দুর্গাপূজার পর আন্দোলন সফল করতে নয়াপল্টনে বিএনপির জনসমাবেশ আজ
- মোমেন্টস ডেস্ক
- প্রকাশ: ১৮ অক্টোবর ২০২৩, ০৯:৪৪ AM , আপডেট: ১৮ অক্টোবর ২০২৩, ০৯:৪৪ AM

সরকার পতনের একদফা দাবি আদায়ে চূড়ান্ত আন্দোলনের দিকে যাচ্ছে বিএনপি। এবার ঢাকাকেন্দ্রিক সর্বাত্মক কর্মসূচির প্রস্তুতি নিচ্ছে দলটি। এজন্য দুর্গাপূজার পর কর্মসূচি জোরদার করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। যুগপৎ আন্দোলনের অংশ হিসাবে আজ বুধবার (১৮ অক্টোবর) নয়াপল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে জনসমাবেশ রয়েছে। এতে ব্যাপক লোকসমাগম হবে বলে আশা করছেন সিনিয়র নেতারা। এখান থেকে নতুন কর্মসূচি ঘোষণার কথা রয়েছে।
আগামী ২৭ অথবা ২৮ অক্টোবর ঢাকায় জনসমাবেশ বা মহাসমাবেশের মাধ্যমে আন্দোলনের চূড়ান্ত পর্ব শুরু হতে পারে। আন্দোলন সুশৃঙ্খলভাবে সফল করতে ইতোমধ্যে সব পর্যায়ের নেতাদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। জনসমাবেশ থেকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও প্রশাসনকে নিরপেক্ষ ভূমিকা পালনসহ আরও কিছু গুরুত্বপূর্ণ বার্তাও দেওয়া হবে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে এসব তথ্য।
সূত্র আরও জানায়, পদত্যাগ করে নিরপেক্ষ নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তরের জন্য শেষবারের মতো সরকারকে কড়া বার্তা দিতে চায় বিএনপি। সোমবার দলের জাতীয় স্থায়ী কমিটির ভার্চুয়াল বৈঠকে আজকের জনসমাবেশ থেকে সরকারকে পদত্যাগে আলটিমেটাম দেওয়া নিয়ে পক্ষে-বিপক্ষে যুক্তি তুলে ধরেন নীতিনির্ধারকরা। পরে নেতারা মত দেন, এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দেবেন ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান। পরবর্তী কর্মসূচি ঢাকায় জনসমাবেশ বা মহাসমাবেশ ঘোষণার বিষয়ে নীতিগত সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
নেতারা জানান, লাগাতার কর্মসূচিও আজকের জনসমাবেশ থেকে ঘোষণার সম্ভাবনা রয়েছে। আবার পরবর্তী জনসমাবেশ বা মহাসমাবেশ থেকেও ঘোষণা আসতে পারে। তবে আগামী ২০ থেকে ২৪ অক্টোবর পর্যন্ত দুর্গাপূজার সময়ে বড় কোনো কর্মসূচি না রাখার সিদ্ধান্ত হয়। এ সময় একদফা দাবিতে ঢাকাসহ সারা দেশে গণসংযোগ কর্মসূচি চলবে। পাশাপাশি ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্রঐক্যের ব্যানারে ঢাকাসহ বড় কয়েকটি বিভাগে ছাত্র-শিক্ষক-অভিভাবকদের সঙ্গে মতবিনিময় কর্মসূচি পালন করা হবে।
এদিকে একই দাবিতে বিএনপি ছাড়াও সমমনা রাজনৈতিক দল ও জোট আজ রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে নিজ নিজ ব্যানারে জনসমাবেশ করবে।
জানতে চাইলে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, দুর্গাপূজার মধ্যে সরকারের শুভবুদ্ধির উদয় হোক। জনগণের দাবি মেনে নিয়ে সরকার পদত্যাগ করে নির্দলীয় সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করবে। অন্যথায় আন্দোলনের মধ্য দিয়েই পদত্যাগে বাধ্য করা হবে। সামনে চূড়ান্ত আন্দোলন শুরু হবে। জনগণকে সঙ্গে নিয়ে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তোলা হবে। আর যদি অন্যায়ভাবে নেতাকর্মীদের গ্রেফতার, হামলা, গায়েবি মামলা করা হয় দেশের মানুষ প্রতিরোধ করবে। সেই প্রতিরোধের মধ্য দিয়ে বিজয় আসবে।
বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বলেন, দুর্গাপূজার পর নতুন কর্মসূচি আসছে। সেটা গতানুগতিক কর্মসূচি হবে না। কঠিন এবং কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে।
মঙ্গলবার নয়াপল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী জানান, বুধবার বেলা ২টায় নয়াপল্টনস্থ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণের উদ্যোগে জনসমাবেশ হবে। চলমান আন্দোলন বিজয়ের দিকে অগ্রসর হচ্ছে দাবি করে ঢাকাবাসীসহ বিএনপির সব পর্যায়ের নেতাকর্মী, সমর্থকদের জনসমাবেশকে সার্থক ও সফল করার জন্য আহ্বান জানান তিনি।
রিজভী আরও বলেন, শেখ হাসিনা (প্রধানমন্ত্রী) পদত্যাগ না করা পর্যন্ত আন্দোলনের গতি-প্রকৃতির পরিবর্তন হবে না, বরং আরও তীব্রতর হবে। জনসমাবেশ সম্পর্কে বিভ্রান্ত ছড়ানোর জন্য সরকারের বিভিন্ন সংস্থা নানাভাবে অপপ্রচার চালাচ্ছে। কিন্তু তাতে কোনো কাজ হবে না।
জানা গেছে, আজ নয়াপল্টনের জনসমাবেশকে কেন্দ্র করে ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে বিএনপি। এ জনসমাবেশকেও ঐতিহাসিক করতে চায় দলটি। সেজন্য ঢাকা মহানগরসহ আশপাশের জেলা থেকেও বিপুলসংখ্যক দলীয় নেতাকর্মীদের অংশ নিতে বলা হয়েছে।