মণিপুরে ফের সহিংসতা, কারফিউ জারি, সেনা মোতায়েন

মণিপুর
মণিপুরে সহিংসতা

ভারতের মণিপুরের রাজধানী ইম্ফলে ফের সহিংস ঘটনা ঘটেছে। আজ (সোমবার) কিছু জায়গায় অগ্নিসংযোগের জেরে কারফিউ জারি করা হয়েছে। একইসঙ্গে আগামী ২৬ মে পর্যন্ত ইন্টারনেট বন্ধ করা হয়েছে। খবর পার্স টুডের।

রাজধানী ইম্ফলের নিউ চেকন এলাকার স্থানীয় বাজারে একটি জায়গা নিয়ে মেইতেই ও কুকি সম্প্রদায়ের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। জানা গেছে, দুর্বৃত্তরা কয়েকটি খালি বাড়িতেও আগুন দিয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সেনাবাহিনী ও আধাসামরিক বাহিনী মোতায়েন রয়েছে।

মণিপুরে মেইতেই সম্প্রদায়ের সংরক্ষণ বিবাদকে কেন্দ্র করে সহিংসতা ও উত্তেজনা বিরাজ করছে। কিছুদিন সেখানে শান্ত পরিবেশ থাকার পর আজ সোমবার ফের সহিংসতা শুরু হয়। সাম্প্রতিক সহিংসতায় গত ১৫ মে পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৭৩ জনে পৌঁছেছে। দাঙ্গাবাজরা এখানে অনেক বাড়িতে আগুন দিয়েছিল।   

মণিপুরের নাগা ও কুকি উপজাতিরা মেইতেই সম্প্রদায়কে শিক্ষা ও চাকরিতে সংরক্ষণ সুবিধা দেওয়ার বিরুদ্ধে। রাজ্যের জনসংখ্যার ৩৪ শতাংশ নাগা ও কুকিরা রাজ্যের ৯০ শতাংশ এলাকায় বাস করে। তাদের বক্তব্য, রাজ্যের ৬০টি বিধানসভা আসনের মধ্যে ৪০টি আগে থেকেই মেইতেই-অধ্যুষিত ইম্ফল উপত্যকায় রয়েছে। রাজনৈতিকভাবে মণিপুরে ইতোমধ্যেই মেইতেই সম্প্রদায়ের প্রভাব রয়েছে। নাগা এবং কুকি উপজাতিদের আশঙ্কা, মেইতেই সম্প্রদায় যদি তপশিলি উপজাতি (এসটি) বিভাগে সংরক্ষণ সুবিধা পায়, তাহলে তাদের অধিকার ভাগ হয়ে যাবে। বিদ্যমান আইন অনুযায়ী, মেইতেই সম্প্রদায়ের রাজ্যের পাহাড়ি এলাকায় বসতি স্থাপনের অনুমতি নেই।

সম্প্রতি মণিপুর হাই কোর্ট মেইতেইদের তফশিলি উপজাতির মর্যাদা দেওয়ার বিষয়টি নিয়ে রাজ্য সরকারকে বিবেচনা করার নির্দেশ দিয়েছিল। এর পরেই উপজাতি সংগঠনগুলো তার বিরোধিতায় মাঠে নামে। সেই ঘটনা থেকেই সংঘাতের সূচনা হয় বিজেপিশাসিত রাজ্য মণিপুরে।

উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য মণিপুরে গত ৩ মে জনজাতি ছাত্র সংগঠন ‘অল ট্রাইবাল স্টুডেন্টস ইউনিয়ন অফ মণিপুর’ (এটিএসইউএম)-এর কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে সহিংসতার সূত্রপাত হয়েছিল। আদি বাসিন্দা মেইতেই জনগোষ্ঠীর সঙ্গে কুকি, জ়োসহ কয়েকটি জনজাতি সম্প্রদায়ের সংঘর্ষের জেরে সে রাজ্যে ৭৩ জন নিহত হয়েছে। গুরুতর আহতের সংখ্যা কমপক্ষে ৩০০। অগ্নি সংযোগ করা হয় কমপক্ষে ১৭০০ বাড়িতে। ব্যাপক সহিংসতার জেরে ঘরছাড়া হয়েছেন ২৫ হাজারেরও বেশি মানুষ। পুলিশ, আধাসামরিক ও সামরিক বাহিনীর তৎপরতায় পরিস্থিতি মোটামুটি শান্ত হয়ে আসলেও ফের রাজ্যটিতে নতুন করে সহিংস ঘটনা ঘটল।