পুলিশ আক্রান্ত হলে নিজেদের বাঁচানোর অধিকার তাদের নেই? প্রশ্ন প্রধানমন্ত্রীর

জাতীয়
সংসদে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা  © ফাইল ফটো

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মিছিল সমাবেশে সাম্প্রতিক সংঘাতের জন্য দলটির নেতাদেরই দায়ী করেছেন। বিরোধী দলের আন্দোলনে বাধা না দিতে পুলিশকে নির্দেশনা দেওয়ার কথা আবারও সংসদে তুলে ধরে তিনি আন্দোলনের নামে সংবাদ মাধ্যমে প্রচার পেতে বিএনপি নেতাদের এমন পরিস্থিতি তৈরির চেষ্টার বর্ণনাও দেন।

বৃহস্পতিবার রাতে সংসদের ঊনবিংশতম অধিবেশনের সমাপনী বক্তব্যে তিনি বলেন, “আমি তো আন্দোলন করার কথা বলছি না। আমি বলেছি মিছিল করেন, আন্দোলন করেন শান্তিপূর্ণ। কেউ কিচ্ছু বলবে না। যেখানে শান্তিপূর্ণভাবে হচ্ছে সেখানে তো কেউ কিছু বলছে না।”

বিএনপি নেতাদের এমন পরিস্থিতি তৈরি করার চেষ্টার কারণ তুলে ধরে সরকারপ্রধান বলেন, “কারণটা হল এমনি মিছিল টিছিল করলে তো মিডিয়াতে কভারেজ পাবে না। মিডিয়াতে কভারেজ পাওয়ার জন্যই তারা এমন একটা ঘটনা ঘটাবে যে তারা একটু ইয়ে পায়।”

এদিন সংসদে প্রধানমন্ত্রীর আশ্বাসের পরও বিরোধী দলের কর্মসূচিতে বাধা দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন বিএনপির সংসদ সদস্য রুমিন ফারহানা। পরে এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “কিন্তু পুলিশ তো আগ বাড়িয়ে কিছু করেনি। যে কোনো একটা মানুষ পুলিশ বাদে একটা মানুষ যদি আক্রান্ত হয় তার নিজেকে বাঁচাবার অধিকার আছে। সেটা কি নাই? না, পুলিশ হলে তারা আক্রান্ত হলেও তারা নিজেকে রক্ষার করার কোনো অধিকার থাকবে না?”

ভোলায় বিএনপি কর্মসূচি চলাকালে ছাত্রদল ও স্বেচ্ছাসেবক দলের দুই জনের মৃত্যুর ঘটনার প্রতিবাদের সময় রুমিন ফারহানা ‘বাংলাদেশের খুব খারাপ অবস্থা’ বলে দাবি করেন। এর জবাবে প্রধানমন্ত্রী জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার পর যারা সংবিধান লঙ্ঘন করে অবৈধভাবে সরকারে এসেছিল; তারা খুনিদেরকে বিচারের হাত থেকে রেহাই দিতে সব ধরনের উদ্যোগ নিয়েছিল বলে তুলে ধরেন।

বিএনপি ও সমর্থিত রাজনৈতিক দলগুলো সরকারের বিরুদ্ধে ‘গুম’, খুনের যে অভিযোগ করে আসছে সেটির জবাবে সংসদে শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর সামরিক শাসক জিয়াউর রহমানের ক্ষমতা দখলের পর নিহত সামরিক বাহিনীর সদস্যদের পরিবারের অভিযোগের এবং ২০০১ সালের নির্বাচনের পর অরাজকতা ও নির্যাতনের তথ্য সম্বলিতে একটি ভিডিও চিত্র প্রদর্শন করেন।

দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের লন্ডনে আয়েশী জীবনের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী তাদের জন্য দেশ থেকে প্রতিদিন কত টাকা পাচার করা হচ্ছে সেটি তদন্ত করে দেখতে বলেন।

তিনি বলেন, “হ্যাঁ, উনাদের কাছে নির্বাচন ব্যবস্থাকে বললেন জাদুর বাক্স। জাদুর বাক্স নির্বাচন কমিশন না। জাদুর বাক্স দেখিয়েছেন বিএনপি।“

বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান ‘অত্যন্ত সৎ’ ছিলেন বলে তার মৃত্যুর ৪০ দিন পর্যন্ত টেলিভিশনে প্রচার চালানো হয়েছিল মন্তব্য করে শেখ হাসিনা বলেন, “কিচ্ছু রেখে যায়নি। জিয়ার ছেঁড়া প্যান্ট কেটে কোকো, তারেকের প্যান্ট বানিয়ে পড়ানো হত। খালেদা জিয়া কোনো মতে রেশনের টাকা জোগাড় করে চলত এবং জিয়াউর রহমানের একেবারে ভাঙা সুটকেস আর ছেঁড়া গেঞ্জি ছাড়া কিচ্ছু ছিল না।”

তিনি সামরিক শাসক জিয়াউর রহমানের পরিবারের সদস্যদের এখনকার বিলাসী জীবন ও আর্থিক অবস্থার চিত্র তুলে ধরতে গিয়ে বলেন, “সেই খালেদা জিয়ার গায়ে উঠলো ফ্রেঞ্চ সিফন যা বিদেশে ছাড়া পাওয়া যায় না। আপনি জানেন ফ্রেঞ্চ সিফনের যে দাম এক লক্ষ টাকায় একটা শাড়ির দাম হয়। কোকো, তারেকের সেই জাদুর ভাঙা বাক্স সেটাই জাদুর বাক্স হয়ে গেল। সেখান থেকে কোকো ১, কোকো ২ করে কোকো ৬ বের হল। সেখান থেকে ইন্ডাস্ট্রি বের হল। সেখান থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা।”

আওয়ামী লীগ সরকারের বিরুদ্ধে বিএনপি নেতাদের টাকা পাচারের অভিযোগ প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, “আর মানি লন্ডারিংয়ের কথা বলে, টাকা চুরির কথা বলে টাকা যেটা মানি লন্ডারিং হয়েছে খালেদা জিয়ার ছেলের টাকাই তো আমরা বেশ কিছু টাকা কিন্তু বিদেশ থেকে আনতে সক্ষম হয়েছি।”