তৃতীয় মেট্রোরেলের নির্মাণকাজ শুরু জুলাইয়ে

টেৃন

ম্যাস র‌্যাপিড ট্রানজিট (এমআরটি) লাইন ফাইভ বা দেশের তৃতীয় মেট্রোরেলের নর্দান রুটের নির্মাণকাজ আগামী জুলাই মাস থেকে শুরু হবে বলে জানিয়েছে ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল)। হেমায়েতপুর থেকে ভাটারা পর্যন্ত এই ২০ কিলোমিটার রুটে ২০২৮ সালের মধ্যে যাত্রী পরিবহন সেবা দিতে চায় ডিএমটিসিএল।

আজ মঙ্গলবার রাজধানীর উত্তরায় মেট্রোরেল ডিপোতে আয়োজিত এক চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে এ কথা জানান প্রকল্প পরিচালক আফতাব হোসেন খান। হেমায়েতপুর-ভাটারা নতুন লাইনের ডিপোর ভূমি উন্নয়নবিষয়ক এক চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠিত হয়।

আফতাব হোসেন জানান, এ লাইনটি হেমায়েতপুর, বলিয়ারপুর, বিলামালিয়া, আমিনবাজার, গাবতলী, দারুসসালাম, মিরপুর-১, ১০, ১৪, কচুক্ষেত, বনানী, গুলশান-২, নতুন বাজার হয়ে ভাটারা পর্যন্ত যাবে। লাইনটি সাড়ে ১৩ কিলোমিটার হবে পাতাল লাইন এবং সাড়ে ৬ কিলোমিটার উড়াল পথ। সরকার ২০২৮ সালের মধ্যে এ রুটে মেট্রোরেল সেবা দিতে চায়।

উড়াল-পাতাল মিলিয়ে হেমায়েতপুর থেকে ভাটারা পর্যন্ত এ প্রকল্পের মাধ্যমেই তুরাগের নিচে হবে দেশের প্রথম নদীর তলদেশে রেলপথ। তবে আধুনিক পদ্ধতি ব্যবহারের ফলে এ প্রকল্পে দুর্ভোগ অনেকটা কম হবে বলে জানিয়েছেন ডিএমটিসিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম এ এন সিদ্দিক।

চুক্তি শেষে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, অত্যন্ত উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করা হবে। এটি ব্যবহারের ফলে সেই জায়গায় ভোগান্তি কিছুদিনের জন্য হবে। তবে অনেকটা কম।

জুলাই মাসে কাজের মূল অংশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্বোধন করার কথা আছে বলে জানিয়েছেন সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব এ বি এম আমিন উল্লাহ নুরী।

এমআরটি লাইন ফাইভ হলো দেশের দ্বিতীয় উড়াল রেললাইন ও তৃতীয় মেট্রোরেল। আর উত্তরা থেকে মতিঝিল হয়ে কমলাপুরের মধ্যে তৈরি হচ্ছে প্রথম মেট্রোরেল। দ্বিতীয়টি তৈরি হচ্ছে ঢাকার বিমানবন্দর থেকে কমলাপুরের মধ্যে, যার নির্মাণকাজ গত ২ ফেব্রুয়ারি উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তৃতীয় মেট্রোরেলের ভাটারা থেকে বলিয়ারপুর, বিলামালিয়া, আমিনবাজার- প্রথমে এ চারটি স্টেশন হবে উড়াল। পাঁচ নম্বর স্টেশন গাবতলী থেকে পাতাল। আর তাতেই এই মেট্রোলাইন পাড়ি দিতে হবে তুরাগ নদ দিয়ে, যা কিনা হতে যাচ্ছে পানির তলদেশে দেশের প্রথম রেলপথ।

গাবতলী থেকে দারুস সালাম, মিরপুর-১, ১০, ১৪, কচুক্ষেত হয়ে ক্যান্টনমেন্টের নিচ থেকে বনানী এরপর গুলশান-২ হয়ে নতুনবাজার পর্যন্ত হবে পাতাল স্টেশন। আর সবশেষ স্টেশন ভাটারা হবে উড়াল।

পুরো লাইনটি নির্মাণ করতে ব্যয় ধরা হয়েছে মোট ৪১ হাজার ২৩৮ কোটি টাকা। এই প্রকল্প বাস্তবায়নে অর্থ সহায়তা দেবে জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি (জাইকা)। পুরো কাজ ১০টি প্যাকেজে করা হবে। প্রথম প্যাকেজে রয়েছে হেমায়েতপুরে ডিপো উন্নয়ন কাজ; যার মোট মূল্য এক হাজার ১৮৯ কোটি টাকা। কাজটি করবে জাপানের তোয়া কনস্ট্রাকশন ও বাংলাদেশের ইস্পাকট্রা ইঞ্জিনিয়ার্স লিমিটেড।

এ লাইনে মোট ১৪টি স্টেশন থাকবে, যার ৯টি পাতালে, আর ৫টি উড়ালে। মেট্রোরেল এই লাইনে পাতাল অংশে ঘণ্টায় ৯০ কিলোমিটার এবং উড়াল অংশে ১০০ কিলোমিটার বেগে চলবে।

চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন ডিএমটিসিএল ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম এ এন ছিদ্দিক, সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব এ বি এম আমিন উল্লাহ নুরী, জাপানের রাষ্ট্রদূত আইওয়ামা কিমিনোরি, জাইকার বাংলাদেশ কার্যালয়ের প্রধান প্রতিনিধি ইচিগুচি তমহিদো প্রমুখ।