনের ভেতরে কারো আন্দোলন করার অনুমতি নেই।

স্টেশন ম্যানেজার  আরও বলেন, রনি ভোক্তা অধিকারে অভিযোগ করেছেন। কিন্তু ভোক্তা অধিকারের তো সময় লাগবে। রনি সেই সময় পর্যন্ত অপেক্ষা না করে কোন উদ্দেশ্যে এসব করছেন তিনিই ভালো জানেন। রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানকে হেয় করায় তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হতে পারে।

রনি ২ হাতে শিকল পরে হাতে একটি প্ল্যাকার্ড নিয়ে স্টেশনের বাইরে দাঁড়িয়ে আছেন। প্ল্যাকার্ডে লেখা 'বাংলাদেশ রেলওয়ের অব্যবস্থাপনা পরিবর্তনে ৬ দফা দাবিতে অবস্থান কর্মসূচী। গত ১১ দিন ধরে একাই এই অহিংস অবস্থান কর্মসূচী চালিয়ে যাচ্ছেন রনি।

দাবি বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাবেন জানিয়ে রনি বলেন, ২-১ দিনের মধ্যে লিখিত আকারে আমার দাবিগুলো রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের কাছে জমা দেব। 

আন্দোলনরত মহিউদ্দিন রনির দাবিগুলো হলো—

১. টিকিট কেনার ক্ষেত্রে সহজ ডট কম কর্তৃক যাত্রী হয়রানি অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে। হয়রানির ঘটনায় তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা নিতে হবে।

২. যথোপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়ার মাধ্যমে টিকিট কালোবাজারি প্রতিরোধ করতে হবে।

৩. অনলাইন-অফলাইনে টিকিট কেনার ক্ষেত্রে সর্বসাধারণের সমান সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করতে হবে।

৪. যাত্রী চাহিদার সঙ্গে সঙ্গতি রেখে ট্রেনের সংখ্যা বৃদ্ধিসহ রেলের অবকাঠামো উন্নয়নে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে।

৫. ট্রেনের টিকিট পরীক্ষক ও তত্ত্বাবধায়কসহ অন্যান্য দায়িত্বশীলদের কর্মকাণ্ড সার্বক্ষণিক মনিটর, শক্তিশালী তথ্য সরবরাহ ব্যবস্থা গড়ে তোলার মাধ্যমে রেল সেবার মান বৃদ্ধি করতে হবে।

৬. ট্রেনে ন্যায্য দামে খাবার, বিনামূল্যে বিশুদ্ধ পানি ও স্বাস্থ্যসম্মত স্যানিটেশন ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে।

রনি বলেন, গত ১৩ জুন বাংলাদেশ রেলওয়ের ওয়েবসাইট থেকে ঢাকা-রাজশাহী রুটের ট্রেনের টিকিট সংগ্রহের চেষ্টা করি। কিন্তু বিকাশ থেকে ভেরিফিকেশন কোড (যাচাইকরণ কোড) আসার পর পিন কোড (গোপন কোড) ছাড়াই আমার অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা কেটে নেওয়া হয়। কিন্তু তারাকোনো টিকিট দেয়নি এবং টাকা কেটে নেওয়ার কোনো ডকুমেন্টসও দেয়নি।

তিনি দাবি করেন, সেদিন কমলাপুর রেলস্টেশনে সার্ভার কক্ষে অভিযোগ জানালে আমাকে বলা হয় "সিস্টেম ফল" করার কথা। ১৫ দিনের মধ্যে টাকা না পেলে আবার যোগাযোগ করতে বলা হয়৷ ওই মুহূর্তে ওই কক্ষে থাকা কম্পিউটার অপারেটর ৬৮০ টাকার টিকিট ১ হাজার ২০০ টাকায় বিক্রি করেন।