রাজধানীর হাটে দেড় লাখ টাকার গরু হারিয়ে দিশেহারা প্রান্তিক খামারি 

গরু
  © সংগৃহীত

ঝিনাইদহ সদর উপজেলার গান্না ইউনিয়নের মো. জাহিদুল ইসলাম প্রান্তিক খামারি। রাজধানীর যাত্রাবাড়ীর শনির আখড়া ধনিয়া কলেজ মাঠসংলগ্ন পশুর হাটে ২৬টি গরু নিয়ে আসেন গত ১১ জুন। শনিবার দিবাগত রাতে একটি গরু হারিয়ে যায়। এতে দিশেহারা হয়ে পড়েন তিনি। দেড় লাখ টাকার গরু হারিয়ে চোখে-মুখে অন্ধকার দেখছেন তিনি।

জাহিদুল ইসলাম বলেন, এখন আমার ঋণের টাকা কে শোধ করবে। আমার স্বপ্ন ভেঙে গেল। আমি এ হাটে দীর্ঘ আট বছর ধরে আসি। কখনো আমার সঙ্গে এমন কিছু হয়নি। কীভাবে আমার কালো ষাঁড়টি হারিয়ে গেল আমি কিছুই বুঝতে পারছি না। আমি বাড়ি কীভাবে যাব, পরিবারকে কী বলব। ঝিনাইদহ থেকে একটু লাভের আশায় ঢাকায় এসেছিলাম, এখন লাভ তো দূরে থাক, আমার পুঁজি চলে গেল। আমি তো ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে গেলাম।

জাহিদুল ইসলামের ছেলে শাকিল শাহ্ বলেন, আমরা হাটে ২৬টি গরু নিয়ে আসি। গরুগুলো হাটে দুই ভাগে রাখি। এক ভাগে থাকা গরুগুলোর মধ্যে মাঝারি সাইজের কালো একটি ষাঁড় দু’জন ব্যক্তি দীর্ঘ সময় ধরে দেখেন। ষাঁড়টি তাদের পছন্দ হয়েছে বলেও জানান। এক পর্যায়ে তারা ভিডিও কল দিয়ে গরুটি ফোনের অন্য পাশে থাকা কাকে যেন দেখাচ্ছিলেন। আর বলছিলেন- ‘আমরা হাটের এ পাশে আছি এবং কালো রঙের ষাঁড়টি দেখেছি।’ তারা দুইজন যাওয়ার সময় বলেন- ‘গরুটি বিক্রি করবেন না আমরা টাকা নিয়ে আসছি।’ এ কথা বলে তারা হাট ত্যাগ করেন। 

শাকিল আরও বলেন, ওই দুইজন ব্যক্তি চলে যাওয়ার কিছুক্ষণ পর আমরা আর কালো ষাঁড়টি দেখতে না পেয়ে হাটের হাসিল ঘরে জানাই। তারা মাইকিং করে বিষয়টি সবাইকে জানান। আমরা হাটের ভেতরে বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুঁজি শুরু করি। কিন্তু কোথায়ও ষাঁড়টির দেখা পাইনি। গরুটি যখন হারিয়ে যায় ঘড়িতে রাত তখন দুইটা বাজে। হাট থেকে এভাবে গরু হারিয়ে যাওয়ায় পরিবারের সবাই আমরা চিন্তিত।

জাহিদুলের ছোট ভাই ওসমান হোসেন বলেন, কিছু বুঝে উঠার আগেই চোখের পলকে আমাদের গরুটি উধাও হয়ে গেল। তারা পরিকল্পনা করে এটি করেছে, আমার ভাই ও ভাতিজা এ নিয়ে হাট কর্তৃপক্ষকে জানালেও তারা এখনও কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।

এ বিষয়ে হাটের ইজারাদার মো. কামরুজ্জামান বলেন, আমরা কিছুক্ষণ আগে হাট থেকে গরু হারিয়ে যাওয়ার বিষয়টি জানতে পেরেছি। এটি সত্যিই দুঃখজনক। আমরা আশপাশের সিসিটিভির ফুটেজ দেখে দোষী ব্যক্তিদের শনাক্ত করতে স্বেচ্ছাসেবকদের নির্দেশ দিয়েছি।

পশুর হাটে দায়িত্বরত যাত্রাবাড়ী থানার এএসআই মো. ফারুক হোসেন বলেন, হাট থেকে পশু হারিয়ে যাওয়ার বিষয়ে আমরা মৌখিক অভিযোগ পেয়েছি। প্রয়োজনীয় তথ্য জেনে হাট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বসে আলোচনা করে ব্যবস্থা নেব। পাশের বেপারীরা এর সঙ্গে জড়িত আছে কিনা তাও ক্ষতিয়ে দেখা হবে।


মন্তব্য


সর্বশেষ সংবাদ