ভারতে পালানোর সময় ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদকের রহস্যজনক মৃত্যু
- মোমেন্টস ডেস্ক
- প্রকাশ: ২৪ আগস্ট ২০২৪, ১১:০০ PM , আপডেট: ২৪ আগস্ট ২০২৪, ১১:০০ PM
বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও পিরোজপুর জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ইসহাক আলী খান পান্না মারা গেছেন।
পালিয়ে ভারতে প্রবেশের পর শুক্রবার (২৩ আগস্ট) মধ্যরাতে মেঘালয়ের শিলং পাহাড়ে ওঠার সময় হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে তার মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গেছে।
ভারতের কলকাতায় অবস্থান করা পান্নার এক ঘনিষ্ঠজন শনিবার (২৪ আগস্ট) গণমাধ্যমকে তার মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই ব্যক্তি জানান, আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে বেশ কিছুদিন আত্মগোপনে থেকে ভারতে পালাতে চেয়েছিলেন ইসহাক আলী খান পান্না। সীমান্ত পার হয়ে শুক্রবার রাত ১২টায় মেঘালয়ের রাজধানী শিলং-এর একটি পাহাড়ে ওঠেন তিনি। পাহাড় পার হয়ে ওপারে যাওয়ার চেষ্টার সময়ই হৃদরোগে আক্রান্ত হন তিনি। এতেই তার মৃত্যু ঘটে।
তবে পান্নার মৃত্যু কীভাবে ঘটেছে- তা নিয়ে ভিন্ন তথ্যও মিলেছে। কেউ কেউ বলছেন, পাহাড়ে ওঠার সময় পা পিছলে পড়ে তিনি মারা যান।
আরেকটি তথ্য বলছে, ইসহাক আলী খান পান্না ভারতে পালানোর সময় দেশটির সীমান্ত রক্ষী বাহিনী- বিএসএফের গুলিতে নিহত হয়েছেন।
পান্নার বড় ভাইয়ের শ্যালক জসিম উদ্দিন খানের সঙ্গেও ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল তার। জসিম গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, তিনদিন আগে পান্নার সঙ্গে তার ফোনে কথা হয়েছে। ২৫ জুলাই তিনি পিরোজপুর শহরের বাড়িতে এসে দু’দিন পর ফিরে যান।
জসিমের দেওয়া তথ্যমতে, বিভিন্ন মাধ্যমে তারা জানতে পেরেছেন, সিলেটের তামাবিল সীমান্ত দিয়ে ভারতে প্রবেশ করেছিলেন পান্না। ওপারেই তার মৃত্যু হয়। সেটা গুলিতে নাকি স্ট্রোকজনিত কারণে তা নিশ্চিত হতে পারেননি তারা। সীমান্তের ভারত প্রান্তের একটি থানায় তার মরদেহ রয়েছে বলে জেনেছেন। একই তথ্য জানান, পান্নার ভাগনে ও কাউখালীর চিড়াপাড় সাতুরিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান লায়েকুজ্জমান মিন্টু।
ভিন্ন একটি সূত্র বলছে, ভারতে পালানোর সময় পান্নার সঙ্গে সদ্য ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিনও ছিলেন। তবে বিষয়টি নিশ্চিত হতে আমিনের মোবাইল ও হোয়াটসঅ্যাপ নম্বরে কল দিয়েও বন্ধ পাওয়া গেছে। আরেকটি সূত্র বলছে, পান্নার সঙ্গে ঝালকাঠি ছাত্রলীগের একজন নেতা ছিলেন।
এদিকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে একটি ছবি অনেকেই শেয়ার দিয়ে সেটি ইসহাক আলী পান্নার বলে দাবি করছেন। ওই ছবিতে পান্নাকে কালো টি-শার্ট ও কালো প্যান্ট পরিহিত অবস্থায় মাটিতে পড়ে থাকতে দেখা যায়। তার পা থেকে রক্ত প্রবাহিত হয়েছে। পিঠের কাছে রক্তের ছোপও দেখা গেছে।
তবে পুলিশের তরফে এ বিষয়ে সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। পান্নার মরদেহ দেশে ফিরিয়ে আনার বিষয়েও কারও বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) মোহাম্মদ নুরুল হুদা জানান, কেউ বৈধ বা অবৈধ যেভাবেই ভারতে যাক, মরদেহ ফিরিয়ে আনার ক্ষেত্রে কোনো সমস্যা নেই। শুধু বিষয়টি যেকোনো পক্ষ থেকে সেখানকার বাংলাদেশ দূতাবাসে জানাতে হবে। এরপর সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা নিশ্চিত হবেন, মৃত ব্যক্তি বাংলাদেশের নাগরিক কি-না। পরে দূতাবাসের তহবিল থেকে বা বা স্বজনের খরচে মরদেহ পাঠানোর ব্যবস্থা করে দূতাবাস।