প্রধানমন্ত্রীকে হত্যার হুমকি

শেখ হাসিনাকে নিয়ে চাঁদের বক্তব্য ‘স্লিপ অব টাং’: রিজভী

বিএনপি
রুহুল কবির রিজভী  © বিবিসি

আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিয়ে রাজশাহী জেলা বিএনপির আহ্বায়কের বক্তব্য ‘স্লিপ অব টাং’ বলে উল্লেখ করেছেন দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, এ নিয়ে আওয়ামী লীগ উদ্দেশ্যমূলকভাবে একটি অবনতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টির অপচেষ্টা চালাচ্ছে। 

মঙ্গলবার (২৩ মে) দুপুরে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

রিজভী বলেন, পত্রিকায় দেখলাম চট্টগ্রামে সোমবার প্রকাশ্যে পিস্তল হাতে নিয়ে মিছিল করেছেন চট্টগ্রাম-১৬ (বাঁশখালী) আসনের বিনা ভোটের সংসদ সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরী। জঙ্গি কায়দায় প্রকাশ্যে পিস্তল হাতে মিছিলের অগ্রভাগে নেতৃত্ব দিয়েছেন। এই ঘটনার ২৪ ঘণ্টা পার হতে চললেও পুলিশ এখনো পিস্তল মুস্তাফিজকে গ্রেফতার করেনি। তার বিরুদ্ধে কোনো মামলা পর্যন্ত হয়নি। এটি একটি ভয়ঙ্কর আলামত।

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াসহ বিভিন্ন বিশিষ্ট ব্যক্তি ও বিরোধী নেতাকর্মীদের সরাসরি হত্যার হুমকির উদাহরণ টেনে রিজভী বলেন, বিনাভোটে সর্বময় ক্ষমতা কুক্ষিগত করে রাখতে র‌্যাব-পুলিশকে দিয়ে বিরোধী দল ও মতের হাজার হাজার মানুষকে গুম খুন অপহরণ করেছে। আওয়ামী লীগের মুখের সন্ত্রাস থেকেও মানুষ রক্ষা পায়নি। শেখ হাসিনা প্রকাশ্যেই সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে কখনো পরোক্ষভাবে, কখনো সরাসরি হত্যার হুমকি দিয়েছেন। 

গত বছরের ১৮ মে এক আলোচনা সভায় শেখ হাসিনা পদ্মা নদীতে টুস করে ফেলে দিয়ে হত্যা করার হুমকি দেন বেগম খালেদা জিয়াকে। নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনুসকে পদ্মা সেতু থেকে পানিতে ফেলে চুবিয়ে মারার হুমকিও দিয়েছেন। এখানেই শেষ নয়, দেশের জনগণ ভুলে যায়নি, একটার বদলে ১০টা লাশ ফেলার হুমকি দিয়েছিলেন শেখ হাসিনা। 

বিএনপির সিনিয়র এই নেতা বলেন, শেখ হাসিনার মতো আওয়ামী লীগের নেতা-মন্ত্রী-এমপিরা খুন, গুম, চোখ তুলে নেওয়া, হাত-পা কেটে দেওয়া, গুলি করে মারার হুমকিতে দেশের বিরোধী রাজনৈতিক নেতারা ছাড়াও সুশীল সমাজের নেতারা আতঙ্কে থাকেন। দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে হত্যা করতে তার গুলশান অফিসের দরজা পর্যন্ত আওয়ামী লীগের নেতা মুফিদুল ইসলাম গেলেও তার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি পুলিশ। 

তিনি বলেন, আপনাদের নিশ্চয়ই স্মরণ আছে, শেখ হাসিনার বিনা ভোটের সরকারের শরিক দল জাসদের একাংশের সাবেক সভাপতি ও চট্টগ্রাম-৮ আসনের সাবেক এমপি মরহুম মঈন উদ্দীন খান বাদল ২০১৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে খালেদা জিয়াকে গুলি করে হত্যার হুমকি দেন। আওয়ামী লীগের সাবেক মন্ত্রী আব্দুল লতিফ সিদ্দিকী হরতালকারীদের বাড়িতে ঢুকে হত্যা করার নির্দেশ দিলেও তার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।

রিজভী বলেন, আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম বলেছেন এবার আন্দোলনের নামে নৈরাজ্য করা হলে প্রত্যেকের হাত-পা কেটে দেওয়া হবে। শেখ হাসিনা ও তার দলের নেতাদের নির্দেশনায় ঢাকা সিটি করপোরেশনের মেয়র নির্বাচনের সময় ধানের শীষের প্রার্থী তাবিথ আউয়ালের গণসংযোগের সময় দিনের আলোতে খালেদা জিয়াকে হত্যার জন্য গাড়িতে হামলা করে ভাঙচুর করা হয়। 

তিনি আরও বলেন, আওয়ামী লীগের সাবেক নৌমন্ত্রী শাহজাহান খান প্রকাশ্য টকশোতে প্রখ্যাত আইনজীবী বিএনপির সিনিয়র নেতা ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলাম মিয়ার চোখ তুলে নেওয়ার হুমকির কথা সর্বজনবিদিত। গত রোববার আওয়ামী আইনজীবী পরিষদের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে মেয়র তাপস বলেছেন, যে সব সুশীলরা আমাদেরকে বুদ্ধি দিতে যাবেন সেই সব সুশীলদের আমরা বস্তায় ভরে বুড়িগঙ্গা নদীর কালো পানিতে ফেলে দেব।

রিজভী বলেন, ইতিহাস সাক্ষী প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশে সব সন্ত্রাসের উস্কানিদাতা ও হুকুমদাতা। 

রিজভী বলেন, শুধু হত্যাই নয়, মৃত লাশের ওপর নৃত্য করার দৃশ্যও প্রত্যক্ষ করে বিশ্ববাসী। ১০ ডিসেম্বর ঢাকায় গণসমাবেশ বানচাল করতে নয়াপল্টন বিএনপি কেন্দ্রীয় অফিসে নারকীয় তাণ্ডব ও আমাদের শত শত নেতাকর্মীকে গ্রেফতারের একদিন পরে গত ৮ ডিসেম্বর আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক যৌথসভায় শেখ হাসিনা বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের হাত ভেঙ্গে দেওয়ার নির্দেশ দেন।


মন্তব্য


সর্বশেষ সংবাদ