২৪ ঘণ্টায় বিএনপির ২৭২ নেতাকর্মী আটক

বিএনপি
  © ফাইল ছবি

সারাদেশে গত ২৪ ঘণ্টায় ২৭২ জনের বেশি নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার হয়েছে বলে দাবি করেছে বিএনপি। তাদের মধ্যে বিএনপির মিডিয়া সেলের প্রধান জহির উদ্দিন স্বপন ও ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির সদস্য সচিব আমিনুল হক রয়েছেন।

গতকাল বৃহস্পতিবার বিএনপির জেষ্ঠ্য যুগ্ম সদস্য সচিব রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তি এমন দাবি করা হয়। ওই বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ১৬টি মামলায় ১৩৫৫ জনের অধিক নেতাকর্মীকে এজাহার নামীয় এবং অজ্ঞাত আসামি করা হয়।

মহাসমাবেশ চলাকালে রাজধানীর পল্টন এলাকায় পুলিশ হত্যা মামলায় সরাসরি জড়িত আপন আহমেদসহ পৃথক অভিযানে গতকাল বৃহস্পতিবার ১১ জনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ ও র‍্যাব। পুলিশ সূত্র জানায়, আপনকে গতকাল পটুয়াখালী থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। তিনি যুবদল কর্মী।

এদিকে বিএনপি ও জামায়াতের অবরোধের প্রথম দিন নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে সংঘর্ষের সময় তিন পুলিশকে কুপিয়ে জখমের অভিযোগে ১০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। রাজধানীর গুলশানের একটি হোটেল থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। র‍্যাব সদরদপ্তর বৃহস্পতিবার এক বার্তায় এ তথ্য জানিয়েছে।

র‍্যাব জানায়, গত ২৮ অক্টোবর রাজধানীতে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সমাবেশকে কেন্দ্র করে দুষ্কৃতিকারী ও সন্ত্রাসীরা রাজধানীর কাকরাইল, পল্টন, ফকিরাপুল ও মতিঝিলসহ বিভিন্ন স্থানে সাধারণ মানুষের উপর নৃশংস কায়দায় হামলা ও আক্রমণ চালায়।তারা গণপরিবহন, ব্যক্তিগত পরিবহন ও সরকারি বিভিন্ন যানবাহনে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে। তারা প্রধান বিচারপতির বাসভবনে হামলা, আক্রমণ ও ভাঙচুর করে। তাদের হামলায় আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য, গণমাধ্যমকর্মী ও সাধারণ মানুষসহ বহু হতাহতের ঘটনা ঘটে।
র‍্যাব আরো জানায়, পরবর্তীতে সময়ে রাজনৈতিক দলসমূহের বিভিন্ন কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে স্বার্থান্বেষী ও সুযোগসন্ধানী মহল রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে মহাসড়কে অগ্নিসংযোগ, গণপরিবহন ও ব্যক্তিগত পরিবহন ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ, সরকারি বিভিন্ন স্থাপনা ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগসহ দেশব্যাপী বিভিন্ন ধরনের নাশকতার ঘটনা ঘটে। এরপর গত ৩১ অক্টোবর  নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারের পাঁচরুখী এলাকায় কতিপয় দুষ্কৃতিকারী ও সন্ত্রাসী মহাসড়কে নাশকতা ও সহিংসতা চালিয়ে যানবাহনে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটায় এবং দেশীয় ধারালো অস্ত্রসহ বিভিন্নভাবে হামলা করে সাধারণ মানুষ, দায়িত্বরত আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী ও গণমাধ্যম কর্মীদের জখম করে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির চেষ্টা করে।

