আমাজানের গহীনে আড়াই হাজার বছরের প্রাচীন নগরীর সন্ধান

আমাজান
  © সংগৃহীত

পৃথিবীর ফুসফুস খ্যাত দক্ষিণ আমেরিকার গহীন অরণ্য আমাজান নদী। নানা অজানা রহস্য লুকিয়ে আছে বনটিতে। এবার আরও এক রহস্যের সন্ধান পাওয়া গেল। আমাজনের চিরহরিৎ বনের ঘন জঙ্গলে হাজার হাজার বছর ধরে ঢাকা পড়ে থাকা বিশাল এক প্রাচীন নগরীর সন্ধান পেয়েছেন প্রত্নতাত্ত্বিকরা।

গতকাল শুক্রবার (১৩ জানুয়ারি) ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। এছাড়া সিএনএন, ফিন্যানশিয়াল নিউজ, সিবিএস নিউজ, জিওগ্রাফিক নিউজের প্রতিবেদনেও অনুরূপ তথ্য জানানো হয়েছে।

আমাজনে মানুষের বসবাসের ইতিহাস সম্পর্কে আমরা যতটুকু জানি সেই ধারণা বদলে দিয়েছে নতুন এই নগরীর আবিষ্কার। পূর্ব ইকুয়েডরের উপানো উপত্যকায় এই প্রাচীন নগরীর সন্ধান পাওয়া গেছে। সেখানকার বাড়িঘর এবং প্লাজাগুলো বিভিন্ন রাস্তা এবং খালের নেটওয়ার্কের সঙ্গে সংযুক্ত।

এলাকাটি আগ্নেয়গিরিতে ছাওয়া। ফলে সেখানকার মাটি উর্বর। তবে এই আগ্নেয়গিরিই সেখানকার সমাজ ধ্বংসের কারণ হয়ে থাকতে পারে বলেও মনে করা হচ্ছে। লেজার স্ক্যানিং কিংবা থ্রিডি স্ক্যানিং পদ্ধতিতে এই নগরীর সন্ধান পেয়েছেন প্রত্নতাত্ত্বিকরা। আমাজনে জানা মতে, অন্য যে কোনো স্থানের চেয়ে এই স্থানটি পুরোনো।

আমাজনকে এমন এক গহিন বনভূমি মনে করা হয়, যেখানে শুধু ছোট ছোট গোষ্ঠী কুটিরে কিংবা খোলা জায়গায় বসবাস করত। কিন্তু সাম্প্রতিক এই নগরীর আবিষ্কার দেখিয়ে দিয়েছে, অতীতেও সেখানে জটিল শহুরে সমাজব্যবস্থায় মানুষ বাস করত। প্রাচীন এই নগরী তৈরি হয়েছিল প্রায় ২ হাজার ৫০০ বছর আগে। প্রত্নতাত্ত্বিকদের মতে, সেখানে মানুষ বাস করেছে ১ হাজার বছর পর্যন্ত। সেখানে কত মানুষের বাস ছিল তা সঠিকভাবে নির্ধারণ করা কঠিন। তবে বিজ্ঞানীরা বলছেন, সেখানে কমপক্ষে ১০ হাজার বাসিন্দা ছিল। ৬ হাজার আবাসিক এবং অনুষ্ঠানের জন্য নির্মিত ভবন ছিল এই নগরীতে। সবচেয়ে বড় রাস্তাগুলো ছিল ৩৩ ফুট প্রশস্ত এবং ৬ থেকে ১২ মাইল পর্যন্ত প্রসারিত।

গবেষকরা ১৯৭০ এর দশকে প্রথম এই নগরীর অস্তিত্ব থাকার প্রমাণ খুঁজে পেলেও ২৫ বছরের গবেষণার পর এবারই প্রথম সামগ্রিকভাবে পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষ করলেন তারা।