ভারত আগ্রাসন অব্যাহত রাখলে বাংলা বিহার ও উড়িষ্যার দাবি করবে বাংলাদেশ: রিজভী
- মোমেন্টস ডেস্ক
- প্রকাশ: ০৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৩:২৭ PM , আপডেট: ০৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৩:২৭ PM
![রিজভী](https://bangladeshmoments.com/resources/img/article/202412/Untitled_design_-_2024-12-04T152925.124_-10429.jpg)
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, হিন্দু-মুসলমান লড়াই করে দিল্লির দাসত্ব খান খান করে দেবে। এ সময় তিনি বলেন, অশুভ ইচ্ছার মাধ্যমে ভারত সাম্প্রদায়িক আগ্রাসন অব্যাহত রাখলে বাংলাদেশ বাংলা, বিহার ও উড়িষ্যার দাবি করবে।
বুধবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে ভারতের আগরতলায় বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনে আক্রমণের প্রতিবাদের বাংলাদেশ পূজা উদ্যাপন ফ্রন্ট আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশ ও পদযাত্রায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এই মন্তব্য করেন।
রিজভী বলেন, বিজেপি সরকার গোড়া হিন্দুত্ববাদকে পুঁজি করে ক্ষমতায় এসেছে। এদের আর কোনো পুঁজি নেই। সুতরাং ক্ষমতায় থাকতে হলে হিংসা এবং ঘৃণা ছড়াতে হবে। এছাড়া নরেন্দ্র মোদি বাবুর ক্ষমতায় থাকা অনেক মুশকিল হবে। কারণ ভারতের স্বাধীনতায় তাদের উত্তরসূরিদের কোনো অবদান নেই। এটি আমার নিজের ইতিহাস পাঠ নয়, বিখ্যাত লেখক অন্নদা শংকর রায় তার এক লেখায় একথা বলেছেন।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, সিরাজ উদ দৌলা, মোহনলাল দেশের মুক্তির জন্য, দেশ রক্ষার জন্য একসাথে লড়াই করেছে। ঠিক একইভাবে আমরা হিন্দু মুসলমান একসঙ্গে লড়াই করব। দিল্লির দাসত্বকে খান খান করে দিবো।
বিএনপির এই মুখপাত্র বলেন, আমার কাছে অবাক লাগে, যে ভদ্র মহিলার (কলকাতার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়) প্রতি আমাদের শ্রদ্ধা ছিল। অসাম্প্রদায়িক, সেক্যুলার হিসেবে যে রাজনীতিবিদকে চিনতাম, তাকেও মনে হলো রাজনীতির জন্য মুখে অসাম্প্রদায়িকতার কথা বলছেন। ধর্ম নিরপেক্ষতার কথা বলতেন কিন্তু তার গভীরে ছিল কট্টর হিন্দুত্ববাদ। যেকোনো আদর্শের কট্টরতাবাদ মানবতার পরিপন্থী। যে কোনো ধর্ম সম্প্রদায়ের কট্টরতাবাদ মানবতার বিরুদ্ধে যায়।
পশ্চিমবঙ্গে মুসলিমদের হার ২৫ শতাংশ অথচ সরকারি চাকরিতে সুযোগ পায় মাত্র ১ শতাংশ। তাহলে মমতা তো কখনোই ধর্মনিরপেক্ষ মানবতাবাদী ছিলেন না। আমরা জোর গলায় বলতে পারি শেখ হাসিনা ছাড়া অন্যের ধর্মের প্রতি ঘৃণা, বিদ্বেষ কখনোই ছড়ায়নি। রিজভী বলেন, এই দেশে যারা ইসলামী রাজনীতি করেন তারাও কিন্তু সাম্প্রদায়িক কথা বলেন না। অন্য ধর্মের প্রতি আক্রমণ করে কোনো কথা বলেন না। এটাই আমাদের ঐতিহ্য। আপনারা আগরতলায় সহকারী হাইকমিশনে ঢুকে আমাদের পতাকা টেনে নামিয়ে ছিঁড়েছেন, এটা তো প্রচণ্ড আঘাত। করোনার আঘাতের চেয়ে বড় আঘাত দিয়েছে ভারতের শাসকগোষ্ঠী। এটা আমরা কখনো ভুলে যাবো না।
ভারতের মিডিয়ার কঠোর সমালোচনা করে রুহুল কবির রিজভী বলেন, আপনাদের মিডিয়ায় এক শোভন ভদ্র লোক মিথ্যা অপপ্রচার করে যাচ্ছেন। আমি তাকে ভদ্রলোকই মনে করতাম, দেখতেও সুন্দর কিন্তু মনটা এতো অসুন্দর। গোপালগঞ্জে আগুন লাগিয়ে ৫ জনকে মেরে ফেলেছে ঢালাওভাবে প্রচার করেছেন। গোপালগঞ্জে কাউকে আগুন লাগিয়ে মারা হয়েছে? এত বড় মিথ্যা, অপপ্রচার!
