দুইবারের বেশি প্রধানমন্ত্রী নয়: অন্তর্বর্তী সরকারকে মামুনুল হকের প্রস্তাব
- মোমেন্টস ডেস্ক
- প্রকাশ: ৩১ আগস্ট ২০২৪, ০৭:১২ PM , আপডেট: ৩১ আগস্ট ২০২৪, ০৭:১২ PM
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার প্রায় চার সপ্তাহ পর রাজনৈতিক দল ও জোটগুলোর সঙ্গে মতবিনিময়ে বসেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। মতবিনিময়ের প্রথমেই সাতটি ইসলামী দলের নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় করেছেন তিনি।
আজ শনিবার (৩১ আগস্ট) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় বিকেল ৩টা থেকে চলছে মতবিনিময়। সিরিজ মতবিনিময়ের মধ্যে ছিল বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসও। দলটির আমীর মাওলানা ইউসুফ আশরাফের নেতৃত্বে প্রতিনিধি দলে ছিলেন মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হক ও যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা জালাল উদ্দিন।
মতবিনিময় শেষে গণমাধ্যমে মাওলানা মামুনুল হক বলেন, প্রধান উপদেষ্টাকে তাদের দলের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে–একজন দুইবারের বেশি প্রধানমন্ত্রী থাকতে পারবেন না।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকার প্রধান ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে একজন দুইবারের বেশি প্রধানমন্ত্রী নয় এমন প্রস্তাবনাসহ ৬ দফা প্রস্তাবনা দিয়েছে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস।
মামুনুল হক বলেন, ৫ মে ২০১৩ সালে মতিঝিলের শাপলা চত্বরে নিহতসহ সম্প্রতি ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের ঘটনায় হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার দাবি করেছি। ৫ মে ও এর পরবর্তী সময়ে হেফাজতে ইসলাম সমমনা দলগুলোর নেতাদের বিরুদ্ধে দেওয়া মামলাগুলো একমাসের মধ্যে নিষ্পত্তি করার দাবি জানিয়েছি।
মামুনুল হক বলেন, আমরা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে সহযোগিতার প্রত্যয় জানিয়েছি। নির্বাচন ও প্রশাসনসহ প্রত্যেকটা খাতের প্রয়োজনীয় সংস্কার করে যৌক্তিক সময়ের মধ্যে নির্বাচন করার দাবি জানিয়েছি।
মতবিনিময় সভায় লিখিত আকারে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের পক্ষ থেকে যে দাবিগুলো দলটির মহাসচিব মুহাম্মদ মামুনুল হক প্রধান উপদেষ্টা বরাবর লিখিতভাবে প্রস্তাব করেছেন তা হলো—
১. প্রয়োজনীয় সংস্কার করে নির্বাচনের ব্যবস্থা করা
ক. নির্বাচন সংক্রান্ত সংস্কার: জাতীয় নির্বাচনে ভোটাধিকার প্রয়োগকারীদের সম্ভাব্য সর্বোচ্চ প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করা। সে জন্য আসনভিত্তিক বিজয়ী সংসদ সদস্যদের বাইরে নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী দলসমূহের প্রাপ্ত ভোটের ভিত্তিতে সংসদে প্রতিনিধিত্বের ব্যবস্থা করা।
খ. নির্বাচন বিধি সংক্রান্ত সংস্কার : প্রার্থীদের নিজস্ব প্রচারণার পরিবর্তে নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে প্রতিদ্বন্দি প্রার্থীদের প্রচার ও প্রকাশনার ব্যবস্থা করা। যোগ্য সৎ ও নিরপেক্ষ ব্যক্তিদের সমন্বয়ে নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন করা।
২. সাংবিধানিক সংস্কার
ক. বর্তমান সংবিধানে প্রধানমন্ত্রীকে প্রদত্ত একচ্ছত্র ক্ষমতা স্বৈরতন্ত্রের জন্ম দেয়। তাই এ ক্ষমতাকে বিকেন্দ্রীকরণের মাধ্যমে ভারসাম্য সৃষ্টি করা।
খ. দুই মেয়াদের বেশি একই ব্যক্তি প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালনের ব্যবস্থা বন্ধ করা।
গ. প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর দলীয় পদ থেকে পদত্যাগের বিধান করা।
ঘ. সংসদ সদস্যদের দলীয় সিদ্ধান্তের বাহিরে ভোট দেওয়ার সুযোগ রাখা।
৩. বিচার ব্যবস্থা: বিচার বিভাগকে নির্বাহী বিভাগ থেকে সম্পূর্ণ স্বাধীন করা। বিচার বিভাগে সরকারের হস্তক্ষেপ মুক্ত রাখার স্বার্থে বিচারপতি নিয়োগ ও বিয়োগের জন্য জুডিশিয়াল কাউন্সিল গঠন করা।
৪. শিক্ষা ব্যবস্থা: শিক্ষা ব্যবস্থা থেকে ইসলামের সাথে সাংঘর্ষিক বিতর্কিত বিষয়সমূহ বাদ দিয়ে ধর্মীয় ও নৈতিকতা শিক্ষা সংযোজন করা।
৫. পুলিশ ও প্রশাসন: পুলিশ ও প্রশাসনকে সরকারের নিয়ন্ত্রণমুক্ত রাখা। রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে তাদেরকে ব্যবহারের পথ বন্ধ করা।
৬. কুরআন সুন্নাহ বিরোধী আইন বা নীতি প্রণয়ন না করা।