ঘূর্ণিঝড়ের সময় কী দোয়া পড়বেন, জেনে নিন

ঘূর্ণিঝড়ে
  © প্রতীকী ছবি

সর্বশক্তিমান আল্লাহ আমাদের সৃষ্টি করেছেন। মহান আল্লাহ বিভিন্ন সময়ে নানা প্রতিকূল পরিস্থিতি দিয়ে আমাদের পরীক্ষা করে থাকেন এবং দেখেন আমরা তার কতটুকু অনুগত। সুরা মুলকের ২নং আয়াতে আল্লাহ বলেন, ‘যিনি সৃষ্টি করেছেন মৃত্যু ও জীবন, তোমাদের পরীক্ষা করার জন্য—কে তোমাদের মধ্যে কর্মে উত্তম? তিনি পরাক্রমশালী, ক্ষমাশীল।’

সময় যত যাচ্ছে বাংলাদেশের দিকে এগিয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড় মোখা। প্রবল শক্তি নিয়ে ঘূর্ণিঝড়টি উপকূলে আঘাত হানবে তা অনেকটা নিশ্চিত। ঘূর্ণিঝড় মোখা আমাদের জন্য বড় পরীক্ষা। এ সময় প্রয়োজনীয় সুরক্ষা ব্যবস্থা গ্রহণের পাশাপাশি আমাদের আল্লাহর দিকে মনোনিবেশ করতে হবে। আশা রাখতে হবে, মহান আল্লাহতায়ালা আমাদের সবরকমের বিপদ-আপদ থেকে রক্ষা করবেন।

সুরা রুমের ৪১ নং আয়াতে আল্লাহ বলেন, ‘জলে-স্থলে বিপর্যয় মানুষের কৃতকর্মের ফল।’ অর্থাৎ আল্লাহর ঘোষণা অনুযায়ী এরূপ পরীক্ষা ও বিপদ-আপদ আসে মানুষের গোনাহের কারণে। তাই যেকোনও কঠিন পরিস্থিতিতে হতাশ না হয়ে বরং নিজের গোনাহের জন্য আল্লাহর কাছে তাওবা করা ও বেশি বেশি তাকে স্মরণ করা।

প্রাকৃতিক দুর্যোগ, বিপর্যয় ও প্রতিকূল অবস্থায় রাসুল (সা.) খুব বিচলিত হয়ে পড়তেন এবং আল্লাহর শাস্তির ভয় করতেন। এ সময় তিনি তওবা-ইস্তেগফার-নামাজে মশগুল হতেন ও তার সাহাবাদেরও বেশি বেশি তা করার নির্দেশ দিতেন।

এ জন্য ঘূর্ণিঝড় মোখার সময়ও আমাদের এ আমলগুলোর প্রতি যত্নবান হতে হবে। বিশেষত অতীতের সব গোনাহ ও ভুলের জন্য আল্লাহর কাছে তওবা করে নিতে হবে। পাশাপাশি ঘূর্ণিঝড় ও প্রাকৃতিক বিপর্যয় থেকে রক্ষা পেতে রাসুল (সা.) কয়েকটি দোয়া শিখিয়েছেন।  

জোরে বাতাস প্রবাহিত হলে দোয়া

‘আল্লাহুম্মা ইন্নি আসআলুকা খাইরাহা, ওয়া আউযুবিকা মিন শাররিহা’

অর্থ: হে আল্লাহ! আমি আপনার নিকট এর কল্যাণটাই কামনা করি। এবং আপনার কাছে এর অনিষ্ট থেকে আশ্রয় চাই। (আবু দাউদ ৪/৩২৬, হাদিস : ৫০৯৯)

গর্জনের সময় দোয়া

‘সুবহানাল্লাজি ইউসাব্বিহুর রা`দু বিহামদিহি ওয়াল মালাইকাতু মিন খিফাতিহি’

অর্থ: পাক-পবিত্র সেই মহান সত্তা—তার প্রশংসা পাঠ করে বজ্র এবং সব ফেরেশতা।

হজরত আবদুল্লাহ ইবন যুবাইর (রা.) যখন মেঘের গর্জন শুনতেন, তখন কথা বলা বন্ধ করে দিতেন এবং পবিত্র কোরআনের ওপরের এই আয়াতটি তিলাওয়াত করতেন।

ঝড়-বাতাসের অনিষ্ট থেকে সুরক্ষা পেতে দোয়া

‘আল্লাহুম্মা ইন্নি আসআলুকা মিন খাইরি হাজিহির রিহি ওয়া খাইরা মা ফিহা ওয়া খাইরা মা উরসিলাত বিহি, ওয়া আউযুবিকা মিন শাররিহা, ওয়া শাররি মা ফিহা ওয়া শাররি মা উরসিলাত বিহি’।

অর্থ: হে আল্লাহ! আমি আপনার কাছে প্রার্থনা করি এর কল্যাণ, এর মধ্যকার কল্যাণ এবং যা এর সাথে প্রেরিত হয়েছে তার কল্যাণ। আর আমি আপনার আশ্রয় চাই এর অনিষ্ট থেকে, এর ভেতরে নিহিত অনিষ্ট থেকে এবং যা এর সঙ্গে প্রেরিত হয়েছে তার অনিষ্ট থেকে। (বুখারি, ৪/৭৬, হাদিস : ৩২০৬ ও ৪৮২৯)

ঝড়-তুফানের সময় কি আজান দেওয়া যাবে?

আমাদের দেশে প্রচলিত আছে যে—ঝড়ের সময় আজান দিলে তার ক্ষয়ক্ষতি থেকে আল্লাহ সুরক্ষা দান করেন। তবে বিষয়টি সঠিক নয়, যদিও যথাস্থানে আজান দেওয়া ইসলামের অতি গুরুত্বপূর্ণ একটি নিদর্শন। হাদিসের উদ্ধৃতি দিয়ে যে কথাটির প্রচলন তার কোনও ভিত্তি নেই; বরং নামাজে দাঁড়িয়ে, সেজদায় আল্লাহর কাছে দোয়া করাই মুমিনের কাজ। (দারুল উলুম দেওবন্দের ফতোয়া, নম্বর: ১৬২৭৬৪)


মন্তব্য