‘ছাত্রদল কর্মী’ শামীমকে দাফনের পর পাওয়া গেলো জীবিত 

বাগেরহাটে
  © সংগৃহীত

বাগেরহাটের শরণখোলায় দাফন করা হয় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ঢাকায় নিহত শামীম নামের একজনের মরদেহ। নিজের সন্তান ভেবে ঢাকা থেকে মরদেহ নিয়ে যান শামীমের বাবা।

এলাকায় রটে যায় শামীম ছিলেন ছাত্রদলের নেতা। হাজার হাজার মানুষ তার জানাজা ও দাফনে শামিল হন। পরিবারে পড়ে যায় শোকের মাতম। 

কিন্তু দাফনের পরই শামীমের জীবিত থাকার সন্ধান মেলে। তিনি ঢাকার বিক্রমপুরে আছেন বলে একটি কারখানায় কাজ করছেন। শোক সরে এবার বিস্ময় দেখা দেয় পরিবারের সদস্যদের মধ্যে। ব্যাপক কৌতূহলের সৃষ্টি হয় পুরো এলাকাজুড়ে।

এ অবস্থার মধ্যে বৃহস্পতিবার অজ্ঞাত ওই তরুণের মরদেহ কবর থেকে তুলে আবার ঢাকার স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ফেরত পাঠানো হয়েছে।

শামীমের বাবা রুহুল আমীন হাওলাদার বলেন, তিনি হাসপাতালের মর্গ থেকে যে মরদেহটি িনয়েছিলেন তার নামও শামীম। দুর্ভাগ্যবশত, তিনি সেই লাশটি গ্রহণ করেছিলেন।

'প্রকৃতপক্ষে আমার ছেলে শামীম জীবিত আছেন। আসলে মৃত ও জীবিত দুজনের নামই শামীম। তাই এমন বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয়েছে,' বলেন তিনি। 

শরণখোলা থানার ওসি মো. কামরুজ্জামান বলেন, ঢাকার সলিমুল্লাহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল থেকে ভুলে গ্রহণ করা মরদেহটি পুনরায় সেখানে পাঠানো হয়েছে। 

স্থানীয় ও শামীমের পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন, শরণখোলা উপজেলার রাজাপুর গ্রামের বাসিন্দা রুহুল আমীন হাওলাদারের ছেলে শামীম। বেশ কিছুদিন আগে বাড়ি থেকে পালিয়ে যান তিনি। 

এরপর থেকে তার আর কোনো খোঁজখবর নাই। কয়েকদিন আগে রুহুল আমীনকে জানানো হয় যে, ঢাকার ছাত্র আন্দোলনে তার ছেলে নিহত হয়েছেন এবং মরদেহ আছে স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে। 

শামীমের বাবা দ্রুত ঢাকায় চলে যান। গত মঙ্গলবার ছবি ও ঠিকানা দেখিয়ে হাসপাতাল থেকে অজ্ঞাত ওই মরদেহ বাড়িতে নিয়ে আসেন।

এরি মধ্যে এলাকায় প্রচার হয়ে যায়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত শামীম ছাত্রদল কর্মী ছিলেন। এর ফলে তার জানাজায় রাজনৈতিক নেতাকর্মীসহ মানুষের ঢল নামে। কয়েক হাজার মানুষ উপস্থিত হন।

কিন্তু, দাফন শেষ করার পর ঢাকা থেকে শরণখোলার বাসিন্দা সাইফুল ইসলাম নামে এক ব্যবসায়ী শামীমের বাবাকে ফোন করেন। তিনি জানান, তার ছেলে মারা যাননি। সে ঢাকার বিক্রমপুরে তাদের ফার্নিচারের দোকানে কর্মরত আছেন।

এরপর ভিডিও কলে শামীমকে তার মা-বাবার সাথে কথা বলিয়ে দেওয়া হয়। এরপরই নিহতের দাফন নিয়ে এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে। 

শামীমের বাবা পুলিশের শরণাপন্ন হন। দাফন করা মরদেহটি কবর থেকে তুলে অ্যাম্বুলেন্সে করে বৃহস্পতিবার সকালে ঢাকার সলিমুল্লাহ মেডিক্যালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।