তফসিল ঘোষণায় বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রতিক্রিয়া

তফসিল
  © সংগৃৃহীত

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। বুধবার (১৫ নভেম্বর) সন্ধ্যা ৭টায় জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল। সেখানে তিনি দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণায় আগামী বছরের ৭ জানুয়ারি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা জানান। ভাষণে সিইসি সব রাজনৈতিক দলকে নির্বাচনে অংশগ্রহণের আহ্বান জানান। এ সময় তিনি সংবিধান ও আইনের আলোকে অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠানে দৃঢ় প্রতিজ্ঞা ব্যক্ত করেন।

এদিকে সিইসির তফসিল ঘোষণায় প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল।

জাতীয় নির্বাচনের তফসিলকে স্বাগত জানিয়েছে আওয়ামী লীগ ও তাদের জোট শরীক জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল। তবে, তফসিল প্রত্যাখ্যান করেছে বিএনপি ও সমমনা দলগুলো।

আরও পড়ুন:- তফসিল ঘোষণার পর রাজধানীতে ৫ ককটেল বিষ্ফোরণ

জাতীয় সংসদের প্রধান বিরোধী দল জাতীয় পার্টি বলেছে, নির্বাচন কমিশন নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করতে বাধ্য। তবে রাজনৈতিক অচলাবস্থা নিরসনে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সংলাপ হবে বলে আশা প্রকাশ করেন তারা।

নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার বিষয়ে দ্য ডেইলি স্টার প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজী জাফর উল্লাহ বলেন, 'এটা ভালো।'

তিনি বলেন, 'আগামীকাল থেকে আমাদের নির্বাচনী কার্যক্রম শুরু হওয়ায় আমরা এখন ব্যস্ত থাকব।'

তফসিল ঘোষণার পর রাজধানীসহ সারা দেশে দলীয় প্রতীক 'নৌকা'র স্লোগান দিয়ে আনন্দ মিছিল করেছে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা।

জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল

নির্বাচনের তফসিলকে স্বাগত জানিয়ে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল বলেছে, তফসিল ঘোষণার মধ্য দিয়ে নির্বাচন নিয়ে অনিশ্চয়তা দূর হয়েছে।

আরও পড়ুন:- নির্বাচনের মনোনয়ন জমা ৩০ নভেম্বর, প্রতীক বরাদ্দ ১৮ ডিসেম্বর

জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু বলেন, 'সংবিধানের ধারাবাহিকতা বজায় রাখার জন্য এটি একটি শক্তিশালী উদ্যোগ।'

বিএনপি

নির্বাচনের তফসিল প্রত্যাখ্যান করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আবদুল মঈন খান বলেন, 'একতরফাভাবে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা বাকশালের কথাই মনে করিয়ে দেয়।'

মঈন খান বলেন, 'তারা হয়তো এভাবে শক্তি প্রয়োগ করে তাদের স্বৈরাচারী শাসন চালিয়ে যেতে পারবে, কিন্তু কখনই বাংলাদেশের গণতন্ত্রপ্রেমী মানুষের ভোটাধিকার হরণ করে তাদের মন জয় করতে পারবে না।'

গণফোরাম

গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান বলেন, 'সরকারের ইচ্ছায় নির্বাচন কমিশন তফসিল ঘোষণা করেছে।'

'বিরোধী দলগুলো চায় একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজনের জন্য শান্তিপূর্ণ পরিবেশ। তবে এ ধরনের পরিবেশ সৃষ্টি না করার দায় নির্বাচন কমিশন এড়াতে পারে না,' যোগ করেন তিনি।

আরও পড়ুন:- দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ৭ জানুয়ারি

তিনি বলেন, 'একতরফা নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার সিদ্ধান্ত রয়েছে আমাদের। শনিবার আমরা প্রেসিডিয়াম সদস্যদের নিয়ে বৈঠক করব। এরপর আমরা এই নির্বাচনের তফসিল নিয়ে আনুষ্ঠানিক মন্তব্য করব।'

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ

নির্বাচনের তফসিল প্রত্যাখ্যান করে আগামীকাল সারা দেশে নতুন করে প্রতিবাদ কর্মসূচির ঘোষণা দিয়েছে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ।

জাতীয় পার্টি

সংসদে প্রধান বিরোধী দল জাতীয় পার্টির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু বলেছে, 'নির্বাচন কমিশন নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার মাধ্যমে তাদের বাধ্যতামূলক দায়িত্ব পালন করেছে। তাদের কাছে আর কোনো বিকল্প ছিল না।'

চুন্নু অবশ্য বলেন, 'নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা হয়ে গেলেও নির্বাচনের জন্য সুষ্ঠু পরিবেশ সৃষ্টির জন্য সংলাপের উদ্যোগ নিতে পারে সরকার।'

প্রধান নির্বাচন কমিশনার তফসিল ঘোষণার কয়েক ঘণ্টা আগে এক ভিডিও বার্তায় চুন্নু বলেন, 'নির্বাচনের তফসিল পরিবর্তনের এখতিয়ার নির্বাচন কমিশনের আছে এবং অতীতেও এটা হয়েছে।'


মন্তব্য