আগরতলায় বাংলাদেশ হাইকমিশনে হামলায় কঠোর হুশিয়ারি ঢাবি শিবির সভাপতির

সাদিক কায়েম
  © সংগৃহীত

আগরতলায় বাংলাদেশ উপ-হাইকমিশনে হামলায় কঠোর প্রতিবাদ জানিয়েছেন বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের ঢাকা বিশ্ববিদ্যাল শাখার সভাপতি আবু সাদিক কায়েম। সেইসাথে আন্তর্জাতিক আইনের সহযোগিতায় তদন্তসাপেক্ষে বিচার নিশ্চিত করতে হবে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

সোমবার (২ ডিসেম্বর) ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে এক পোস্টে তিনি এ প্রতিবাদ জানান।

তিনি বলেন, আজ আন্তর্জাতিক নিয়ম ভেঙ্গে ভারতের আগরতলাস্থ বাংলাদেশ উপ-হাই কমিশনে নৃশংস হামলা চালানো হয়েছে। আমরা তার কঠোর প্রতিবাদ জানাই ও আন্তর্জাতিক আইনের সহযোগিতায় তদন্তসাপেক্ষে বিচার নিশ্চিত করতে হবে। ভারতে অবস্থানরত বাংলাদেশের সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, নাগরিকদের নিরাপত্তা নিয়ে আমরা উদ্বিগ্ন ও উৎকণ্ঠায় আছি। তাদের সর্বোচ্চ প্রটোকলের ব্যবস্থা করতে হবে অন্যথায় তার দায় ভারতকে রাষ্ট্রীয়ভাবেই নিতে হবে।

তিনি আরও বলেন,  ‘বাংলাদেশ স্মরণকালের সর্বোচ্চ সাম্প্রদায়িক সম্প্রতির নজির দেখাচ্ছে জুলাই অভ্যুত্থান ও তার পরবর্তী সময় ধরে। বাংলাদেশের নাগরিকরা কোনো মাইনরিটি বা মেজরিটি নয়, বাংলাদেশী।

পৃথিবীর অনেক দেশে বিপ্লব পরবর্তী সময় দাঙ্গা, লুটতরাজ, বিচারবহির্ভূত হ ত্যা, গণহ ত্যা— রেইন অফ টেরর সংঘটিত হয়েছে নির্মমভাবে। কিন্তু বাংলাদেশের শান্তিপ্রিয়, সত্যের প্রতি নির্ভীক মানুষরা সহনশীলতার সর্বোচ্চ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছে।
 
পতিত ফ্যাসিস্ট ও তাদের পরিপূরকরা সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা বাঁধানোর জন্য বারবার মবকে উস্কে দিতে চেয়েছে। কিন্তু এদেশের দূরদর্শী ও সভ্য মানুষরা দক্ষতার সাথে ভেস্তে দিয়েছে— মন্দিরসহ বিভিন্ন ধর্মীয় উপসনালয়গুলো রাত জেগে পাহারা তার নিকট দৃষ্টান্ত।

যে ভারতে সংখ্যালঘুরা নিরাপদ নয়, ধর্মীয়, সামাজিক ও নাগরিক অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে, আক্রমণ ও হ ত্যার স্বীকার হয়— তারাই কি না আমাদের সাম্প্রদায়িক সম্প্রতির বিরুদ্ধে আঙ্গুল তুলছে!

যেখানে আমরা ভ্রাতৃত্ব বন্ধনে অটুট, দেশ পুনর্গঠনে সবাই একযোগে কাজ করছি তখন ভারতে প্রতিনিয়ত আমাদের নিয়ে মিথ্যা, অমূলক, ভিত্তিহীন প্রোপাগান্ডা ছড়িয়ে যাচ্ছে নির্বিচারে। তাদের সাথে যোগ দিয়েছে আমাদের কিছু দেশদ্রোহীরা!’

উল্লেখ্য, বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে গ্রেফতারের প্রতিবাদে আগরতলায় বাংলাদেশ সহকারী হাইকমিশনে হামলা-ভাঙচুর ও জাতীয় পতাকা নামিয়ে আগুন ধরিয়ে দেয়ার ঘটনা ঘটে। সোমবার (২ ডিসেম্বর) এ হামলা হয়।

এদিন হিন্দু সংঘর্ষ সমিতি নামের একটি সংগঠনের সভা ছিল আগরতলার বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনের সামনে। সভা শেষে সংগঠনের ছয়জনের একটি প্রতিনিধি দল হাইকমিশন কার্যালয়ের ভেতরে যায় স্মারকলিপি জমা দিতে।

এ সময় বাইরে থাকা কিছু হিন্দু যুবক হঠাৎ বাংলাদেশ সহকারী হাইকমিশন কার্যালয়ের ভেতরে ঢুকে বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা নামিয়ে ছিড়ে ফেলে। পরে হাইকমিশন কার্যালয়ের কিছু সাইনবোর্ড ভাঙচুর করে ও আগুন লাগিয়ে দেয় তারা।