তামাক নিয়ন্ত্রণে প্রধান প্রতিবন্ধকতা কোম্পানির হস্তক্ষেপ: মানববন্ধনে বক্তারা

 মানববন্ধন
‘তামাক নিয়ন্ত্রণে প্রধান প্রতিবন্ধকতা কোম্পানির হস্তক্ষেপ’ শীর্ষক মানববন্ধন  © টিবিএম ফটো

কয়েকটি বিদেশী তামাক কোম্পানি সরকারের তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধনের প্রচেষ্টাকে নানাভাবে ব্যাহত করছে। এমনকি কোম্পানিগুলো নিজেদের স্বপক্ষে শক্তিশালী লবিস্ট গ্রুপ নিয়োগ করে আইন সংশোধনের বিরুদ্ধে একাধিক যুক্তি উপস্থাপন করছে।

আজ বৃহস্পতিবার (১৩ অক্টোবর) দুপুরে রাজধানীর শাহবাগের জাতীয় জাদুঘরের সামনে জাতীয় তামাকমুক্ত দিবস উপলক্ষে ‘তামাক নিয়ন্ত্রণে প্রধান প্রতিবন্ধকতা কোম্পানির হস্তক্ষেপ’ শীর্ষক মানববন্ধনে এসব কথা বলেন বক্তারা। বাংলাদেশ তামাক বিরোধী জোটসহ আরও কয়েকটি সংগঠন এই কর্মসূচির আয়োজন করে।

বক্তারা আরও বলেন, শুধু আইন সংশোধন নয়, ইতোপূর্বে তামাক নিয়ন্ত্রণে সহায়ক মাধ্যম যেমন কর বৃদ্ধি, আইন বাস্তবায়ন, সারচার্জ আরোপ, লাইসেন্সিং ইত্যাদি ক্ষেত্রেও তামাক কোম্পানিগুলো নানাভাবে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেছে। এক্ষেত্রে তামাক কোম্পানিতে সরকারের বিদ্যমান শেয়ার অন্যতম প্রধান কারণ হিসেবে প্রমাণিত। যা সার্বিক তামাক নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রমকে বাঁধাগ্রস্থ করছে। দ্রুত তামাক কোম্পানির হস্তক্ষেপ প্রতিহতকরণে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করা জরুরি।

মানববন্ধনে ব্যুরো অফ ইকোনোমিক রিসার্চের প্রকল্প কর্মকর্তা ইব্রাহিম খলিল বলেন, তামাক কোম্পানিগুলো বলছে তারা সরকারকে প্রতিবছর ২৮ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব দিচ্ছে৷ কিন্তু এর মাঝে মাত্র এক হাজার কোটি টাকা রাজস্ব দিচ্ছে কোম্পানিগুলো, কিন্ত বাকি ২৭ হাজার কোটি টাকা সরাসরি জনগণ দিচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, তারা প্রতি বছর অসংখ্য মানুষকে সাহায্য করছে এবং তা ফলাও করে প্রচার করছে। কিন্তু তাদের বার্ষিক রিপোর্টে আমরা দেখি তারা জনকল্যাণমূলক কাজ সিএসআর (কর্পোরেট সোশ্যাল রেসপনসিবিলিটিস) এর অংশ হিসেবে বছরে মাত্র ১০-১২ কোটি টাকা ব্যয় করছে। অথচ বিভিন্ন ব্যাংক প্রতি বছর  ৭০০-৮০০ কোটি টাকা বরাদ্দ দিচ্ছে। 

ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্ট এর কর্মসূচি প্রধান সৈয়দা অনন্যা রহমান বলেন, প্রধানমন্ত্রী ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে তামাকমুক্ত করার ঘোষণা দিয়েছেন। তাতেই কি দায় মিটে গেল? তামাক কোম্পানিগুলোতে সরকারের শেয়ার রয়েছে। যার কারণে সরকারের তামাক নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম ব্যহত হচ্ছে। প্রতিবছর ১ লাখ ৬১ হাজার মানুষ তামাকের কারণে মারা যাচ্ছে। তামাকের কারণে আমরা হুমায়ুন আহমেদ এবং শামসুর রহমানকে হারিয়েছি।

ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্ট এর প্রকল্প কর্মকর্তা সামিউল হাসান সজিব বলেন, ব্রিটিশ আমেরিকান টোবাকো কোম্পানি ব্যাটেল অফ মাইন্ড নামক এক কর্মসূচির মাধ্যমে তরুণ সমাজকে সিগারেটের দিকে আকৃষ্ট করতে চাচ্ছিল। তামাক উৎপাদনকারীদের লক্ষ্য হলো মুনাফা অর্জন করা৷ আর সরকারের লক্ষ্য হলো জনস্বাস্থ্যকে প্রাধান্য দেয়। তামাক কোম্পানিগুলো তাদের ব্র্যান্ড ইমেজ ধরে রাখার জন্য সিএসআর এর নামে ধোকা দিচ্ছে।


মন্তব্য