চট্টগ্রামে চালু হলো ব্র্যাক ড্রাইভিং স্কুলের নতুন শাখা
- মোমেন্টস ডেস্ক
- প্রকাশ: ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০৯:৩৩ PM , আপডেট: ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১০:২৯ PM

বাংলাদেশে সড়ক নিরাপত্তার উন্নয়ন এবং সড়কে দুর্ঘটনা কমিয়ে আনার লক্ষ্যে এবার চট্টগ্রামে চালু হলো ব্র্যাক ড্রাইভিং স্কুলের নতুন শাখা।
সোমবার (২৫শে সেপ্টেম্বর ২০২৩) চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের বঙ্গবন্ধু মিলনায়তনে নতুন এই যাত্রার আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেয়া হয়। পাশাপাশি স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের সাথে এক সমঝোতার অংশ হিসাবে ব্র্যাক ড্রাইভিং স্কুলে চালকের প্রশিক্ষণ পাওয়া ৪০ জনের হাতে পৃথক এক অনুষ্ঠানে সনদ তুলে দেয়া হয়।
ড্রাইভিং স্কুলের নতুন শাখার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান। ব্র্যাকের রোড সেফটি প্রোগ্রামের পরিচালক আহমেদ নাজমুল হুসেইনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই আয়োজনে বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) চট্টগ্রাম মেট্রো সার্কেল-১ এর উপ-পরিচালক (ইঞ্জিনিয়ার) তৌহিদুল হোসেন এবং চটগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক-দক্ষিণ) এন এম নাসিরউদ্দিন। ব্র্যাকের রোড সেফটি প্রোগ্রামের ব্যবস্থাপক মাইনুল হোসেন প্রতিষ্ঠানটির সড়ক নিরাপত্তা কর্মসূচির বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন প্রকল্প ব্যবস্থাপক এম খালিদ মাহমুদ।
ব্র্যাক ড্রাইভিং স্কুলের অন্যান্য শাখার মতো চট্টগ্রামের এ শাখা থেকেও গাড়িচালনা সংক্রান্ত মৌলিক প্রশিক্ষণ গ্রহণের পাশাপাশি পেশাদার ড্রাইভিং-এর ওপর আরো বিভিন্ন প্রশিক্ষণ নেয়া যাবে। অত্যাধুনিক ড্রাইভিং সিমুলেটর, ভিজ্যুয়াল ইম্পেয়ারমেন্ট সিস্টেম, সিটবেল্ট কনভিন্সার, পি-ড্রাইভ (ডিজিটাল ড্রাইভিং টেস্টিং সিস্টেম) ব্যবহার করে দক্ষ প্রশিক্ষকেরা এখানে প্রশিক্ষণ কার্যক্রম সম্পন্ন করে থাকেন। তাছাড়া নারীদের জন্য রয়েছে নারী প্রশিক্ষকদের মাধ্যমে প্রশিক্ষণ গ্রহণের বিশেষ সুবিধা।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান বলেন, আশ্রয়ণ প্রকল্পের আওতায় ড্রাইভিং প্রশিক্ষণ, চালকদের জন্য সুরক্ষা প্রশিক্ষণ, লাইসেন্স পাওয়ার আগে চালকদের প্রশিক্ষণ যুক্ত করার একটি পাইলট স্কিমে ব্র্যাক আমাদেরকে সহায়তা করতে পারে।
কর্পোরেট সোশ্যাল রেসপন্সিবিলিটির (সিএসআর) মাধ্যমে চট্টগ্রামের সকল ভারি যানবাহন চালককে ’সুরক্ষা ড্রাইভিং প্রশিক্ষণ’ দিতে সহায়তার প্রস্তাব দেন তিনি।
সড়ক নিরাপদ করতে আন্তর্জাতিক মানদণ্ডে উন্নীত সেফ সিস্টেম এপ্রোচ গ্রহণের কথা উল্লেখ করে অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে ব্র্যাকের রোড সেফটি প্রোগ্রামের পরিচালক আহমেদ নাজমুল হুসেইন বলেন, “এই অ্যাপ্রোচের মধ্যে রয়েছে, নিরাপদ সড়ক, নিরাপদ যানবাহন, নিরাপদ সড়ক-ব্যবহারকারী, নিরাপদ গতি ও দুর্ঘটনা পরবর্তী ব্যবস্থাপনা।”
“একটি দুর্ঘটনা ঘটার পরের এক ঘণ্টাকে বলা হয় ‘গোল্ডেন আওয়ার’। প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণে এই এক ঘণ্টা এতটাই গুরুত্বপূর্ণ যে, এটা হতাহতের সংখ্যা ৯০ শতাংশ কমিয়ে দিতে পারে।”
এদিকে বিকেলে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সাথে যৌথভাবে সার্বিক গ্রাম উন্নয়ন কর্মসূচি (৩য় পর্যায়)-এ চালকের প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণকারী ৪০ জনকে সনদ দেয়া হয় চট্টগ্রামের হোটেল সৈকতে।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে চট্টগ্রামের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার আবদুল মান্নান মিয়া বলেন, ”বাংলাদেশে দশ লাখ চালকের অভাব রয়েছে। বর্তমানে গাড়ি চালনা দুনিয়াজুড়েই চাহিদার শীর্ষে থাকা পেশাগুলোর একটি। ব্র্যাক ড্রাইভিং স্কুল চট্টগ্রামের নতুন গ্রাজুয়েট হিসাবে তোমরা খুবই ভাগ্যবান যে, তোমরা এই প্রশিক্ষণ পেয়েছো। তোমরা তোমাদের এই পেশাকে সম্মান করবে এবং বাংলাদেশ ও দুনিয়াজুড়ে রোল মডেল হবে।”
ব্র্যাকের রোড সেফটি প্রোগ্রামের পরিচালক আহমেদ নাজমুল হুসেইনের সভাপতিত্বে এই আয়োজনে বিশেষ অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম ইনডিপেনডেন্ট বিশ্ববিদ্যালয়ে খণ্ডকালীন শিক্ষক ও ঘাসফুল-এর চেয়ারম্যান ড. মনজুর উল আমিন চৌধুরী এবং সার্বিক গ্রাম উন্নয়ন কর্মসূচি (৩য় পর্যায়)-এর উপ-প্রকল্প পরিচালক সালহ উদ্দিন ইবন সাঈদ।
সার্বিক গ্রাম উন্নয়ন কর্মসূচি (সিভিডিপি) এলজিআরডি মন্ত্রণালয়ের একটি প্রকল্প। এই প্রকল্পের অধীনে গ্রামীণ এলাকার মানুষকে কর্মসংস্থান ও জীবিকা নির্বাহের জন্য বিভিন্ন দক্ষতা উন্নয়ন প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। এই প্রকল্পের ৩য় পর্যায়ের আওতায় গ্রামীণ জনগোষ্ঠীকে পেশাদার চালকের প্রশিক্ষণ দেওয়ার লক্ষ্যে ২০২২ সালে মন্ত্রণালয় ও ব্র্যাকের মধ্যে একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়।
এখন পর্যন্ত ২৫০ জন মৌলিক ড্রাইভিং বিষয়ে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেছে এবং চলতি বছরের শেষ নাগাদ ব্র্যাক ড্রাইভিং স্কুল যশোর ও রাজবাড়ীতে ৬১০ জন প্রশিক্ষণ গ্রহণ করবে। এই প্রকল্পের অধীনে ২০২৩ সালের আগস্ট মাস থেকে ব্র্যাক ড্রাইভিং স্কুল চট্টগ্রামে ড্রাইভিং প্রশিক্ষণ শুরু হয়েছে।