বিএফআইইউ প্রধানকে হাইকোর্টে তলব
- মোমেন্টস রিপোর্ট
- প্রকাশ: ৩০ আগস্ট ২০২২, ১২:৫০ PM , আপডেট: ৩০ আগস্ট ২০২২, ১২:৫৩ PM

আদেশের পরও যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করে সুইস ব্যাংকে অর্থপাচার সংক্রান্ত বিষয়ে তথ্য দাখিল না করায় বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের প্রধান (বিএফআইইউ) মাসুদ বিশ্বাসকে তলব করেছেন হাইকোর্ট। আগামী বুধবার (৩১ আগস্ট) বেলা ১১টায় তাকে সশরীরে আদালতে হাজির হতে বলা হয়েছে।
মঙ্গলবার (৩০ আগস্ট) হাইকোর্টের বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি কাজী মো. ইজারুল হক আকন্দের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আদালতে দুর্নীতি দমন কমিশনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী খুরশীদ আলম খান ও রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল একেএম আমিন উদ্দিন মানিক। এ সময় আদালত বলে, ‘‘নাম পদবি ছাড়া এভাবে প্রতিবেদন দেয়াটা যেন ‘ধরি মাছ না ছুই পানির’ মত একটা বিষয়। নাম পদবি দিয়ে প্রতিবেদন জমা দিতে এত ভয় কেন?”
গত ১০ আগস্ট জাতীয় প্রেস ক্লাবে ডিপ্লোম্যাটিক করেসপন্ডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশ (ডিকাব) আয়োজিত ‘ডিকাব টক’ অনুষ্ঠানে ঢাকায় নিযুক্ত সুইজারল্যান্ডের রাষ্ট্রদূত নাথালি শুয়ার্ড বলেন, সুইস ব্যাংকে জমা রাখা অর্থের বিষয়ে বাংলাদেশ সরকার সুনির্দিষ্ট কোনো ব্যক্তির জন্য তথ্য চায়নি। সুইস ব্যাংকের ত্রুটি সংশোধনে সুইজারল্যান্ড কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে। তবে আমি আপনাদের জানাতে চাই, সুইজারল্যান্ডে কালো টাকা রাখার কোনো নিরাপদ ক্ষেত্র নয়। সুইস রাষ্ট্রদূতের এ বক্তব্য গণমাধ্যমে প্রকাশ হয়।
পরদিন ১১ আগস্ট বিষয়টি নজরে নিয়ে সুইস ব্যাংকে অর্থ জমাকারীদের তথ্য কেন জানতে চাওয়া হয়নি তা রাষ্ট্রপক্ষ ও দুর্নীতি দমন কমিশনকে জানাতে স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে আদেশ দেয় হাইকোর্ট। এ বিষয়ে সুইস রাষ্ট্রদূতের দেয়া বক্তব্য নিয়ে প্রকাশিত সংবাদের অনুলিপিও জমা দিতে বলা হয়।
এরপর আদালতে দুদক এবং বিএফআইউ’র পক্ষে রাষ্ট্রপক্ষ হলফনামা আকারে তথ্য জমা দেয়। ওই হলফনামায় যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ না করায় বিএফআইউ প্রধানকে তলব করে আজ আদেশ দেয় আদালত।
বিএফআইউ-এর তথ্যে বলা হয়, সুইস ব্যাংক চলতি বছরের ১৬ জুন বার্ষিক প্রতিবেদন প্রকাশ করে। পরদিন এগমন্ড সিকিউর ওয়েব(ইএসডব্লিউ)এর মাধ্যমে সুইজারল্যান্ডের বিভিন্ন ব্যাংকে বাংলাদেশি ব্যাংক ও ব্যক্তির জমানো অর্থের বিষয়ে প্রয়োজনীয় তথ্য সরবরাহের জন্য সুইজারল্যান্ডের এফআইইউকে(ফিনান্সিয়াল ইন্টিলিজেন্স ইউনিট) অনুরোধ করা হয়। তবে এ বিষয়ে এখনো কোনো তথ্য পায়নি বাংলাদেশ।
অর্থপাচার ও সন্ত্রাসীকাজে অর্থায়ন প্রতিরোধ,অনুসন্ধান ও তদন্তের জন্য বিএফআইইউ বিদেশি এফআইইউদের সাথে তথ্য আদান প্রদান করে থাকে। তবে বিশ্বব্যাপী এ সব তথ্য আদান প্রদানের মাধ্যম হলো এগমন্ড সিকিউর ওয়েব(ইএসডব্লিউ)। ২০১৩ সালের জুলাইতে ইএসডব্লিউ’র সদস্য হওয়ার পর চলতি বছরের জুলাই পর্যন্ত ৬৭ জন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের বিষয়ে তথ্য চায় বাংলাদেশ।
ইএসডব্লিউ’র মাধ্যমে সুইজারল্যান্ডের এফআইইউকে এ তথ্য দেওয়ার জন্য অনুরোধ করা হয়। কিন্তু একজন ছাড়া অন্যদের বিষয়ে কোন তথ্য নেই বলে জানায় সুইজারল্যান্ড। আর ওই একজনের তথ্য দুদককে দিয়েছে বিএফআইইউ।