চাঁদরাতের ইবাদতের ফজিলত ও মর্যাদা

ধর্ম
  © সংগৃহীত

চাঁদরাতের ইবাদতের ফজিলত ও মর্যাদা অনেক। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘তোমরা চাঁদ দেখে রোজা রাখো, চাঁদ দেখে রোজা ছাড়ো, ইফতার করো বা ঈদ করো।’ বুখারি, হাদিস : ১৯০৯; মুসলিম, হাদিস : ১০৮১

যে সন্ধ্যায় আকাশে চাঁদ দেখা যায়, সে রাত হলো ‘চাঁদরাত’। আরবি চান্দ্র বছরের নবম মাস রমজান এবং দশম মাস শাওয়াল। চাঁদরাত হিসেবে পরিচিত রাতটিতে ইবাদত-বন্দেগির ফজিলত ও মর্যাদা অনেক। এই বরকতময় রাতকে বলা হয় পুরস্কারের রাত। আল্লাহ তাআলা বান্দাকে বিশেষ পুরস্কার দেন এই রাতে।

হাদিসে এসেছে, ঈদুল ফিতরের রাতে ইবাদতের মাধ্যমে আল্লাহর জান্নাত ওয়াজিব হয়ে যায়। হজরত মুয়াজ ইবনে জাবাল (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী (স.) বলেন, যে ব্যক্তি পাঁচটি রাত (ইবাদতের মাধ্যমে) জাগ্রত থাকবে, তার জন্য জান্নাত ওয়াজিব হয়ে যাবে।

জিলহজ মাসের ৮ ও ৯ তারিখের রাত, ঈদুল আজহার রাত, ঈদুল ফিতরের রাত এবং ১৫ শাবানের রাত। (আত তারগিব ওয়াত তারহিব লিল মুনজেরি: ২/৯৮, হাদিস: ১৬৫৬)।

অন্য হাদিসে এসেছে, ঈদের রাতের দোয়া ফিরিয়ে দেয়া হয় না। হজরত আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) বর্ণনা করেন, ‘যে ব্যক্তি জুমার রাত, রজব মাসের প্রথম রাত, অর্ধশাবানের রাত এবং দুই ঈদের রাত—এই পাঁচ রাতে কোনো দোয়া করে; তার কোনো আবেদনই ফিরিয়ে দেয়া হয় না।’ (মুসান্নাফে আবদুর রাজ্জাক: ৭৯২৭)

ঈদের রাতে ইবাদতকারীর আরেকটি বিশেষ ফজিলত হলো- তার অন্তর কেয়ামতের দিন মরবে না। হজরত আবু উমামা বাহেলি (রা.) বর্ণনা করেন, নবী (স.) বলেছেন, যে ব্যক্তি দুই ঈদের রাতে আল্লাহর কাছে সওয়াবপ্রাপ্তির নিয়তে ইবাদত করবে, তার হৃদয় সেদিনও জীবিত থাকবে, যেদিন সকল হৃদয়ের মৃত্যু ঘটবে। (সুনানে ইবনে মাজাহ: ১৭৮২)।

হজরত উবাদা ইবনে সামেত (রা.) বর্ণিত অন্য হাদিসে এসেছে, যে ব্যক্তি ঈদুল ফিতর এবং ঈদুল আজহার রাতকে (ইবাদতের মাধ্যমে) জীবিত রাখবে তার অন্তর ওই দিন মরবে না, যেদিন অন্যদের অন্তর মরে যাবে। (আল মুজামুল আওসাত ১/৫৭, হাদিস: ১৫৯)।

চাঁদরাতের প্রথম সুন্নত ও ফরজে কিফায়া আমল হলো সূর্যাস্তের সঙ্গে সঙ্গে চাঁদ দেখা। চাঁদ দেখলে বা চাঁদ দেখার সংবাদ নিশ্চিত হলে দোয়া পড়া সুন্নত (তিরমিজি ৩৪৫১)

রমজানের ঈদের রাতে পুরুষদের মাগরিব, এশা ও ফজর নামাজ মসজিদে জামাতের সঙ্গে পড়ার চেষ্টা করতে হবে। নারীরাও ফরজ নামাজ আদায় করবেন। রাতের ইবাদতের জন্য বিশেষভাবে পবিত্রতা অর্জন করা হয়। ইবাদতের উপযোগী ভালো কাপড় পরতে হবে। মাগরিবের পর আউওয়াবিন নামাজ পড়া এবং শেষ রাতে তাহাজ্জুদের নামাজ পড়ার চেষ্টা করতে হবে। রাত জেগে নফল ইবাদত করা। নফল নামাজ পড়া। তাহ্যিয়াতুল অজু, দুখুলুল মসজিদ, তওবার নামাজ, সলাতুল হাজাত, সলাতুত তসবিহ, সলাতুস শোকর ইত্যাদি পড়া। কোরআন শরিফ তিলাওয়াত করা, সুরা ইয়াসিন, সুরা রহমান, সুরা ওয়াকিয়া, সুরা মুলক, সুরা মুজাম্মিল, সুরা মুদ্দাচ্ছির, সুরা ফাতহ, সুরা নাবা ইত্যাদি পাঠ করা। দরুদ শরিফ পাঠ করা, ইস্তিগফার করা, জিকির করা যেতে পারে।

 


মন্তব্য