এডিসি হারুনের বিরুদ্ধে মামলা করবে না ছাত্রলীগ

ছাত্রলীগ
  © সংগৃহীত

দুই কেন্দ্রীয় নেতাকে থানায় ধরে নিয়ে বেধড়ক পিটুনির ঘটনায় মামলার পরিবর্তে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) বিভাগীয় তদন্তে আস্থা রাখতে চায় ছাত্রলীগ। আজ সোমবার দুপুরে ডিএমপি কার্যালয়ে কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুকের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এ কথা জানান ছাত্রলীগ সভাপতি সাদ্দাম হোসেন।

আজ সোমবার বেলা সোয়া ১২টার দিকে সাদ্দাম ডিএমপি সদর দপ্তরে যান। এর কিছু সময় পর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনানও সেখানে পৌঁছান। ছাত্রলীগের শীর্ষ এই দুই নেতা ডিএমপি কমিশনার গোলাম খন্দকার ফারুকের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।

সাদ্দাম বলেন, ‘যেটি ঘটেছে সেটি অনাকাঙ্ক্ষিত ও দুঃখজনক ঘটনা। এতে বাংলাদেশের সব শ্রেণির নেতা–কর্মীদের হৃদয়ে রক্তক্ষরণ হয়েছে। এ ঘটনায় আইনি প্রক্রিয়া যেন নিশ্চিত করা হয় এবং দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়, সে জন্য আমরা গতকাল স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করেছি। আজ ডিএমপি কমিশনারের সঙ্গে বৈঠক করেছি। ডিএমপি কমিশনার আমাদের আশ্বস্ত করেছেন বিভাগীয় তদন্তের মাধ্যমে সর্বোচ্চ আইনানুগ শাস্তি নিশ্চিত করা হবে।’ 

এডিসি হারুন-কাণ্ডে কথা বলতে ডিএমপি সদর দপ্তরে ছাত্রলীগ সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকএডিসি হারুন-কাণ্ডে কথা বলতে ডিএমপি সদর দপ্তরে ছাত্রলীগ সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক
তিনি আরও বলেন, ‘ডিএমপি কমিশনারের সঙ্গে দেখা করে আমরা আমাদের দাবি জানিয়েছি। আমরা আনুষ্ঠানিক ও মৌখিকভাবে ডিএমপি কমিশনারের কাছে অভিযোগ দিয়েছি। তিনি আমাদের আশ্বস্ত করেছেন অভিযুক্ত পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্ত করা হবে। সেই তদন্তের মাধ্যমে দ্রুত সময়ের মধ্যে আইনানুগ সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করা হবে।’ 

এ ঘটনার পর ছাত্রলীগ দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিয়েছে জানিয়ে সাদ্দাম বলেন, ‘বাংলাদেশ ছাত্রলীগ যুগে যুগে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার জন্য লড়াই করেছে। এ ঘটনায় ছাত্রলীগ যে দায়িত্বশীলতা ও সুবিবেচনার পরিচয় দিয়েছে এর ওপর ভিত্তি করে বলতে পারি, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ এ বিষয়ে একটি নিয়মতান্ত্রিক সুস্পষ্ট সমাধান পাবে।’ 

মারধরের শিকার ছাত্রলীগ নেতাদের পরিবারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে তারা মামলা করবে কিন্তু ছাত্রলীগ নিষেধ করছে—এক সাংবাদিকের এমন মন্তব্যের জবাবে ছাত্রলীগ সভাপতি বলেন, ‘আমরা এ বিষয়ে আজকে ডিএমপি কমিশনারের সঙ্গে কথা বলেছি। ডিএমপি তদন্ত কমিটির রিপোর্ট যেন দ্রুত দেওয়া হয় সে জন্য আমরা বলেছি। তদন্তের মাধ্যমে আইনানুগ সর্বোচ্চ শাস্তি যেন নিশ্চিত করা হয় সেটি আমরা বলেছি। পরিবারকে মামলা করতে দেওয়া হচ্ছে না ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে—এ কথাটি মিথ্যা।’ 

পুলিশের পক্ষ থেকে কি বলা হয়েছে—প্রশ্ন করা হলে ছাত্রলীগ সভাপতি বলেন, ‘ডিএমপি কমিশনার আমাদের বলেছেন, তারা এ বিষয়ে বিব্রত। এ ছাড়া আমরা ডিএমপিকে বলেছি এ ঘটনায় আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করতে যা যা করণীয় তারা যেন করে।’ 

এ ঘটনায় ছাত্রদলের উদ্বেগকে ছাত্রলীগ কিভাবে দেখছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘যারা এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করতে চায়, তাদের বিষয়ে আমরা সতর্ক আছি। যারা দেশের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করতে চায় এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটাতে চায় তাদের ফাঁদে ছাত্রলীগ পা দেবে না।’ 

পুলিশ ও ছাত্রলীগের মধ্যে এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে তিক্ত সম্পর্ক সৃষ্টি হওয়ার আশঙ্কা আছে কিনা প্রশ্ন করা হলে সাদ্দাম বলেন, ‘সেটির কোনো সুযোগ নেই। আমাদের মধ্যে সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক রয়েছে।’ 

এ সময় সাদ্দামের সঙ্গে ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনানসহ কেন্দ্রীয় ছয় নেতা ছিলেন। 

গত শনিবার রাতে শাহবাগ থানায় দুই ছাত্রলীগ নেতাকে নিয়ে মারধর করেন এডিসি হারুন ও কয়েকজন পুলিশ সদস্য। এই ঘটনার জেরে গতকাল রোববার হারুনকে এপিবিএনে বদলি করা হয়েছে।


মন্তব্য


সর্বশেষ সংবাদ