আদালতে বাকবিতণ্ডা

বিএনপিপন্থী ১৫০ আইনজীবীর বিরুদ্ধে থানায় জিডি

আদালত
আদালতে পুলিশের বাড়তি নিরাপত্তা  © সংগৃহীত

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও তার স্ত্রী জোবায়দা রহমানের মামলার শুনানিতে হট্টগোলের ঘটনায় বিএনপিপন্থী ১৫০ আইনজীবীর বিরুদ্ধে থানায় জিডি করেছেন আদালতের নাজির। 

আজ বুধবার (৩১ মে) তিনি রাজধানীর কোতোয়ালি এ জিডি করেন বলে জানা গেছে।   

তারেক রহমান ও তার স্ত্রী ডা. জোবায়দা রহমানের বিরুদ্ধে দায়ের করা অবৈধ সম্পদ অর্জনের মামলায় সাক্ষ্য নেওয়ার সময় মঙ্গলবার (৩০ মে) বিকেল ৩টার দিকে ঢাকা মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ মো. আছাদুজ্জামানের আদালতে আওয়ামী লীগ ও বিএনপিপন্থী আইনজীবীদের মধ্যে বাকবিতণ্ডা ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। তখন বিচারক সাক্ষ্যগ্রহণ মুলতবি রেখে এজলাস ছাড়তে বাধ্য হন। বিকেল সোয়া ৫টা পর্যন্ত দুই পক্ষের আইনজীবীদের মধ্যে এই হট্টগোল চলে।  

জানা যায়, মামলাটিতে গত ২৮ মে থেকে প্রতিদিন সাক্ষ্য গ্রহণ চলছিল। সোমবার বিএনপিপন্থী আইনীজীবী ঢাকা আইনজীবী সমিতির সাবেক সেক্রেটারি ওমর ফারুক ফারুকী মামলাটির সাক্ষ্য চলাকালে বিচারককে বলেন, এ মামলায় প্রতিদিন সাক্ষ্য গ্রহণের বিষয়টি দৃষ্টিকটু। আমরা চাই, এভাবে যেন প্রতিদিন সাক্ষ্য গ্রহণ না করা হয়। তখন বিচারক বলেছিলেন, তিনি বিষয়টি দেখবেন।  

মঙ্গলবার আবার মামলাটি সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য থাকায় এ আইনজীবী বিএনপি দলীয় কিছু আইনজীবীর উপস্থিতিতে বিষয়টি আবার আদালতে মেনশন করলে রাষ্ট্রপক্ষের একজন প্রসিকিউটর আইনজীবী ফারুকীর বক্তব্য ভিডিও করছিলেন। ওই সময় বিএনপি দলীয় আইনজীবীরা তাতে বাধা দেন। বিষয়টি নিয়ে উভয় পক্ষের মধ্যে বাকবিতণ্ডা শুরু হয়। পরে এটা একপর্যায়ে হাতাহাতিতে রূপ নেয়। তখন বিচারক এজলাস ছেড়ে চলে যান। 

এদিকে খবর পেয়ে আওয়ামী লীগ দলীয় আইনজীবীরাও ওই আদালতে আসেন। উভয় পক্ষের আইনজীবীরা একে অপরের বিরুদ্ধে স্লোগান দিতে থাকেন। বেলা ৫টা পর্যন্ত বিএনপিপন্থী আইনজীবীরা আদালত কক্ষে অবস্থানের পর তারা চলে যান। সন্ধ্যা ৬টার দিকে বিচারক পুনরায় এজলাসে উঠে ২৫ মিনিট অবস্থান করে সাক্ষীর অবশিষ্ট জবানবন্দি নেন।

এ বিষয়ে দুই পক্ষ একে অপরকে অভিযুক্ত করে বক্তব্য দিয়েছেন। এ সম্পর্কে দুদক প্রসিকিউটর মোশাররফ হোসেন কাজল বলেছেন, মামলার আসামি তারেক রহমান ও জোবায়দা রহমান পলাতক। তাই, এ মামলায় আসামিপক্ষের কোনো বক্তব্য থাকতে পারে না। তারপরও তারা প্রতিদিন আদালতে উপস্থিত থেকে বাধা সৃষ্টি করেন। মঙ্গলবার তারা আদালতের সঙ্গে অনেক অশোভন আচরণ করেছেন।

বিএনপিপন্থী আইনজীবী ওমর ফারুক ফারুকী বলেন, আসামি পলাতক থাকলে আমরা কি আদালতে উপস্থিতও থাকতে পারব না? তারা আদালত কক্ষে বেআইনিভাবে ছবি তুলতে, ভিডিও করতে থাকেন? আমরা এর প্রতিবাদ করায় আমাদের ওপর চড়াও হয়ে মারধর করেছেন। তারাই আদালতের পরিবেশ নষ্ট করেছেন।  

এদিকে, আদালত মঙ্গলবার মামলাটিতে আরও একজনের সাক্ষ্য গ্রহণ করেছেন। তিনি হলেন আরব বাংলাদেশ ব্যাংকের চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট এম এ মতিন। এ নিয়ে মামলাটির ৫৬ সাক্ষীর মধ্যে সাতজনের সাক্ষ্য গ্রহণ শেষ হলো। 

আইনজীবীদের এমন কর্মকাণ্ডের পর আদালত এলাকায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়। কয়েকশ পুলিশ মোতায়েন করা হয় ওই এলাকায়।


মন্তব্য


সর্বশেষ সংবাদ