২১০০ সালের মধ্যে বিশ্বের ১৯৮ দেশের জনসংখ্যাই কমতে থাকবে

জনসংখ্যা
  © ফাইল ছবি

বর্তমানে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের জনসংখ্যাই নিম্নমুখী। তবে ২০৫০ সালের মধ্যে বিশ্বের ২০৪ টির মধ্যে ১৫৫ টি দেশের জনসংখ্যা কমতে শুরু করবে। একইসাথে ২১০০ সালের মধ্যে বিশ্বের ১৯৮ টি দেশের জনসংখ্যা কমতে শুরু করবে। যা হবে বিশ্বের মোট দেশের ৯৭ শতাংশ।

গবেষণাধর্মী তথ্যগুলো ইন্সটিটিউট ফর হেলথ মেট্রিক্স এন্ড ইভালুয়েশন কর্তৃক প্রকাশ করা হয়েছে।

এক কথায়, তখন বৈশ্বিকভাবে মানুষ মারা যেতে থাকবে বেশি। কিন্তু শিশু জন্ম নেবে কম। এক্ষেত্রে জনসংখ্যা কমতে কমতে মানব সভ্যতা সংকটের মুখে পড়বে কি-না; তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।

সেখানে গবেষকেরা আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন যে, জনসংখ্যা কমতে থাকার এই প্রবণতা তখন অর্থনীতি, স্বাস্থ্য, পরিবেশ ও ভু-রাজনীতিতে প্রভাব তৈরি করতে পারে।

এদিকে ২০২২ সালের ১৫ নভেম্বরের হিসেবে বিশ্বের সর্বমোট জনসংখ্যা ৮ বিলিয়নের মাইলফলক স্পর্শ করেছে। তবে সমীক্ষা অনুসারে ধারণা করা হচ্ছে যে, জনসংখ্যা হ্রাস শুরু হওয়ার আগে এটিই হতে পারে সর্বোচ্চ পর্যায়। এটি বিশ্বব্যাপী একটি প্রবণতা, তবে এর গতি অঞ্চলভেদে ভিন্ন হতে পারে। তবে এক্ষেত্রে উল্লেখ্য যে, ধনী দেশগুলিতে ইতোমধ্যেই জনসংখ্যা কমার প্রবণতা দেখা যাচ্ছে।

স্পেন এক্ষেত্রে একটি প্রকৃষ্ট উদাহরণ। সমীক্ষা অনুসারে, স্পেনে ১৯৫০ সালে প্রতি নারীর বিপরীতে শিশুর হার ছিল ২.৪৭। তবে ১৯৮০ সালে এই হার ২.১৩ এ নেমে আসে। আর ২০২১ সালে তা দাঁড়ায় ১.২৬ এ। এভাবে চলতে থাকলে স্পেনে ২০৫০ সালে এই হার ১.২৩ এ এবং ২১০০ সালে ১.১১ এ পৌঁছাবে। 

এতো বেশি না হলেও প্রায় বেশিরভাগ দেশেই নারীর বিপরীতে শিশুদের হার নিম্নমুখী হবে। এরমধ্যে ফ্রান্সে ১.৪৯, জার্মানিতে ১.৪০ এবং মোটাদাগে ইউরোপে এই গড় ১.৩৭ এর উপরে থাকবে।

এই প্রবণতাটি স্পেনের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ স্ট্যাটিস্টিক্সের রিপোর্টের সাথেও সামঞ্জস্যপূর্ণ। প্রতিষ্ঠানটি গত বছর দেশটির ইতিহাসে সর্বকালের সর্বনিম্ন জন্মহার রেকর্ড করেছে। ২০২৩ সালে দেশটিতে টানা সপ্তমবারের মতো জন্মহারের তুলনায় মৃত্যুহার বেশি দেখা যায়।

এই গবেষণায় বলা হয়, বিশ্বের এমন অঞ্চলগুলিতে জন্মহার ক্রমবর্ধমানভাবে কেন্দ্রীভূত হবে যেখানে জলবায়ু পরিবর্তন, সম্পদের অভাব, রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা, দারিদ্র্য ও শিশুমৃত্যুর ঝুঁকি সবচেয়ে বেশি।

সাম্প্রতিক বছরগুলিতে বিভিন্ন বিশ্ব নেতারা কম জন্মহারকে গর্ভপাতের অধিকারের সাথে যুক্ত করার চেষ্টা করেছেন। এক্ষেত্রে গবেষণায় জন্মহার হ্রাসের কারণ বিশ্লেষণ এবং যারা সন্তান রাখতে চায় তাদের প্রজনন ও পারিবারিক প্রকল্পের সুবিধা প্রদানের আহ্বান জানিয়েছেন। তবে অন্য কারও অধিকার যাতে ক্ষুণ্ন না হয় সেদিকেও নজর রাখার কথা বলা হয়েছে।


মন্তব্য