আপনার নেত্রীর জন্মদিন ৬টি কেন? মির্জা ফখরুলকে ওবায়দুল কাদেরের প্রশ্ন
- ঢাবি প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ০৮ আগস্ট ২০২৩, ০৮:২৩ PM , আপডেট: ০৮ আগস্ট ২০২৩, ১০:০১ PM

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুলকে উদ্দেশ্য করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সড়ক, পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন , আপনি মিথ্যাকে সত্য বলে বয়ান করেন। এমন ভাব দেখান যে আপনার মত আস্থাভাজন কেউ হয় না। আপনাকে এর আগেও আমি অনেক প্রশ্ন করেছি আপনি জবাব দেননি। বঙ্গমাতার জন্মদিনে আমি জানতে চাই, আপনার নেত্রীর জন্মদিন ৬টি কেন? একজন মানুষের কয়টা জন্মদিন হয়?
বিএনপির উদ্দেশে ওবায়দুল কাদের বলেন, বাংলাদেশের একটি দল কত নিষ্ঠুর, এরা রাজনীতিতে কতটা প্রতিশোধ পরায়ন, সেটা সবাই জানে। অথচ এখন তারা আবার গণতন্ত্রের কথা বলে। বিদেশে গিয়ে দেশের নামে আপনারা অপপ্রচার করে যাচ্ছে, আমাদের ক্ষমতা থেকে সরানোর চেষ্টা করছে। অথচ বিদেশের কোন প্রভু বা বন্ধু আমাদের ক্ষমতায় বসাবে না, আমাদের পুনরায় ক্ষমতায় বসাবে বাংলাদেশের জনগণ।
মঙ্গলবার (৮ আগষ্ট) বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি মিলনায়তনে আয়োজিত বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেসা মুজিবের ৯৩ তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষ্যে “বাংলার মাতা, বাংলাদেশের নেতা” শীর্ষক ছাত্রী সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, বাংলাদেশের মানবাধিকার নিয়ে চিন্তিত আমেরিকায় প্রতিদিন মানবাধিকার লঙ্ঘিত হয়। আমেরিকার সাবেক প্রেসিডেন্ট তার বিরুদ্ধে এমন কোন অভিযোগ নেই যা আদালতে পেশ করা হয়নি। কিন্তু তার বিরুদ্ধে যত অভিযোগ বাড়ছে তার জনমতও ততই বৃদ্ধি পাচ্ছে। এক জরিপে দেখলাম ট্রাম্পের জনপ্রিয়তা ৪২ শতাংশ আর বাইডেনের জনপ্রিয়তাও ৪২ শতাংশ অথচ সে নিয়মিত মানবাধিকার ক্ষুন্ন করেই যাচ্ছে। তারা এত বাংলাদেশ নিয়ে চিন্তা করে তাহলে কেন আমেরিকায় বছরে ২০০ এর অধিক গান ফায়ার হয়ে শত শত নারী-শিশু মারা যায়?
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, 'দুষ্টু ছেলে' ইজরায়েলকে তো কেউ কিছু বলে না? প্রতিনিয়ত ফিলিস্তিনের সাংবাদিক থেকে শুরু করে শিশু, নারীদের হত্যা করা হচ্ছে কিন্তু সেগুলো নিয়ে কেউ কথা বলছে না, সমাধান করছে না? কারণ তারা তাদের কাছের ও আজ্ঞাবহ দেশ। তারা তাদের অপরাধ দেখবে না। আজকে বিচার কোথায়? ইউরোপীয় ইউনিয়ন, আমেরিকা সবাই ঘুরে ঘুরে শুধু আমাদের দেশেই এসে খোঁজ নিচ্ছে অথচ অন্যান্য দেশে কত নৃশংসতা চলছে; মানুষ খাবার পাচ্ছে না, থাকার জায়গা পাচ্ছে না। তাদের খোঁজ নিচ্ছে না কেউ, আসে ঘুরেফিরে শুধু বাংলাদেশে। বাংলাদেশের দোষ কোথায়?
জাতিসংঘের উদ্দেশ্যে ওবায়দুল কাদের বলেন, উখিয়ায় রোহিঙ্গাদের জনসংখ্যা ৪ লাখ ছিলো; এখন বাড়তে বাড়তে ১২-১৩ লাখ হয়েছে। বাংলাদেশ কিভাবে এত মানুষকে খাওয়াচ্ছে! রোহিঙ্গাদের দোষ কোথায়? জাতিসংঘ তাদের কেন নিজ দেশে ফেরত নেয়ার ব্যবস্থা করছে না? আমাদের কক্সবাজার ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে এর মাঝে আমাদের অনুদান কমিয়ে দেয়া হয়েছে। জাতিসংঘ শুধু প্রধানমন্ত্রীর প্রশংসা করেই চুপ হয়ে যাচ্ছে। শেখ হাসিনার প্রশংসা করলেই কি জাতিসংঘের দায়িত্ব শেষ হয়ে যায়?
তারেক রহমানের প্রসঙ্গে সড়ক, পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী বলেন, যুবরাজ তারেক রহমান লিখিত মুচলেকা দিয়ে লন্ডনে চলে গেছেন। তিনি বলেছেন যে তিনি আর রাজনীতি করবেন না; অথচ তিনি লন্ডনে বসে বক্তব্য দিয়েই যাচ্ছেন; দেশের অপপ্রচার করেই যাচ্ছেন; নিজের দলকে নেতৃত্ব দিয়ে যাচ্ছেন। আদালত বলেছে তারেক রহমান শাস্তি যোগ্য অপরাধী, তার কোন বক্তব্য প্রচার করা যাবে না অথচ সে প্রতিনিয়ত আদালতের আদেশ লঙ্ঘন করে যাচ্ছে। আমরা এদেশে জন্মেছি এ দেশেই থাকবো বিদেশে যাবো না। আপনাদের নেতা সাহস থাকে আসুক, মাঠে আন্দোলন করুক। যে দলের নেতা ১৫ আগস্টের মাস্টারমাইন্ড, সামরিক শাসনকে বৈধতা দিয়েছে, বাংলাদেশের সংবিধানকে কাটাছিড়া করেছে, পরিবর্তন করেছে, বঙ্গবন্ধুর খুনীদের পুরস্কার স্বরূপ দূতাবাসে চাকরি দিয়েছে, নিরাপদে বিদেশে যেতে সাহায্য করেছে, গণতন্ত্র, মানবাধিকার, মুক্তিযুদ্ধ তাদের হাতে নিরাপদ নয়।
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন সংশোধন প্রসঙ্গে ওবায়দুল কাদের বলেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন সংশোধন হচ্ছে, এটা সংশোধনের জন্য ক্যাবিনেটে পাশও হয়েছে। জনগণ চায় এটা সংশোধন হোক তাই আমরা এটা সংশোধন করছি। আমি কাজ করবো, আমাদের সিদ্ধান্ত সঠিক নাকি বেঠিক সেটা দেখবে জনগণ, কারণ এ সরকার জনগণের সরকার। অন্যদিকে ঢালাওভাবে যেনো এই আইনের মাধ্যমে কেউ ক্ষতিগ্রস্ত না হয় সেই ব্যবস্থাও করা হচ্ছে বলে তিনি মন্তব্য করেন।
সমাবেশে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি সাদ্দাম হোসেনের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনানের সঞ্চালনায় ছাত্রী সমাবেশে ছাত্রলীগের ঢাবি শাখার সভাপতি মাজহারুল কবির শয়ন, সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকত প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।