মৌখিকভাবে ছাত্রীকে বিয়ে, পরিবার মেনে না নেওয়ায় কুপিয়ে হত্যা

গাজীপুর

গাজীপুরের সালনায় করোনার মহামারি সময় মা ও তিন মেয়েকে আরবি শেখানোর সুবাদে তাদের সঙ্গে সখ্যতা গড়ে ওঠে গৃহশিক্ষক সাইদুল ইসলামের। একপর্যায়ে সবার অগোচরে ছাত্রী  রাবেয়াকে মৌখিকভাবে বিয়ে করেন তিনি। পরে পরিবার ওই বিয়ে না মেনে নেওয়ায় ক্ষিপ্ত হয়ে ছাত্রীকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। 

আজ বৃহস্পতিবার (১১ মে) রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র‍্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান র‍্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।

গাজীপুরের সালনায় কলেজ ছাত্রী রাবেয়া আক্তারকে কুপিয়ে হত্যা এবং নিহতের মা ও দুই বোনকে জখমের ঘটনায় ভুক্তভোগীর বাবা বাদী হয়ে গাজীপুর সদর থানায় হত্যা মামলা করেন। 

র‌্যাব বুধবার রাতে টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর এলাকা থেকে সাইদুলকে গ্রেফতার করে। গ্রেফতার সাইদুলের বাড়ি ময়মনসিংহের মুক্তাগাছা। তিনি গাজীপুর সালনা এলাকায় একটি মাদ্রাসার শিক্ষক ছিলেন। এছাড়া একটি মসজিদের ইমামতিও করতেন।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সাইদুল জানান, ২০২০ সালে ওই ছাত্রীর পরিবারের সবাইকে আরবি পড়ানো শুরু করেন গৃহশিক্ষক সাইদুল ইসলাম। এ সুবাদে তিনি প্রতিনিয়ত ভুক্তভোগীর বাসায় যাতায়াত করতেন। ফলে ওই পরিবারের সবার সঙ্গে তার সুসম্পর্ক গড়ে ওঠে। একপর্যায়ে সাইদুল ছাত্রী রাবেয়াকে বিয়ের প্রস্তাব দেন।

র‍্যাব জানায়, ৫-৬ মাস পড়ানো বন্ধ করে দেন তিনি। পরে সাইদুল প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে রাবেয়াকে মৌখিকভাবে বিবাহ করেন। সাইদুল বিষয়টি সামাজিকভাবে স্বীকৃতি পাওয়ার জন্য ভুক্তভোগী ও তার পরিবারকে চাপ দিতে থাকেন। বাধ্য হয়ে সাইদুলের সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ করে দেন ছাত্রী। এ ঘটনায় ২০২২ সালের অক্টোবরে গাজীপুর সদর থানায় অভিযোগও করে ভুক্তভোগীর পরিবার। গত ২ মাস ধরে কলেজ এবং বাসার যাওয়া-আসার পথে রাবেয়াকে উত্ত্যক্ত করতে থাকেন এবং প্রস্তাবে রাজি না হলে হত্যার হুমকি দেন সাইদুল। একপর্যায়ে গৃহশিক্ষক জানতে পারেন রাবেয়াকে উচ্চশিক্ষার জন্য বিদেশে পাঠানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে তার পরিবার। বিষয়টি সাইদুল কোনোভাবে মেনে নিতে পারেননি। তাই ক্ষিপ্ত হয়ে তাকে হত্যার পরিকল্পনা করেন। 

মামলার এজাহারে বলা হয়, সাইদুল সোমবার রাত সাড়ে আটটার দিকে বাসায় ঢুকেই ধারালো অস্ত্র দিয় রাবেয়ার মাথা, গলা, হাত ও পায়ে এলোপাথাড়ি আঘাত করতে থাকেন। তার মা ও দুই বোন ঠেকানোর চেষ্টা করলে সাইদুল তাদেরও আঘাত করে পালিয়ে যান। গুরুতর অবস্থায় রাবেয়াকে স্থানীয়রা শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেন। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।