২ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু বিশ্ব ইজতেমা; নিরাপত্তায় সার্বিক প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে: আইজিপি

বিশ্ব ইজতেমা
  © ফাইল ছবি

আগামী ২ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হতে যাচ্ছে বিশ্ব ইজতেমা। বাংলাদেশ পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন বলেছেন, আসন্ন বিশ্ব ইজতেমা শান্তিপূর্ণভাবে নিরাপদে অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে সার্বিক প্রস্তুতি নিয়েছে বাংলাদেশ পুলিশ। সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় ইজতেমায় আগত মুসল্লিদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে।

বুধবার (১৭ জানুয়ারি) বিকেলে পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সের হল অব প্রাইডে আগামী ২-৪ ফেব্রুয়ারি ও ৯-১১ ফেব্রুয়ারি-২০২৪ দুই পর্বে অনুষ্ঠেয় বিশ্ব ইজতেমার সার্বিক নিরাপত্তা ও আইন-শৃঙ্খলা সংক্রান্ত সভায় এ কথা বলেন আইজিপি।  

দুই পর্বে অনুষ্ঠিতব্য ইজতেমা সফলভাবে সম্পন্ন করার লক্ষ্যে উভয়পক্ষের আয়োজকদের মধ্যে পারস্পরিক সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রেখে সমন্বয়ের মাধ্যমে ইজতেমা আয়োজনের আহ্বান জানান আইজিপি।
সভায় উপস্থিত তাবলিগের উভয়পক্ষের মুরুব্বিরা ইজতেমাকে কেন্দ্র করে গৃহীত সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থাপনায় সন্তোষ প্রকাশ করেন।  

আইজিপি বলেন, ইজতেমাস্থলের নিরাপত্তায় পোশাকে ও সাদা পোশাকে পুলিশ মোতায়েন থাকবে। এছাড়া বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিট, ডগ স্কোয়াড, নৌ টহল, বিস্ফোরকদ্রব্য বিষয়ে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত টিম দায়িত্ব পালন করবে। ইজতেমাস্থলের নিরাপত্তায় আকাশে র‍্যাবের হেলিকপ্টার টহল থাকবে।

সভায় অতিরিক্ত ডিআইজি (অপারেশনস) নাসিয়ান ওয়াজেদ ইজতেমার সার্বিক নিরাপত্তা পরিকল্পনা তুলে ধরেন।  

এ সময় ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) উত্তরা ট্রাফিক বিভাগ এবং গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ (জিএমপি) ইজতেমার নিরাপত্তা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত পরিকল্পনা উপস্থাপন করা হয়।

প্রসঙ্গত, বিশ্ব ইজতেমা বা বিশ্ব ইজতিমা তাবলিগ জামাতের বার্ষিক বৈশ্বিক সমাবেশ, যা বাংলাদেশের টঙ্গীর তুরাগ নদীর তীরে অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। তাবলিগ জামাতের এই সমাবেশটি বিশ্বে সর্ববৃহৎ, এবং এতে অংশগ্রহণ করেন বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা। সাধারণত প্রতিবছর শীতকালে এই সমাবেশের আয়োজন করা হয়ে থাকে, এজন্য ডিসেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি মাসকে বেছে নেয়া হয়।

১৯৬৭ সাল থেকে প্রতি বছর এই সমাবেশ নিয়মিত আয়োজিত হয়ে আসছে। বাংলাদেশে প্রথম ১৯৪৬ সালে ঢাকার রমনা পার্ক সংলগ্ন কাকরাইল মসজিদে তাবলিগ জামাতের বার্ষিক সম্মেলন বা ইজতেমা অনুষ্ঠিত হয়। ১৯৪৮ সালে চট্টগ্রামে তৎকালীন হাজি ক্যাম্পে ইজতেমা হয়, ১৯৫৮ সোলে বর্তমান নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে ইজতেমা অনুষ্ঠিত হয়। তখন এটা কেবল ইজতেমা হিসেবে পরিচিত ছিল। 

প্রতিবছর ইজতেমায় অংশগ্রহণকারীর সংখ্যা বাড়তে থাকায় এবং স্বাধীনতা যুদ্ধে পাকিস্তানের অখণ্ডতা রক্ষায় পাকিস্তানের সাথে অনেক আলেমদের একাত্মতা থাকায় ১৯৬৭ সালে রমনা ‍উদ্যানের স্থলে টঙ্গীর পাগার গ্রামের খোলা মাঠে ইজতেমার আয়োজন করা হয়। ওই বছর স্বাগতিক বাংলাদেশ ছাড়াও বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা অংশ নেওয়ায় ‘বিশ্ব ইজতেমা’ হিসেবে পরিচিতি লাভ করে। 

১৯৭২ সাল থেকে বর্তমান অবধি ‘বিশ্ব ইজতেমা’ টঙ্গীর কহর দরিয়াখ্যাত তুরাগ নদের উত্তর-পূর্ব তীরসংলগ্ন ডোবা-নালা, উঁচু-নিচু মিলিয়ে রাজউকের হুকুমদখলকৃত ১৬০ একর জায়গার বিশাল খোলা মাঠে অনুষ্ঠিত হচ্ছে।