ঢাবিতে মানববন্ধনে বক্তারা

মহানবীকে নিয়ে বিজেপি নেতাদের মন্তব্য সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট করার অপচেষ্টা

মানববন্ধন
রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে মানববন্ধন  © মোমেন্টস ফটো

মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.)-কে নিয়ে ভারতের ক্ষমতাসীন দল বিজেপির জ্যেষ্ঠ দুইনেতা বিতর্কিত মন্তব্য করা পূর্ব পরিকল্পিত। হিন্দু ও মুসলমানদের মাঝে যে সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক রয়েছে তা নষ্ট করার অপচেষ্টা এটি। ক্ষমতাসীন দলটি বিভিন্ন সময় বিভিন্ন প্রকার মন্তব্য করে হিন্দু ও মুসলিমদের মাঝে যে অসাম্প্রদায়িক বন্ধন আছে তা নিশ্চিহ্ন করতে চায়।

বুধবার (৮ জুন) দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যানারে এক মানববন্ধনে এসব কথা বলা হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে আয়োজিত এই মানববন্ধন থেকে বাংলাদেশ সরকারের উদ্দেশ্যে ভারত সরকারের প্রতি রাষ্ট্রীয়ভাবে নিন্দা জ্ঞাপনের প্রস্তাব করেন বক্তারা।

মানববন্ধনে শিক্ষার্থীরা বলেন, মধ্যপ্রাচ্যসহ সকল দেশ যেভাবে এর প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশ সরকারের কাছে অনুরোধ করব, আপনারা অতি সম্প্রতি ভারতের কাছে প্রতিবাদলিপি পেশ করুন। সেদেশের সকল মুসলমানের নিরাপত্তা নিশ্চিতের দাবি জানান। বিভিন্ন সময় সেদেশের মুসলমানদের বলা হয়, তারা বাংলাদেশ থেকে ভারতে গিয়ে আশ্রয় নিয়ে ভারত দখল করে নিচ্ছে। এ বিদ্বেষ শুধুমাত্র মুসলিম বিদ্বেষ নয়, এ বিদ্বেষ বাংলাদেশ বিদ্বেষেরই একটি অংশ।

তারা আরও বলেন, এখন থেকে বাংলাদেশ সরকার যদি শক্ত পদক্ষেপ না নিতে পারে, তাহলে আগামী দিনে রোহিঙ্গা সংকটের মতো আরেকটি সংকট দেখতে হতে পারে। আমরা এখনি সতর্ক করে বলে দিতে চাই, ভারতের মুসলমানদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। পাশাপাশি বাংলাদেশ সরকার ভারতে যে অন্যায়গুলো হচ্ছে সেগুলোর শক্ত প্রতিবাদ জানাতে হবে।

সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের ছাত্রী মোসাদ্দেকা আফরিন দোলা বলেন, ভারতে বিজেপি নেতা রাসুল (সা.) ও আয়েশাকে (রা.) নিয়ে কটূক্তি করেছে। মুসলিম রাষ্ট্রগুলো এর নিন্দা জানালেও আমাদের সরকার এখনো কোনো প্রতিবাদ বা নিন্দা জানায়নি। 

তিনি আরও বলেন, হযরত মুহাম্মদ (সা.) আমাদের ভালোবাসার স্থান। তাকে নিয়ে কটূক্তি আমরা মুসলিম হিসেবে মেনে নিতে পারি না। ভারত সরকারকে এ ঘটনার কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। যার ফলে ভবিষ্যতে আর কেউ এরকম মন্তব্য করতে না পারে।

প্রসঙ্গত, মহানবী (সা.) নিয়ে বিজেপির দুই নেতা বিতর্কিত মন্তব্য করায় ভারতের বিভিন্ন প্রদেশের সংখ্যালঘু মুসলিমরা বিক্ষোভ-প্রতিবাদ করছেন। চার দিন আগে উত্তর প্রদেশের কানপুরে মুসলিমদের সাথে পুলিশের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এরপর বুধবার (৮ জুন) বিজেপির যুব শাখার নেতা হর্ষিত শ্রীবাস্তবকে গ্রেপ্তার করেছে দেশটির পুলিশ।

দুই নেতার বিতর্কিত মন্তব্যের জেরে মুসলিম বিশ্বের ক্রমবর্ধমান ক্ষোভ ও তোপের মুখে পড়েছে ভারত। মধ্যপ্রাচ্যের প্রভাবশালী দেশগুলোসহ এখন পর্যন্ত বিশ্বের অন্তত ১৫টি দেশ ভারতের বিরুদ্ধে সরব হয়েছে। এসব দেশ ভারত ও বিজেপি সরকারের নিন্দা জানানোর পাশাপাশি দেশটিকে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাওয়ার আহ্বান জানিয়েছে।