বালু খেকো সেলিমকে আজীবন বহিষ্কার করলো আওয়ামী লীগ

আওয়ামী লীগ
সেলিম খান  © ফাইল ফটো

চাঁদপুরের বালু খেকো সেলিম খানকে আজীবনের জন্য আওয়ামী লীগ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। শনিবার (৪ জুন) জেলা আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী পরিষদের সভায় সেলিমকে বহিষ্কাররের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবু নঈম পাটোয়ারী দুলাল বহিষ্কারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

এর আগে পদ্মা ও মেঘনা নদী থেকে বালু উত্তোলনকারী এবং চাঁদপুর বিজ্ঞান প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের জমি অধিগ্রহণকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন অপকর্মের জন্ম দিয়ে আলোচনায় আসেন সেলিম খান। যা দলীয় ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করেছে বলে মনে করছে জেলা আওয়ামী লীগ। ইউপি চেয়ারম্যান সেলিম বহিষ্কারের আগে সদর উপজেলার ১০নং লক্ষ্মীপুর মডেল ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন। 

জানা গেছে, চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাংগঠনিক টিমের প্রধান শেখ ফজলুল করিম সেলিমের নির্দেশনায় এবং কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সঙ্গে পরামর্শক্রমে বিভিন্ন অপকর্মের মাধ্যমে দলীয় ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার অপরাধে সেলিম খানকে আওয়ামী লীগের প্রাথমিক সদস্য পদসহ সব পদ থেকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে। এ ছাড়া দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে হাইমচর উপজেলা চেয়ারম্যান নূর হোসেন পাটোয়ারীকে শোকজ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জানান, দলীয় সভায় সাংগঠনিক কর্মকাণ্ড নিয়ে বিভিন্ন সিদ্ধান্ত হয়েছে। এর মধ্যে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সঙ্গে পরামর্শক্রমে ১০নং মডেল লক্ষ্মীপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও ইউপি চেয়ারম্যান সেলিম খানকে দল থেকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

প্রসঙ্গত, চাঁদপুরের নদী অঞ্চলে শত শত ড্রেজার বসিয়ে গত কয়েক বছর ধরে অপরিকল্পিতভাবে বালু উত্তোলনের অভিযোগ রয়েছে ইউপি চেয়ারম্যান সেলিম খানসহ একটি চক্রের বিরুদ্ধে। এমনকি অনুমতি ছাড়াই চেয়ারম্যান বছরের পর বছর বালু বিক্রি করেছেন বলে জানিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন। দীর্ঘদিন বালু ব্যবসার মাধ্যমে বিপুল সম্পদের মালিক হয়েছেন তিনি। অপরিকল্পিত বালু উত্তোলনের কারণে নদীভাঙন প্রতিরোধ করা যাচ্ছে না। সেই সঙ্গে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে ইলিশ সম্পদসহ নদীর জীববৈচিত্র্য। সরকার হারাচ্ছে কোটি কোটি টাকার রাজস্ব। 

এছাড়া চাঁদপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রস্তাবিত ভূমি অধিগ্রহণের জন্য লক্ষ্মীপুর মডেল ইউনিয়নের মেঘনা পাড়ে একটি এলাকা নির্ধারণ করা হয়। পরে ৬২ একর ভূমি অধিগ্রহণ প্রক্রিয়া শুরু করতে গিয়ে দেখা যায়, চেয়ারম্যান সেলিম খান, তার ছেলেমেয়েসহ অন্যান্য জমির মালিকরা অস্বাভাবিক মূল্যে দলিল তৈরি করেছেন। ফলে ওই জমি অধিগ্রহণে সরকারের ব্যয় বেড়ে দাঁড়ায় ৫৫৩ কোটি টাকা। জমির অস্বাভাবিক মূল্য দেখে জেলা প্রশাসক তদন্ত করলে বেরিয়ে আসে সরকারের কয়েকশ কোটি টাকা লোপাটের পরিকল্পনার তথ্য।


মন্তব্য


সর্বশেষ সংবাদ