আরও পড়ুন: অপকর্ম করতে আবারও অবরোধ দিয়েছে বিএনপি: কাদের

আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে র‍্যাব দুষ্কৃতিকারী ও স্বার্থান্বেষী মহলের অপতত্পরতার সাথে জড়িতদের আইনের আওতায় নিয়ে আসতে নজরদারী অব্যাহত রেখেছে।এরই ধারাবাহিকতায়, অদ্য ভোরবেলা র‍্যাব-১১ এর একটি আভিযানিক দল রাজধানীর গুলশান এলাকায় একটি পাঁচতারকা হোটেলে অভিযান চালিয়ে জুয়েল আহম্মেদ, মো. ইফসুফ আলী ভুইয়া, মো. মাসুম শিকারী, হাবিবুর রহমান সেলিম, শফিউদ্দিন ভুইয়া, শফিউদ্দিন ভুইয়া, মাসুকুল ইসলাম ওরফে রাজিব, শাকিল মিয়া, আরমান মোলস্না ও হাবিবুর রহমানকে গ্রেপ্তার করে র‍্যাব।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তারকৃতরা নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারের পাঁচরুখী এলাকায় নাশকতা ও সহিংসতা চালিয়ে একাধিক পুলিশ সদস্যকে কুপিয়ে জখম করার ঘটনায় নিজেদের সম্পৃক্ততার বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছে বলে জানায় র‍্যাব।

র‍্যাব জানায়, গ্রেপ্তারকৃতদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে, দেশের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতি ও জনজীবন বিপর্যস্ত করতে গত ৩১ অক্টোবর  নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারের পাঁচরুখী এলাকায় কতিপয় দুষ্কৃতিকারী সহযোগিসহ দেশীয় ধারালো অস্ত্র, লাঠিসোটা, ইট পাথর, ককটেল বোমা ফুটিয়ে দাপট প্রদর্শন এবং ভয়ভীতি ও ত্রাসের সৃষ্টি করে। তারা ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে টায়ার পুড়িয়ে ও গাছের গোড়ালি ফেলে যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দেয়। এসময় তারা মহাসড়কে অ্যাম্বুলেন্স, গণপরিবহনসহ বিভিন্ন যানবাহনে ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ করে। তারা দেশীয় ধারালো অস্ত্র, লাঠিসোটা ও ইট- পাথর নিক্ষেপ করে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের ওপর হামলা চালায়।

র‍্যাব জানায়, তারা সন্ত্রাসীদের সহযোগিতায় সাধারণ মানুষ, দায়িত্বরত আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী ও গণমাধ্যম কর্মীদের ধারালো অস্ত্র, লোহার রড, লাঠি ও  ইটপাটকেল দিয়ে হামলা ও আক্রমণ করে জখম করে। তন্মধ্যে তারা ৩ জন পুলিশ সদস্যকে দেশীয় ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপানোসহ বিভিন্নভাবে গুরুতর জখম করে। পরবর্তীতে তারা আরও বেপরোয়া হয়ে একপর্যায়ে নরসিংদী টু ঢাকাগামী কয়েকটি গাড়ির গতিরোধ করে ভাঙচুরসহ পেট্রোল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয় এবং জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টির লক্ষে মহাসড়কে বেশ কয়েকটি ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায়।

হামলা ও নাশকতার পর জড়িতরা রাজধানীর গুলশান ও পার্শ্ববর্তী বিভিন্ন পাঁচ তারকা হোটেল ও নামীদামী হোটেলে নিরাপদে আত্মগোপনের জন্য অবস্থান করে। এ সকল নামীদামী হোটেলে অবস্থান করে তারা বিভিন্ন সময় রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে নাশকতা ও সহিংসতার পরিকল্পনা করছিল এবং বিভিন্ন সহিংসতা ও নাশকতায় সরাসরি অংশগ্রহণ করছিল। রাজধানী গুলশান এলাকার স্বনামধন্য পাঁচ তারকা হোটেলে অবস্থান করে গ্রেপ্তারকৃতরা গুলশান এলাকায় নাশকতা ও সহিংসতার পরিকল্পনা করছিল বলে জানা যায়।


মন্তব্য


সর্বশেষ সংবাদ