ছাত্রলীগের শতাধিক নেতাকর্মীর পদত্যাগ

কোটা
  © সংগৃহীত

কোটাবিরোধীদের ওপর হামলার ঘটনার প্রতিবাদে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের বিভিন্ন ইউনিটের শতাধিক নেতাকর্মীর পদত্যাগের খবর পাওয়া গেছে।

রবিবার (১৪ জুলাই) রাত থেকে এ পর্যন্ত ফেসবুক স্ট্যাটাসে অনেকেই পদত্যাগের খবর জানাচ্ছেন।

পদত্যাগকারীদের মধ্যে রয়েছেন, সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদ শাখা ছাত্রলীগের সহসভাপতি নুরুল ইসলাম হৃদয়, একই অনুষদের বিষয়ক উপ সম্পাদক জেবা সায়ীমা, সার্জেন্ট জহরুল হক হল ছাত্রলীগের সহ সভাপতি ওয়াসিক, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল ছাত্রলীগের সহ সভাপতি হাসিবুল হাসান হাসিব, শামসুন নাহার হল ছাত্রলীগের উপ-পাঠাগার সম্পাদক ইসরাত জাহান সুমনা, বিজয় একাত্তর হল শাখার গ্রন্থনা ও প্রকাশনা উপসম্পাদক শাহ সাকিব সাদমান প্রান্ত, বাংলাদেশ কুয়েত মৈত্রী হলের অর্থ সম্পাদক জুয়েনা আলম মুন, একই হলের আইন সম্পাদক সিরাজাম মনিরা তিশা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদ শাখার গণযোগাযোগ ও উন্নয়ন সম্পাদক মাছুম শাহরিয়ার, শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউট শাখার মুক্তিযুদ্ধ ও গবেষণাবিষয়ক উপসম্পাদক রাতুল আহামেদ ওরফে শ্রাবণ এবং আইন অনুষদ শাখার গ্রন্থনা ও প্রকাশনা সম্পাদক আশিকুর রহমান ওরফে জিম।

এ নিয়ে নিজ নিজ ফেসবুক আইডিতে পোস্ট দিয়েছেন ছাত্রলীগের সদ্য সাবেক নেতাকর্মীরা। মো. নুরুল ইসলাম হৃদয় লিখেছেন, আমি সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদ শাখা ছাত্রলীগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্বজ্ঞানে অব্যাহতি নিচ্ছি। যেই সংগঠনের নামে আমার বোনের মাথা ফাটিয়ে রক্তাক্ত করে; বোনের গায়ে হাত দেয়, আমার ভাইকে রডের বাড়ি মেরে মেরে আধমরা করে ফেলে দেয় রাস্তায়, তারাই নাকি আমার ভাই-বন্ধু! আমি বঙ্গবন্ধুর আদর্শের রাজনীতি করার অঙ্গীকার করেছিলাম। এটা কখনো বঙ্গবন্ধুর আদর্শ হতে পারে না। আমি লজ্জিত।

জুয়েনা আলম মুন লিখেছেন, ছাত্রলীগকে ন্যায়ের কান্ডারি ভেবে ছাত্রলীগ করতাম। কিন্তু এখন এই সংগঠনের সাথে নিজের সম্পৃক্ততা ছিলো এটাও মনে করলে আমার রক্তাক্ত বন্ধুবান্ধবী, সিনিয়র, জুনিয়রদের চেহারা মনে পড়বে। তাই স্বেচ্ছায়, সজ্ঞানে পদত্যাগ করছি।

ওয়াসিক বলেন, ছাত্রলীগের সকল কর্মকাণ্ড থেকে নিজেকে অব্যহতি ঘোষণা করলাম। তারা আমাদের ব্যবহার করে আমাদের বাবা মায়ের পেটে লাথি মারছে এখন। গত তিন দিন আন্দোলনে থাকায় অনেক হুমকি পেয়েছি। সুতরাং আজকে বিদায় দিলাম কলুষিত এই সংগঠন কে। রাজপথে যৌক্তিক বিষয়ে জীবন দিতে প্রস্তুত আছি।

হাসিবুল হাসান হাসিব বলেন, ছাত্রলীগের সাথে আমার পূর্বের সকল সম্পর্ক ত্যাগ করলাম, আমার ছোটভাই বন্ধুদের অনেককে নির্মমভাবে পেটানো হইছে। ঘৃণা হচ্ছে ছাত্রলীগের একজন কর্মী হিসাবে এতদিন কাজ করায়। বিদায় বাংলাদেশ ছাত্রলীগ।

শাহ সাকিব সাদমান প্রান্ত বলেন, আজকের পর থেকে শুরু করে ভবিষ্যতে বাকী জীবনে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সঙ্গে আমার আর কোনো সম্পর্ক নাই। পুলিশ ভেরিফিকেশন, তদবির, কিংবা সরকারের পক্ষ থেকে অন্য যেকোনো ধরণের অসহযোগিতা ও সকল ধরণের কনসিকোয়েন্স মাথায় রেখে, কারো প্ররোচনায় না, বরং বিবেকের তাড়নায়, ও সজ্ঞানে আমি বিজয় একাত্তর হলের ছাত্রলীগের কার্যনির্বাহী কমিটি থেকে পদত্যাগ করলাম।