প্রতিদিন সড়কে গড়ে ১৭ জনের প্রাণহানি: জরিপ

সড়ক
  © ফাইল ফটো

২০২১ সালে দেশে ৫ হাজার ৩৭১টি সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছে ৬ হাজার ২৮৪ জন। সেই হিসাবে প্রতিদিন সড়কে গড়ে ১৭ জন নিহত হয়েছে। এই সময়ে এসব দুর্ঘটনায় আহত হয়েছে ৭ হাজার ৪৬৮ জন। এদের মধ্যে ৮৪ শতাংশ কর্মক্ষমতা হারিয়েছে।

শুক্রবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনি মিলনায়তনে বাংলাদেশ ইনিশিয়েটিভস, সেবক ও ড্রাইভার্স ট্রেনিং সেন্টারের উদ্যোগে সড়ক নিরাপত্তাবিষয়ক সংলাপে এসব তথ্য তুলে ধরা হয়। সংলাপে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সড়ক নিরাপত্তাবিষয়ক গবেষক কাজী আবুল আল আতাইয়া।

কাজী আবুল আল আতাইয়া জানান, ২০২১ সালে ৫ হাজার ৩৭১টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৬ হাজার ২৮৪ জন মারা গেছে এবং এ সময় আহত হয়েছে ৭ হাজার ৪৬৮ জন। আহতদের মধ্যে ৮৪ শতাংশই কর্মক্ষমতা হারিয়ে ফেলেছে। আর গত ১০ বছরে প্রতিদিন সড়ক দুর্ঘটনায় গড়ে ১০ জন মারা গেছে।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বুয়েটের পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক ড. সামছুল হক বলেন, উন্নত দেশগুলোতে সড়ক দুর্ঘটনা দৈব হলেও আমাদের দেশের দুর্ঘটনা আমাদের নিজেদেরই তৈরি। এর জন্য ফিটনেসবিহীন গাড়ি, অদক্ষ চালক ও অনিরাপদ সড়ক সবচেয়ে বেশি দায়ী। চালক দক্ষ, প্রশিক্ষিত হওয়ার পাশাপাশি বিশ্বে এখন সড়ক দুর্ঘটনা রোধের প্রধান বিবেচনার বিষয় হলো নিরাপদ চালক। একজন চালককে দিয়ে নির্দিষ্ট সময়ের বেশি গাড়ি চালানো যাবে না। তিনি বলেন, শুধু ড্রাইভারকে দোষারোপ করলেও হবে না। সিস্টেমের পরিবর্তন প্রয়োজন। রাস্তা, যানবাহন ও চালক প্রতিটিই সঠিক ও টেকসই হতে হবে।

এ সময় গাড়ির ফিটনেস ও ড্রাইভিং লাইসেন্স দেওয়ার সময় স্বচ্ছতার জন্য সিসিটিভি ক্যামেরা লাগানোর জন্য বিআরটিএকে পরামর্শ দেন অধ্যাপক ড. সামছুল হক। সড়কে গাড়ি চালানোর সময় ভুল করলে শুধু অর্থদণ্ড নয়, ওই বিষয়ের ওপর প্রশিক্ষণ বা ডিফেন্স ড্রাইভিংকে শাস্তি হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করার পরামর্শও দেন তিনি। উন্নত দেশগুলোতে এই পদ্ধতি চালু থাকার কারণে সড়ক দুর্ঘটনা অনেক কম হয় বলেও উল্লেখ করেন সড়ক নিরাপত্তাবিষয়ক এই গবেষক। রাস্তায় এবং গাড়িতে এলইডি লাইট ব্যবহার বিজ্ঞানসম্মত কি না, সেটি খতিয়ে দেখার কথাও বলেন বুয়েটের এই শিক্ষক। 

আলোচনায় ন্যাশনাল রোড সেফটি অ্যালায়েন্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবুল ওয়াহেদ জানান, গাবতলী টার্মিনালে চালকদের ঘুমানোর জন্য একটি আবাসনের ব্যবস্থা করার প্রস্তাব সিটি করপোরেশনে জমা দেয় তার সংগঠন। দাতারা এই খরচ বহন করতে রাজি হলেও শেষ পর্যন্ত আমলাতান্ত্রিক জটিলতার কারণে প্রস্তাবটি বাস্তবায়ন করা যায়নি। তাই এসব অনাকাঙ্ক্ষিত আমলাতান্ত্রিক জটিলতা দূর করার আহ্বান জানান তিনি। 

সাংবাদিক পার্থ সারথি দাসের সঞ্চালনায় সভায় আরও বক্তব্য রাখেন ড্রাইভার টেকনিক্যাল সেন্টারের পরিচালক নূর নবী শিমুল, সেবকের প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক খান মোহাম্মদ বাদলসহ অন্যরা।