নির্বাচন নিয়ে কূটনীতিকদের মাথা না ঘামানোর পরামর্শ কাদেরের

রাজনীতি
ওবায়দুল কাদের  © সংগৃৃহীত

আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু এবং ঐতিহাসিক হবে, এ দাবি করে বিভিন্ন দেশের কূটনীতিক ও সংস্থাকে ‘মাথা না ঘামানোর’ পরামর্শ দিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। বিএনপির নালিশে কান না দিয়ে জনগণ কী চায়, তা বুঝতে তাদের সঙ্গে কথা বলারও আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।

শুক্রবার (১৯ মে) রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে ‘বিএনপি-জামায়াতের সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ, নৈরাজ্য, অপরাজনীতি ও অব্যাহত দেশবিরোধী ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে’ আয়োজিত শান্তি সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ আহ্বান জানান তিনি। ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ এ সমাবেশের আয়োজন করে।

ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘নির্বাচন কারো জন্য বসে থাকবে না। দুনিয়ার অন্য গণতান্ত্রিক দেশে যেভাবে নির্বাচন হয়, বাংলাদেশেও সেভাবে হবে।’

“বিদেশি বন্ধুদের বলব, বিএনপি আপনাদের কাছে যতই নালিশ করুক, আমি আপনাদের আশ্বস্ত করতে চাই, আমার দেশে ক্লিন, ফেয়ার, অবাধ, সুষ্ঠু একটা ঐতিহাসিক নির্বাচন হবে আগামী নির্বাচন। আপনাদের কারো এ নিয়ে মাথা ঘামানোর দরকার নেই।’

বিএনপিকে ‘কোমড়ভাঙা দল’ অভিহিত করে তাদের ‘কাকুতিমিনতি’ না শুনতে বিদেশি কূটনীতিকদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এদের কথা শুনে লাভ নেই। জনগণের সঙ্গে গিয়ে কথা বলুন।’

পড়ুন>>> বিদেশিরা ক্ষমতায় বসিয়ে দেবে, এমন চিন্তা শেখ হাসিনা করেন না

‘কূটনীতিক বন্ধুরা আপনারা মানুষের সঙ্গে কথা বলুন। তারা কী চায়? বিএনপি জানে না, তারা কী চায়? তারা (বিএনপি) এটা জানে, ভোট হলে তাদের খবর থাকবে না। বাধ্য হয়ে এজন্য তারা আন্দোলন করছে।’

‘বিএনপি কর্মীদের বিশ্বাস ভেঙেছে’ বিএনপি আন্দোলনে জয়ী হবে, তা এখন দলটির কর্মীরা বিশ্বাস করছে না বলেও মনে করেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক।

তিনি বলেন, ‘এটা সারা দেশে প্রমাণ হয়ে গেছে যে, বিএনপি আন্দোলনে পরাজিত। নির্বাচনেও শেখ হাসিনার ধারে-কাছেও যেতে পারবে না। এজন্য তারা ষড়যন্ত্র করছে ক্ষমতায় যেতে।’

বিএনপি নেতাদের প্রতি প্রশ্ন রেখে ওবায়দুল কাদের বলেন, আন্দোলনে নেতা নেই, নির্বাচনে নেতা নেই। কাকে নিয়ে এগোবেন? কাকে নিয়ে ভোট করবেন? কাকে নিয়ে শেখ হাসিনাকে হটাবেন? অস্ত্র নিয়ে, বোমা মেরে, পেট্রোল বোমা আর যদি মারতে চান, বাংলার জনগণ রুখে দাঁড়াবে।

বিএনপি পদযাত্রার কর্মসূচিকে ‘অন্তিম যাত্রা’ উপাধি দিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘উপরে উপরে পদযাত্রা আর তলে সহিংসতা। উপরে দেখাচ্ছে, আমরা নরম, ভেতরে ভেতরে আগুনসন্ত্রাসের প্রস্তুতি নিচ্ছে।’

গুলশান ও নয়াপল্টন বিএনপির দুটি অফিসকে গুজব আর মিথ্যার কারখানা অভিহিত করে তিনি বলেন, ‘বিএনপি নেতারা গুলশানে একটি গুজবের কারখানা করেছে। সেখান থেকে শেখ হাসিনা, আওয়ামী লীগ ও মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধে, অসাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে গুজব ছড়ায়। অনলাইনে আজগুবি যতসব মিথ্যা কথা বলে অপপ্রচার করছে। মিথ্যাচারের আরেকটি ফ্যাক্টরি নয়াপল্টনে। সেখান থেকে ষড়যন্ত্র আর বাংলাদেশের বিরুদ্ধে বিদেশিদের কাছে নালিশের রাজনীতি করছে। শেখ হাসিনার সরকারকে হটিয়ে ক্ষমতায় আসতে টাকা ছড়িয়ে লবিং করছে, ষড়যন্ত্র করছে।’

মির্জা ফখরুলের এক মন্তব্যের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘ফখরুল সাহেব, যতই চেঁচামেচি করেন ২০১৩, ২০১৪ সালের মতো আবার যদি আগুন নিয়ে মানুষ পোড়াতে আসেন; যে হাতে আগুন, সেই হাত আমরা পুড়িয়ে দেবো। এই দেশে আবারও যদি বিএনপি আন্দোলনের নামে ভাঙচুর করে, সেই হাত আমরা ভেঙে দেবো। দেশের মানুষ শেখ হাসিনার সঙ্গে আছে।’

তিনি বলেন, ‘বিএনপির আন্দোলনে দেশের মানুষ সাড়া দেবে না। কারণ, মানুষ জানে, শেখ হাসিনা সৎ। শেখ হাসিনা নিজের ভাগ্যোন্নয়নে নয়, জনগণের ভাগ্যোন্নয়নে কাজ করে। কারা হাওয়া ভবন করে লুটপাট করেছে, তা দেশের মানুষ জানে।’

সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন—আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আব্দুর রাজ্জাক, কামরুল ইসলাম, মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, দীপু মনি প্রমুখ। ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু আহমেদ মন্নাফীর সভাপতিত্বে সভা পরিচালনা করেন সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির।  


মন্তব্য