চোর সন্দেহে আটকে গণপিটুনি, যুবকের মৃত্যু

রাজবাড়ী
  © ফাইল ফটো

রাজবাড়ীর কালুখালী উপজেলার রতনদিয়া ইউনিয়ের হরিণবাড়িয়া গ্রামে চোর সন্দেহে গণপিটুনির শিকার হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। শনিবার (২১ সেপ্টেম্বর) দুপুরে কালুখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ওই যুবকের মৃত্যু হয়।

নিহত যুবকের নাম নাজমুল হোসেন মোল্লা (৩২)।  নাজমুল ফরিদপুর জেলার মধুখালী উপজেলার গাড়াখোলা গ্রামের আহম্মেদ মোল্লার ছেলে। পুলিশ জানিয়েছে, নিহত নাজমুল পেশাদার চোর। তার বিরুদ্ধে ১১টি চুরির মামলা রয়েছে। 

পুলিশ ও স্থানীয়দের কথা বলে জানা যায়, শনিবার ভোরের দিকে হরিণবাড়িয়া গ্রামের রাস্তা দিয়ে তিনজন লোক যাচ্ছিল। তাদের মধ্যে একজনের মাথায় বিদ্যুতের ট্রান্সমিটার ছিল। এলাকাবাসী তিনজনকে ধাওয়া দেয়। এ সময় দুইজন পালিয়ে গেলেও নাজমুল এলাকাবাসীর কাছে ধরা পড়েন। পরে চোর সন্দেহে নাজমুলকে আটক করে গণপিটুনি দেয় এলাকাবাসী। গণপিটুনিতে গুরুত্বর অসুস্থ হয়ে পড়লে সকাল সাড়ে আটটার দিকে আহতাবস্থায় তাকে কালুখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠানো হয়। 

কালুখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. ইসরাত জাহান উম্মন জানান, সকাল পৌনে ৯টার দিকে হাসপাতালের সিঁড়িতে কে বা কারা আহতাবস্থায় এক যুবককে ফেলে রেখে যায়। তাকে সেখান থেকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তিনি নিজের নাম ঠিকানা শুধু বলতে পেরেছিল। দুপুর দেড়টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।

এ বিষয়ে কালুখালী থানার ওসি মোহাম্মদ জাহেদুর রহমান জানান, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। স্থানীয়ভাবে জানা গেছে নাজমুলসহ তিন ব্যক্তি পল্লী বিদ্যুতের ট্রান্সফরমার চুরি করে ফিরছিলেন। ওই সময় এলাকাবাসী টের পেয়ে তাদের ধাওয়া করে। দুই ব্যক্তি পালিয়ে গেলেও ধরা পড়েন নাজমুল। উত্তেজিত জনতা তাকে গণপিটুনি দেয়। শনিবার দুপুরে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। এ ব্যাপারে কালুখালী থানায় মামলা হয়েছে। নিহতের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য রাজবাড়ী সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে। নাজমুলের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় ১১টি চুরির মামলা রয়েছে বলেও জানান তিনি।

উল্লেখ্য, গত বুধবার রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ফজলুল হক মুসলিম হলে চোর সন্দেহে গণপিটুনির শিকার হন মানসিক ভারসাম্যহীন এক ব্যক্তি। পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়। 

পরে জানা যায়, নিহত ব্যক্তির নাম তোফাজ্জল। তার বাড়ি বরিশালের বরগুনা জেলার পাথরঘাটা উপজেলার কাঁঠাল তলি ইউনিয়নে।

এদিকে এ হত্যার ঘটনায় অভিযুক্ত ৮ শিক্ষার্থীকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। এ ছাড়া পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থতার দায়ে ফজলুল হক মুসলিম হলে নতুন প্রভোস্ট নিয়োগ দেয়া হয়েছে।