ঈদের দ্বিতীয় দিনেও চলছে কোরবানি; ইসলামের বিধানে যা আছে

কোরবানি
  © বাংলাদেশ মোমেন্টস

ইসলামের অন্যতম একটি বিধান হলো কোরবানি। মহান আল্লাহর অপার অনুগ্রহ লাভের আশায় ঈদুল আজহার দ্বিতীয় দিনেও রাজধানীসহ সারাদেশে সামর্থ্য অনুয়ায়ী পশু কোরবানি করছেন ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা।

আজ মঙ্গলবার (১৮ জুন) ঈদের দ্বিতীয় দিনে অনেকেই পশু কোরবানি করতে দেখা গেছে। তবে ঈদের দিনের তুলনায় এ সংখ্যা অনেকটাই কম।

রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, ঈদের দ্বিতীয় দিন সকালে পশু কোরবানি দিচ্ছেন অনেকে। কেউ কেউ পারিবারিক ঐতিহ্যের কারণে, আবার অনেকে ঈদের দিন কসাই না পাওয়ায় কোরবানি করেননি। তারা আজ কোরবানি দিচ্ছেন।

দ্বিতীয় দিনে পশু কোরবানি দেওয়া লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, প্রথম দিন সবাই কোরবানি করেন, তাই কসাই না পাওয়াসহ বিভিন্ন সমস্যা থাকে। এ কারণে দ্বিতীয় দিনে কোরবানি দেওয়া হয়।

দ্বিতীয় দিনে কোরবানি দেওয়া আনোয়ার হোসেন বলেন, ঈদের দিন কসাই পাইনি, তাই আজ কোরবানি দিচ্ছি। ঈদের দিন কসাইদের যে চাহিদা থাকে সেটা আমাদের জন্য মুশকিল হয়ে যায়। কিন্তু দ্বিতীয় দিনে দেখা যায় কসাই পাওয়া যায়, আবার টাকাও কম দিতে হয়। তাই আজ কোরবানি দিচ্ছি।

নারিন্দার বাসিন্দা আব্দুল মান্নান জাগো বলেন, ‘আমরা প্রতিবারই পরের দিন কোরবানি দিই। এইডা আমগো ঐতিহ্য। আমগো বাপ-দাদারাও ঈদের পরের দিন কোরবানি দিতো। ওইডা অহন নিয়ম হইয়া গেছে। আজকে ঝামেলাও কম। তাই আইজকাই কোরবানি দিতাছি।’

ঈদের দিন ছাড়াও জিলহজ মাসের ১১ তারিখ (দ্বিতীয় দিন) ইসলামে বিশেষ সম্মানিত ও মর্যাদাপূর্ণ দিন। হাদিসে এ দিনটিকে ঈদুল আজহার প্রথম দিনের পরে সবচেয়ে মর্যাদপূর্ণ দিন বলা হয়েছে।

আব্দুল্লাহ ইবনে কুরত থেকে বর্ণিত আল্লাহর রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন,
إِنَّ أَعْظَمَ الأَيَّامِ عِنْدَ اللَّهِ تَبَارَكَ وَتَعَالَى يَوْمُ النَّحْرِ ثُمَّ يَوْمُ الْقَرِّ

দিনগুলোর মধ্যে আল্লাহর নিকট সর্বশ্রেষ্ঠ দিন হল, নহরের দিন (অর্থাৎ কোরবানির প্রথম দিন) এরপর এর পরবর্তী দিন ( অর্থাৎ কোরবানির দ্বিতীয় দিন)। (সুনানে আবু দাউদ: ১৭৬৫)

ঈদুল আজহার দ্বিতীয় দিন সারাদিনই কোরবানি করা যায়। ফজরের পর থেকে শুরু করে সন্ধ্যা পর্যন্ত এমনকি রাতেও পশু কোরবানি করলে কোরবানি শুদ্ধ হবে। তবে রাতে কোরবানি করা অনুত্তম, যদি পশু জবাইয়ে ভুল হওয়ার আশংকা থাকে।

শরিয়তে কোরবানির মোট সময় তিন দিন। ১০ জিলহজ ঈদের নামাজ অনুষ্ঠিত হওয়ার পর থেকে শুরু করে জিলহজের ১২ তারিখ সূর্যাস্তের পূর্ব পর্যন্ত কোরবানি করা যায়। জিলহজের ১২ তারিখ সূর্যাস্তের পর আর কোরবানি করার সুযোগ থাকে না।

কেউ যদি কোরবানির দিনগুলোতে ওয়াজিব কোরবানি দিতে না পারে তাহলে কোরবানির পশু ক্রয় না করে থাকলে তার ওপর কোরবানির উপযুক্ত একটি পশুর মূল্য সদকা করা ওয়াজিব। আর যদি পশু ক্রয় করে থাকে, কিন্তু কোনও কারণে কোরবানি দেয়া হয়নি, তাহলে ওই পশু জীবিত সদকা করে দেবে।

কেউ যদি কোরবানির সময় শেষ হয়ে যাওয়ার পর অর্থাৎ ১২ জিলহজ সূর্যাসের পর কোরবানির পশু জবাই করে ফেলে, তাহলে ওই পশুর সব মাংস সদকা করে দিতে হবে। এ রকম ক্ষেত্রে গোশতের মূল্য জীবিত পশুর চেয়ে কমে গেলে যে পরিমাণ মূল্য কমবে, তাও সদকা করতে হবে।


মন্তব্য