পায়ে হেঁটে হজ করতে মক্কা যাচ্ছেন কুমিল্লার আলিফ

কুমিল্লার নাঙ্গলকোট উপজেলা বাসিন্দা আলিফ মাহমুদ আদিব। ২৫ বয়সী এই যুবক পায়ে হেঁটে মক্কা গিয়ে পবিত্র হজ পালনের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এরই মধ্যে নিজ বাড়ি থেকে যাত্রা শুরু করেছেন তিনি। আলিফ উপজেলা বটতলী ইউনিয়নের শেয়ার বাতাবাড়িয়া গ্রামের মৃত. আব্দুল মালেকের ছেলে। শনিবার (৮ জুলাই) দুপুর ১২টায় সৌদি আরবের উদ্দেশ্য নিজ বাড়িতে থেকে পায়ে হাঁটার যাত্রা শুরু করেন তিনি।

স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আলিফ ছোটকাল থেকেই ভ্রমণপিপাসু। এরই মধ্যে তিনি সাইকেলে করে দেশের ৬৪ জেলা ঘুরেছেন। এবার তিনি সিদ্ধান্ত নেন পায়ে হেঁটে গিয়ে পবিত্র হজ পালনের।

তাঁর এই ভাবনা থেকে শনিবার সকালে নিজ বাড়িতে দোয়া-মোনাজাত করে পরিবারের সকল সদস্য, বন্ধু ও আত্মীয়-স্বজনদের কাছ থেকে বিদায় নিয়ে বাড়ি থেকে বেলা ১২টার দিকে রওনা করেন। পায়ে হেঁটে সৌদি আরবে গিয়ে ২০২৪ সালের বড় হজ পালন করবেন বলে জানিয়েছেন আলিফ। ২০১১ সালে ওই যুবকের বাবা আব্দুল মালেক মারা যান। তিন ভাই আর এক বোনের মধ্যে আলিফ সবার ছোট।

উপজেলার বটতলী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল জলিল বলেন, আমাদের ইউনিয়ন পরিষদ থেকে ওই যুবকের সকল কাগজপত্র তৈরি করে দেওয়া হয়েছে। আল্লাহ যেন তার মনের আশা পুরণ করেন- সেই দোয়া করি। শনিবার দুপুরে নিজ বাড়ি থেকে পায়ে হেঁটে হজ্জ পালনের উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছেন তিনি।

নাঙ্গলকোট থানার পরিদর্শক (তদন্ত) কানন চৌধুরী বলেন, আমরা ওই যুবকের সকল কাগজপত্র দেখেছি। সকল কাগজপত্র ঠিক আছে।আমাদের পক্ষ থেকে তাকে সকল ধরণের সহযোগিতা করা হবে।

আলিফ মাহমুদ আদিব জানান, ছোটবেলা থেকেই ভ্রমণ করা তার নেশা। ২০২২ সালের নভেম্বর মাসের দিকে তিনি বাইসাইকেলে দেশের ৬৪ জেলা ভ্রমণ করেছেন। তার দীর্ঘদিনের স্বপ্ন পায়ে হেঁটে হজ করতে সৌদিতে যাবেন। সেই স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দিতে রওনা করেছেন তিনি।

কীভাবে সৌদিতে যাবেন- জানতে চাইলে আলিফ বলেন, ‘নিজ বাড়িতে থেকে যাত্রা শুরুর পর কুমিল্লা হয়ে ঢাকা যাব। সেখান থেকে যশোরের বেনাপোল সীমান্ত দিয়ে ভারতে যাব। ভারত থেকে পাকিস্তান, ইরান, ইরাক, কুয়েত হয়ে সৌদি আরব যাব, ইনশাআল্লাহ। পুরো পথটি পার হতে আমাকে প্রায় ৮ হাজার কিলোমিটার হাঁটতে হবে। আমি স্বপ্ন পূরণে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সহযোগিতা কামনা করছি।’

পাশাপাশি পুলিশ ও প্রশাসনসহ সকলের সহযোগিতা কামনা করছি। আর দেশবাসীর কাছে দোয়া চাই, আল্লাহ পাক যেন আমার মনের আশা পূরণ করেন।

আলিফ বলেন, ‘মক্কায় যাওয়া পর্যন্ত আমার পুরো খচর বহন করবেন বলে আশ্বাস দিয়েছেন নারায়ণগঞ্জের দুলাল কাজী গ্রুপের মালিক ইমাম কাজী। ইতিমধ্যে ইন্ডিয়ান ভিসা পেয়েছি। পাকিস্তানের ভিসা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। ইন্ডিয়া পার হতে হতে তাও পেয়ে যাব বলে আশা করছি। তারপরও আমার যাতে কোনো সমস্যা না হয়- সেজন্য পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে আমাকে একটি ক্লিয়ারেন্সের দেওয়ার জন্য সরকারের কাছে অনুরোধ করছি। কারণ তিন মাসের নিচে ছাড়া কোন ভিসা হয় না। এটাতো পায়ে হেঁটে যাত্রা। তাই আমি বিভিন্ন রাষ্ট্রের দূতাবাসগুলো থেকে ক্লিয়ারেন্স নেওয়ার জন্য আবেদন করব। আমার এই যাত্রায় সকলের দোয়া ও সহযোগিতা চাই।’