পৃথিবীর প্রাচীন জঙ্গলের সন্ধান পাওয়া গেল নিউইয়র্কে!

প্রাচীন জঙ্গল
  © আনইস্প্ল্যাশ

পৃথিবীর ফুসফুস খ্যাত আমাজন জঙ্গল। সম্প্রতি এই জঙ্গলে আড়াই হাজার বছরের প্রাচীন নগরীর সন্ধান পাওয়া গেছে। তবে আমাজন কী পৃথিবীর প্রাচীন জঙ্গল? জানা গেল নতুন তথ্য। আমেরিকার আধুনিক শহর নিউইয়র্কের কাছেই পাওয়া গেছে জঙ্গলের অস্তিত্ব। বিজ্ঞানীরা বলছেন, এখানে যে জঙ্গলের অস্তিত্ব পাওয়া গেছে, তা বিশ্বের সবচেয়ে পুরোনো।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। ভারতীয় গণমাধ্যম এনডিটিভির প্রতিবেদনেও একই তথ্য জানানো হয়েছে।

বিবিসি প্রতিবেদনে বলছে, আমেরিকার বার্মিংহাম বিশ্ববিদ্যালয় ও ওয়েলসের কার্ডিফ বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষক এই জঙ্গলের খোঁজ পেয়েছেন। আগেই অবশ্য জানা গিয়েছিল নিউইয়র্কের কাছে একসময় বন ছিল। এবার সেই বনের বয়সও বের করে ফেললেন গবেষকেরা। 

আরও পড়ুন: আমাজানের গহীনে আড়াই হাজার বছরের প্রাচীন নগরীর সন্ধান

গবেষক দল জানিয়েছে, এই বন ৪০০ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে বিস্তৃত ছিল। এখানে যেসব গাছপালা ছিল, সেগুলোর কিছু কিছু গাছ ডাইনোসরও দেখেছে। এখানে যে পাথর পাওয়া গেছে, তা ডেটিং করে জানা গেছে, এই বনের বয়স আনুমানিক সাড়ে ৩৮ কোটি বছর। 

নিউইয়র্ক অঙ্গরাজ্যের কায়রো নামক এলাকার একটি খনির নিচে এই বনের অস্তিত্ব পাওয়া গেছে। ২০১৯ সালে প্রথম এখানে মূল গবেষণা শুরু হয়। এবার জানা গেল, এই বন আমাজন ও জাপানের ইয়াকুশিমার চেয়েও আগেকার। 

তবে কোন ধরনের উদ্ভিদ ও প্রাণী এই জঙ্গলে ছিল, তা এখনো নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না।

এর আগে মহাবন আমাজনে পাওয়া গেছে শহরের অস্তিত্ব। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি বলছে, পূর্ব ইকুয়েডরের ইউপানো এলাকার কাছের এই শহরের অস্তিত্ব প্রথম জানতে পেরেছেন ফ্রান্সের ন্যাশনাল সেন্টার ফর সায়েন্টিফিক রিসার্চের ইনভেস্টিগেশন বিভাগ। এই বিভাগের প্রধান স্টেফান রোস্টারিন জানান, এই শহরের রাস্তা ও খালগুলো ইউপানো এলাকার বাড়িঘর ও প্লাজার সঙ্গে যুক্ত ছিল।

আগ্নেয়গিরির অগ্নুৎপাতের কারণে এই এলাকার মাটি আগের চেয়ে অনেক উর্বর হয়। কিন্তু এই আগ্নেয়গিরির কারণেই এই শহর ও সমাজ ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল বলে মনে করা হচ্ছে। পেরুর মাচুপিচুর মতো শহরের খোঁজ আগেই পাওয়া গেছে। এবার পাওয়া শহরের মানুষেরা যাযাবর জীবনযাপন করত, নাকি ছোট্ট বসতি গড়ে থাকত, তা এখনো গবেষণাধীন। 

ফ্রান্সের ন্যাশনাল সেন্টার ফর সায়েন্টিফিক রিসার্চের ইনভেস্টিগেশন বিভাগের প্রধান স্টেফান রোস্টারিন বলেন, ‘আমাজনে খোঁজে পাওয়া সবচেয়ে পুরোনো সাইট এই শহর। সভ্যতা নিয়ে আমাদর সব ধারণাই ইউরোপকেন্দ্রিক। কিন্তু এই আবিষ্কার প্রমাণ করল, সংস্কৃতি ও সভ্যতা নিয়ে আমাদের ভাবনায় পরিবর্তন আসা দরকার।’

গবেষক দলের আরেক সদস্য অ্যান্তোইন ডোরিসন বলছেন, ‘আমাজনের সংস্কৃতি নিয়ে আমাদের যে ধারণা ছিল, তা ভুল প্রমাণ করল এই শহর।’

গবেষকেরা বলছেন, এই শহর আড়াই হাজার বছর আগে গড়ে ওঠে। এখানে এক হাজার বছর ধরে মানুষ বসবাস করেছে। তবে সেখানে একই সঙ্গে কতজন মানুষ থাকত, তা বলা যাচ্ছে না। আনুমানিক ১০ হাজার থেকে ১ লাখ হতে পারে।