পূজামণ্ডপে গীতাপাঠের ব্যাখ্যা দিলেন সেই জামায়াত নেতা

পূজা
  © সংগৃৃহীত

বিভিন্ন কারণে এবারে শারদীয় দুর্গাপূজা বেশ আলোচনায়। এর মধ্যে একটি হলো মুসলিমদের পূজা উৎসবে গিয়ে ইসলামি গান গাওয়া। অন্যটি জামায়াত নেতার গীতাপাঠ।

শারদীয় দুর্গোৎসবের মহাসপ্তমীর রাতে একটি পূজামণ্ডপে আয়োজিত অনুষ্ঠানে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের পবিত্র গ্রন্থ গীতা থেকে শ্লোক পাঠ করে বেশ আলোচনা-সমালোচনার জন্ম দেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নেতা অধ্যাপক মতিয়ার রহমান। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ওই ঘটনার ৫ মিনিটের একটি ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর এবার তার ব্যাখ্যা দিয়েছেন জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় মজলিসের এ শুরা সদস্য।

শনিবার (১২ অক্টোবর) এক ভিডিও বার্তায় মন্দিরে গীতা পাঠের ব্যাখ্যা তুলে ধরেন তিনি।

১ মিনিট ৪৪ সেকেন্ডের ভিডিও বার্তায় অধ্যাপক মতিয়ার রহমান বলেন, প্রিয় এলাকাবাসী, আমার সালাম ও শুভেচ্ছা নেবেন। আমি মো. মতিয়ার রহমান, ঝিনাইদহ-৩ আসনের জামায়াত মনোনীত এমপি পদপ্রার্থী। আমি গত বৃহস্পতিবার (১০ অক্টোবর) সনাতন ধর্মাবলম্বী সম্প্রদায় যাতে করে নিরাপত্তার সঙ্গে তাদের ধর্মীয় পূজা উৎসব পালন করতে পারে তার জন্য কোটচাঁদপুর পৌরসভা ও এলাঙ্গি ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকার পূজা উদযাপন কমিটির সঙ্গে মতবিনিয়ম করতে যাই। সেখানে মানবসেবা, অমুসলিমদের অধিকার, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ও নির্বিঘ্নে তারা যেন পূজা অনুষ্ঠান পালন করতে পারে এই মর্মে তাদেরকে আশ্বস্ত করি। ইসলাম যে জাতি, ধর্ম, বর্ণ, গোত্র নির্বিশেষে শান্তির ধর্ম এবং গোটা মানবজাতির ধর্মীয় নাগরিক, মানবিক ও গণতান্ত্রিক অধিকার সংরক্ষণ করে, তার স্বপক্ষে বিভিন্ন প্রকারের বক্তব্য প্রদানকালে বেদব্রহ্ম থেকেও কিছু শ্লোক পাঠ করি।

তিনি আরও বলেন, রাজনৈতিক প্রতিহিংসাবশত আমার বক্তব্যের খণ্ডিত অংশ প্রচার করে বিশেষ রাজনৈতিক মহল জনগণকে বিভ্রান্ত করছে। এ বিষয়ে অন্য কিছু ভাববার বা ভুল বোঝাবুঝির কোনো সুযোগ নেই। বিদায়ের সময় সনাতন ধর্মাবলম্বীরা দুই হাত তুলে আমাকে অভিবাদন জানালে আমিও তাদের দুই হাত তুলে অভিবাদন জানাই।

এর আগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল ভিডিওতে দেখা যায়, শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষ্যে মণ্ডপ পরিদর্শন শেষে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের উদ্দেশ্যে বক্তব্যের একপর্যায়ে গীতা থেকে শ্লোক পাঠ করেন অধ্যাপক মতিয়ার রহমান। সে সময় সনাতন ধর্মাবলম্বী নারীরা উলুধ্বনি দেন ও শঙ্খ বাজান। গীতা পাঠ শেষে আগামীতে নির্বাচিত হলে হিন্দু সম্প্রদায়ের উৎসব পালনে সহযোগিতার আশ্বাস দেন জামায়াতের কেন্দ্রীয় এ নেতা।

ওই বক্তব্যের শুরুতে অধ্যাপক মতিয়ার রহমান বলেন, এই কোটচাঁদপুরের আলো-বাতাস, মাটি ও মায়া-মমতাই বেড়ে উঠেছি আমি। ইসলামি আদর্শের একজন ব্যক্তি হলেও আমার ভেতর একজন ভালো সনাতনী হিন্দু ব্রাহ্মণ বাস করেন। আমার ভেতরে বাস করেন একজন ভালো খ্রিষ্টান এবং একজন ভালো মুসলিমও।