‘বাবার পোষা ড্রাগন’ বইটা সবার জন্য না
- মনিরুজ্জামান রিপন
- প্রকাশ: ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ১২:০৭ PM , আপডেট: ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ১২:০৭ PM

'বাবার পোষা ড্রাগন' বইটা আসলে সবার জন্য না। আপনি যদি চান আপনার সন্তান, শিশু শ্রেণী থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের গন্ডি পর্যন্ত আপনার হাত ধরে বেড়ে উঠবে তাহলে ত একদমই নয়। আপনি যদি চান আপনার সন্তানকে হাত ধরে নিজের কাঁধে স্কুল ব্যাগ চাপিয়ে কিংবা নিজ হাতে পানির বোতল আর টিফিন বক্স নিয়ে পৌছে দেবেন তাহলে এই বই থেকে দূরে থাকাই শ্রেয়। এই বইটি আপনার সন্তানকে শেখাবে কিভাবে বিপদে নিজেকে শান্ত রেখে বুদ্ধি খাটিয়ে সমস্যার সমাধান করতে হয়, কিভাবে নিজের লক্ষ্যে অটল থাকতে হয়, কিভাবে আত্মনির্ভরশীল হতে হয়।
সজীব সেনের এই বইটি একটা কাল্পনিক এডভেঞ্চারের গল্প। নিজের ছোটবেলার সাথে মিলিয়ে যদি বলি, আমরা যারা নাইন্টিজ এর মানুষ, তাদের শৈশবে দীপু নাম্বার টু, ম্যাকগাইভার, সিন্দাবাদ, রবিন হুড যেন এডভেঞ্চার, আর ফ্যান্টাসির আলাদা মাত্রা যোগ করেছিল। সাহস করে একা কোথাও যাওয়া কিংবা নিজের সামর্থ্যের উপর ভর করে ঘর ছেড়ে শীতের সকালে মাঠের ঘাসের ডগায় শিশিরবিন্দু দেখার যে তীব্র বাসনা এটা জাগ্রত করে তুলতে সাহায্য করবে এই বই।
এই গল্পে লেখকের সৃষ্টি করা বাবা চরিত্রটি ছোটোবেলায় ছিলেন যেমন সাহসী, তেমনই বুদ্ধিমান। বৃষ্টির দিনে একবার তিনি বাসায় ডেকে নিয়ে এলেন গলির মোড়ের এক ভিজে বিড়ালকে । সেই বিড়ালও যে সে বিড়াল নয়, রীতিমতো সাহসী এক অভিযাত্রী। সে বাবাকে সন্ধান দিল বুনোদ্বীপে আটকে পড়া এক ড্রাগনের। বাবা ঠিক করলেন, যে করেই হোক এই ড্রাগনকে তিনি উদ্ধার করবেন । শুরু হলো ড্রাগন উদ্ধারের এক দুরন্ত অভিযান । পথে নেমে নানান রকম বিপদ আপদ আর সেই বিপদ অতিক্রম করে গন্তব্যে পৌঁছানোর ঘটনাই উঠে এসেছে এই বইয়ে। একই সাথে প্রতিটি পৃষ্ঠায় সজীব সেন এর আঁকা চিত্র যেন পুরো এডভেঞ্চারকে চোখের সামনে মূর্ত করে তোলে। গল্পে গল্পে প্রকৃতির সাথে, জীবকুলের সাথে শিশুসুলভ যে সাখ্যতা লেখনি শেষে মানবিক হওয়ার যে শিক্ষা উঠে এসেছে তারও প্রশংসা না করলেই নয়।
'বাবার পোষা ড্রাগন' বইটি মূলত মার্কিন শিশু সাহিত্যিক রুথ স্টাইলস গ্যানেট এর মাই ফাদার'স ড্রাগন গল্পকে অবলম্বন করে আমাদের পারিপার্শ্বিকতায় লেখা। বইটির পুনর্লিখন এবং অলংকরণ করেছেন সজীব সেন নিজেই এককভাবে। সজীব সেন মূলত একজন চিত্রশিল্পী ও ভাস্কর। একই সাথে বাংলাদেশ শিশু একাডেমীতে চিত্রাঙ্কন এবং সৃজন শাখায় প্রশিক্ষক হিসেবে কর্মরত আছেন। শিশুদের পাঠদানের অভিজ্ঞতা এবং রঙতুলিতে পারদর্শিতার কারণে শিশুবান্ধব এবং শিশুর চাহিদা বুঝেই অসামান্য এই বইটির ধারনা। বইটি এবারের অমর একুশে বইমেলা-২০২৩ এর পাঞ্জেরী পাবলিকেশন্স থেকে প্রকাশিত হয়েছে। বইমেলায় পাওয়া যাচ্ছে পাঞ্জেরী পাবলিকেশন্সের প্যাভিলিয়নে।