ভারত বলে সেক্যুলার দেশ, ধর্মনিরপেক্ষ দেশ, আজকে তাদের মিডিয়া খেয়ে না খেয়ে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে অপপ্রচার করছে। সুভেন্দু বাবুদের তল্পিবাহক হয়েছে বলেও যোগ করেন রুহুল কবির রিজভী।
তিনি বলেন, শ্বেতপত্রে জানা গেছে ২৮ লক্ষ কোটি টাকা পাচার হয়েছে। এই টাকা কত টাকা পেয়েছেন সুভেন্দু বাবুরা, এটাও আপনারা বলুন। না হলে কেউ কিন্তু বলে দিবে। পৃথিবীর কোন কোন নেতা পেয়েছেন শেখ হাসিনার ২৮ লক্ষ কোটি টাকার ভাগ, এটা কিন্তু বাংলাদেশের মানুষ জেনে গেছে এবং হয়তো একদিন আনুষ্ঠানিকভাবে বলে দিবে।
তিনি আরও বলেন, আমরা আমাদের স্বাধীনতা রক্ষায় অঙ্গীকারবদ্ধ। আমরা ভারতসহ যত বড়, ক্ষুদ্র রাষ্ট্র আছে প্রত্যেকটা দেশের স্বাধীনতার মর্যাদা দেই। কিন্তু ভারতের শাসকগোষ্ঠী যদি মনে করে সম্প্রসারণ চালিয়ে বাংলাদেশ, নেপাল, ভুটান ও অন্যান্য দেশ কবজা করে নিবে, তাহলে কিন্তু আপনারা বোকার স্বর্গে বাস করছেন।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের মানুষের দেশরক্ষার অন্তর্নিহিত শক্তি, প্রাণের উন্মাদনা এটা কখনোই ভারত টের পায়নি৷ আপনাদের যদি অশুভ ইচ্ছা থাকে তাহলে আমরাও বলবো, আমাদের নবাবের এলাকা বাংলা, বিহার ও উড়িষ্যা আমরা দাবি করবো, যদি আপনারা একের পর এক আগ্রাসী ভূমিকা পালন করেন।
আজকে সারা বাংলাদেশের মানুষ জাগরিত উল্লেখ করে রুহুল কবির রিজভী বলেন, হিন্দু-মুসলমান এই মাটির সন্তান। এখানে আমাদের সবার জন্ম। তারা এই দেশকে অন্যের গোলামির কাছে বিক্রি করবে কেন? তিনি বলেন, আমরা এখানে যারা আছি তারাতো সিরাজ উদ দৌলা, মোহনলাল, মীর মদনের উত্তরসূরি। ভারতীয় আগ্রাসনের জন্য আমরা লড়বো।
সংগঠনের সভাপতি অর্পুনা রায় দাসের সভাপতিত্বে, সাধারণ সম্পাদক সমীর কুমার বসুর সঞ্চালনায় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সিনিয়র সাংবাদিক আমিরুল ইসলাম কাগজী, স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরফত আলী সপু, সহ ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক অমলেন্দু দাস অপু, যুবদল নেতা গিয়াস উদ্দীন মামুন, স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা জাহিদুল কবির ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাংগঠনিক সম্পাদক সাইদ খান প্রমুখ।