হাতিরঝিল থানায় মৃত্যু: পরিবারকে মরদেহ দিতে পুলিশের শর্ত
- মোমেন্টস ডেস্ক
- প্রকাশ: ২১ আগস্ট ২০২২, ০৬:৪৬ PM , আপডেট: ২১ আগস্ট ২০২২, ০৬:৪৬ PM
রাজধানীর হাতিরঝিল থানা হেফাজতে মারা যাওয়া তরুণ রুমন শেখের মরদেহ নিয়ে পুলিশের টালবাহানার অভিযোগ করেছে পরিবার। বড় ভাই সুমন শেখ বলছেন, পুলিশ তার ভাইয়ের মরদেহ হস্তান্তরে শর্ত দিয়েছে। এ অবস্থায় অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়েছেন তারা।
রোববার (২১ আগস্ট) থানায় হেফাজতে মৃত্যু হওয়া রুমনের স্ত্রী জান্নাত আক্তার ও ভাই সুমন জানান, থানা থেকে ঘটনাটিকে অপমৃত্যু বলা হচ্ছে। বিষয়টি সন্দেহজনক হওয়ায় তারা মামলা করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু আদালত তাদের মামলা নেননি!
সুমন বলেন, আদালতে আমরা তিনজন আইনজীবীর সঙ্গে কথা বলি। আমাদের ধারণা মামলা নিতে আইনজীবীরাও ভয় পাচ্ছেন। মামলা নিতে তারা গড়িমসি করছেন। আইনজীবীরা বলেছেন, মামলা নিতে ৩-৪ দিন সময় লাগবে। আপাতত তারা লেখালেখির কাজটুকু করবেন। আমি আইনজীবীদের জিজ্ঞাসা করেছিলাম, আপনারা কেন মামলা নিচ্ছেন না? থানা থেকে ফোন দিলে কি আপনারা পিছিয়ে যাবেন? উত্তরে আইনজীবীরা জানান, তারা পিছিয়ে যেতে পারি। কারণ তাদেরও ভয় আছে। কীসের ভয়, তারা জানাননি।
এদিকে পুলিশ আমাদের লাশ দিতে চাচ্ছে শর্ত সাপেক্ষে। তারা বলেছে, সরাসরি হাসপাতাল মর্গ থেকে অ্যাম্বুলেন্সে করে আমাদের গ্রামের বাড়ি নবাবগঞ্জে লাশ নিতে হবে। তা না হলে দেওয়া হবে না। অর্থাৎ, রামপুরা বাসায় আমরা লাশ নিতে পারব না। আদালতে গিয়ে আমরা সহযোগিতা পাইনি; পুলিশও কোনো সাহায্য করছে না। আপাতত আমরা এলাকায় ফিরে যাচ্ছি। এমন অসহযোগীতার জন্য আমরা আন্দোলনেও নামতে পারি। আজ রুমনের লাশ নেব না।
সুমন আরও বলেন, যদি সুষ্ঠুভাবে ময়নাতদন্ত করে তবেই আমরা লাশ নিতে যাব। এ হত্যার বিচার আমরা চাই। কারণ, রুমনের সন্তান এতিম হয়ে গেছে।
দুপুরে রুমনের স্ত্রী জান্নাত আক্তার জানান, ৯ বছরের ছেলে রাকিবকে নিয়ে তারা হাতিরঝিলে মহানগর প্রজেক্টে একটি ভাড়া বাসায় বসবাস করতেন। পুলিশ ও আদালত তাদের কোনো সহযোগীতা করছে না। ছোট থেকে তারা রামপুরায় বড় হয়েছেন। স্বামীর লাশ সেখানে দেবে না- এটা কেমন সিদ্ধান্ত পুলিশের, প্রশ্ন রাখেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, যে কারণেই আমার স্বামীকে গ্রেফতার করুক, পুলিশ তো নিরাপত্তা দেবে। অথচ, তাদের উপস্থিতিতে থানার ভেতরে রুমনের মৃত্যু হলো। নির্যাতনের ভয়ে হোক আর যেকোনো কারণে; হাজতের ভেতরে রুমনের মৃত্যু হয়েছে। এর দায় পুলিশকেই নিতে হবে।
রুমনের পরিবার বলছে, লাশ নিতে হলে তারা আইন মেনে লাশ নেবেন। এ প্রক্রিয়ায় কি কি রয়েছে তা যাচাই-বাছাই করবেন। আইনজীবীদের সঙ্গে পরামর্শ করেই তারা সিদ্ধান্ত নেবেন।
এ ব্যাপারে হাতিরঝিল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মেজবাহ উদ্দিনকে প্রশ্ন করলে তিনি কিছু বলতে পারবেন না বলে জানান। তিনি বলেন, বৈধ দাবিদাররা গেলে পুলিশ লাশ বুঝিয়ে দেওয়ার কথা।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) তেজগাঁও বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) এইচ এম আজিমুল হক এ ব্যাপারে বলেন, ময়নাতদন্ত শেষে লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে। এছাড়া আর কোনো আইনি প্রক্রিয়া বাকি নেই।