১৫ মার্চ ২০২৪, ১৯:৩৭

রমজানে মেট্রোরেলে দৈনিক চড়ছেন প্রায় ৩ লাখ যাত্রী!

  © ফাইল ছবি

স্বল্প সময়ে গন্তব্যে পৌঁছাতে রাজধানীবাসীর কাছে স্বস্তির নাম মেট্রোরেল। প্রতিদিন লাখো মানুষ যাতায়াত করছেন। এদিকে রমজানের শুরুতে মেট্রোরেলে যাত্রীর চাপ বেড়েছে বহুগুণ। উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত দৈনিক মেট্রোরেলে চড়ছেন ২ লাখ ৭৫ হাজার (পৌনে ৩ লাখ) যাত্রী।

রমজানের প্রথম দিন থেকেই ইফতারের আগে মেট্রোরেলের প্রতিটি স্টেশনে যাত্রীদের ব্যাপক ভিড় লক্ষ্য করা যাচ্ছে। শত শত মানুষকে স্টেশনে ট্রেনের অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়। ঘরমুখো যাত্রীরা ইফতার করতে অপেক্ষায় থাকেন ট্রেনের।

বুধবার (১৩ মার্চ) রাজধানীর কারওয়ানবাজারের স্টেশনজুড়ে দেখা যায় মানুষের ঢল। ঠেলাঠেলি করেও উঠতে পারেন না অনেকে। এমনই এক যাত্রী আদনান মুকিত। তিনি মিরপুর বড়বাগের বাসিন্দা। অফিস শেষ করে কারওয়ানবাজার থেকে যাবেন মিরপুর-১০ নম্বরে। আধা ঘণ্টা ধরে দাঁড়িয়ে থেকেও মেট্রোতে উঠতে পারেননি।

আদনান মুকিত বলেন, 'রাস্তায় প্রচন্ড জ্যাম দেখে মেট্রোতে যাওয়ার চিন্তা করেছি। কিন্তু আধা ঘণ্টা ধরে দাঁড়িয়ে থেকেও উঠতে পারছি না। ভয়ংকর ভিড়। গতকালও একই অবস্থা ছিল। আগের তুলনায় রমজান উপলক্ষে ইফতারের আগে যাত্রীদের চাপ বেড়েছে।'
 
রাস্তায় প্রচণ্ড জ্যাম দেখে ইফতারের আগে ঘরমুখো মানুষরা ভিড় জমাচ্ছেন মেট্রোতে। ভিড় হলেও তাড়াতাড়ি বাসায় যাওয়া যায় বলে অনেকেই অপেক্ষা করেন ট্রেনের।

কথা হয় আরেক যাত্রী সজীব শান্তর সঙ্গে। তিনিও অভিযোগ করে বলেন, 'মেট্রোতে এতো মানুষ হলে রাস্তায় কেনো এতো দীর্ঘ জ্যাম? রাস্তা তো খালি থাকার কথা। তাহলে কিছু মানুষ হয়তো তখন রাস্তা দিয়ে যেতে পারতো। রাস্তায় জ্যাম দেখেই আমরা মেট্রোতে যাচ্ছি। তবে এইখানে ভিড় হলেও অনেক আগে বাসায় যাওয়া যাচ্ছে। তাই অপেক্ষা করছি ট্রেনের।'

 (ডিএমটিসিএল) উপ-প্রকল্প পরিচালক নাজমুল ইসলাম ভূঁইয়ার সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘এখন মেট্রোরেলে প্রতিদিন ২ লাখ ৭৫ হাজার যাত্রী চলাচল করছে। রমজানের দুই দিনে বেড়েছে প্রায় ৩০ থেকে ৩৫ হাজার যাত্রী। এতে করে ইফতারের সময়টাতে যাত্রীদের চাপ বেশি দেখা যায়।’

নাজমুল ইসলাম ভূঁইয়া বলেন, ‘এদিকে রমজান উপলক্ষে বেশিরভাগ অফিস আদালত বিকেলের মধ্যে ছুটি হয়ে যাওয়ায় এ সময় মেট্রো স্টেশনে যাত্রীদের ব্যাপক চাপ দেখা যায়। আমরা চেষ্টা করছি সব যাত্রী ইফতারের আগে বাসায় যেন যেতে পারে সে ব্যবস্থা করতে। এজন্য নির্ধারিত সময়ের বাহিরেও যাত্রী চাপ থাকলে সর্বোচ্চ সংখ্যক যাত্রী নিয়ে স্টেশন ত্যাগ করার চেষ্টা করা হয়।’

এদিকে (১২ মার্চ) রোববার বিকেলে রমজান উপলক্ষে মেট্রোরেলের সময়সূচি ও অন্যান্য বিষয় নিয়ে রাজধানীর ইস্কাটনে ডিএমটিসিএলের সভা কক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সংস্থাটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক এমএএন ছিদ্দিক জানান, ১৬ রমজান থেকে ঈদুল ফিতরের আগের দিন পর্যন্ত মেট্রোরেল চলাচলের সময়সীমা এক ঘণ্টা বাড়বে। সেই সময় আরও ১০টি মেট্রো ট্রেন চলাচল করবে। এতে সেই সময় দিনে মেট্রো ট্রেন চলাচলের সংখ্যা হবে ১৯৪ বার। যাতে যাত্রী চলাচল করতে পারবেন দিনে ৪ লাখ ৪৭ হাজার ৭৫২ জন।

এমএএন ছিদ্দিক জানান, রমজান মাসজুড়ে মেট্রোরেলে যাতায়তকারীদের কিছু বিশেষ নিয়ম মানতে হবে। প্রথম ১৫ দিন পর্যন্ত বর্তমান নিয়মেই চলবে মেট্রোরেলে, তবে ১৫ রোজা থেকে পরিবর্তন আসবে সময়ে। উভয় দিক থেকেই এক ঘণ্টা করে বাড়ানো হবে সময়। মতিঝিল থেকে সবশেষ ট্রেন রাত ৯টা ৪০ মিনিটে এবং উত্তরা থেকে সবশেষ ট্রেন রাত ৯টায় ছাড়বে। তবে শুক্রবার যথারীতি সাপ্তাহিক বন্ধ থাকবে।