এস এস পাইপ দিয়ে হেলিকপ্টার বানালেন উদীয়মান বিজ্ঞানী নাজমুল

ছাত্র
  © সংগৃহীত

বয়স মাত্র ২৪ বছর। খুলনার সরকারি বিএল কলেজের বিএসএস দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র তিনি। এর মধ্যেই হেলিকপ্টার বানিয়ে সবাইকে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন নাজমুল হোসেন খান। খুলনার ফুলতলার জামিরা ইউনিয়নের ছাতিয়ানি গ্রামের কৃষক নজরুল ইসলাম খানের ছেলে নাজমুল। বাড়িতেই সহজ পদ্ধতিতে অভিনব কায়দায় বানিয়েছেন হেলিকপ্টার। মেধা আর প্রাণপণ চেষ্টার জোরে পুরো গ্রামজুড়ে বিজ্ঞানী হিসেবে পরিচিতি পেয়েছেন নাজমুল।  

কীভাবে হেলিকপ্টার তৈরি করেছেন জানতে চাইলে কলেজ শিক্ষার্থী নাজমুল বলেন, পুরো হেলিকপ্টারটির দৈর্ঘ্য সাড়ে ২২ ফিট। হেলিকপ্টারের বডি তৈরিতে ব্যবহার করেছি এস এস পাইপ। আর চায়না দেড়শ সিসির মোটরসাইকেলের ইঞ্জিনের আরপিএম সাড়ে ছয় হাজার থেকে বাড়িয়ে হাজার আরপিএমএ। এর পাখা সাড়ে আট ফিট লম্বা, চওড়া ২১ মিটার। হেলিকপ্টারটি এক লিটার অকটেনে ১৮ থেকে ২০ মিনিট চলবে। যার সর্বোচ্চ গতিবেগ হবে ৩২০ কিমি/ঘণ্টা।

হেলিকপ্টারের কতভাগ কাজ শেষ হয়েছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, অনলাইন থেকে হেলিকপ্টার তৈরির ভিডিও দেখে সেখান থেকে ধারণা নিয়ে হেলিকপ্টার তৈরি করেছি। ইতোমধ্যে আমার হেলিকপ্টার তৈরির ৯৮ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। আশা করি, এটা অচিরেই আকাশে উড়াতে পারবো। এটা তৈরিতে চায়না ইঞ্জিন ১৫০ সিসি ব্যবহার করেছি। বাকি মালামাল বাংলাদেশের ভেতর থেকে নিয়েছি।

হেলিকপ্টার তৈরিতে কত টাকা খরচ হয়েছে এমন প্রশ্নের জবাবে নাজমুল বলেন, হেলিকপ্টার তৈরিতে আমার দুই লাখের বেশি টাকা খরচ হয়েছে। এটা তৈরি করতে কারও সহযোগিতা নেইনি। আমার ওজনসহ ২১০ কেজি নিয়ে উড়তে পারবে। সরকার যদি কোনো সহযোগিতা কিংবা সরকারের কোনো সংস্থা যদি আমাকে কোনোভাবে সাহায্য-সহযোগিতা করতো তাহলে আমি উপকৃত হতাম।

নাজমুল জানান, খুলনা জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসকের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। কিছুদিনের মধ্যে প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম, নিরাপত্তা ব্যবস্থা ও বৃষ্টি কমলে হেলিকপ্টার উড়ানো সম্ভব হবে।

নাজমুলের এমন উদ্ভাবনে উচ্ছ্বাসিত গ্রামবাসী ও তার শিক্ষকরা। নাজমুলের হেলিকপ্টার বানানোর পরিকল্পনাকে উৎসাহ যুগিয়েছেন তারা। এ প্রসঙ্গে জামিরা বাজার আসমোতিয়া স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ গাজী মারুফুল কবীর বাংলানিউজকে বলেন, নাজমুল আমাদের কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেছে। দুই বছর ধরে হেলিকপ্টার তৈরির কাজটা চালাচ্ছে নাজমুল। ও যে পর্যায়ে নিয়ে গেছে আশা করছি অতি অল্প সময়ের মধ্যে হেলিকপ্টার আকাশে ওড়াতে পারবে।

খুলনার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম বলেন, হেলিকপ্টার প্রস্তুতকারক কলেজ শিক্ষার্থী নাজমুলকে জেলা প্রশাসনের পক্ষ সহযোগিতা করা হবে। হেলিকপ্টার ওড়ানোর সময় ফায়ার সার্ভিসসহ সব ধরনের নিরাপত্তা ব্যবস্থাও গ্রহণ করা হবে।