নিত্যপণ্যের বাজার নিয়ন্ত্রণহীন, আকাশছোঁয়া দাম, ক্ষুব্ধ ক্রেতারা

বাজার
নিত্যপণ্য  © সংগৃহীত

গত কয়েকদিন ধরে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বেড়েই চলেছে। দিশেহারা হয়ে পড়েছে ভোক্তারা। বাজার করতে গেলে চাহিদা অনুযায়ী ব্যাগ ভর্তি না হতেই পকেটের টাকা শেষ হয়ে যায়। এতে হতাশ হয়ে পরিবারের কাছে ফিরতে হয়। গত কয়েকদিন আগেও ব্রয়লার মুরগির কেজি ছিল ১৪০ থেকে ১৫০ টাকায়। সেই মুরগির রেকর্ড দাম বেড়ে বর্তমানে বিক্রি হচ্ছে ২৫০ থেকে ২৬০ টাকায়। সোনালি মুরগির দামও কেজি প্রতি ৩৩০ টাকা থেকে বেড়ে ৩৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। একই সঙ্গে বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে দেশি মুরগিও। 

বিক্রেতারা বলছেন, এর আগে কখনোই তারা ২৬০ টাকা কেজিতে ব্রয়লার মুরগি বিক্রি করেননি। মূলত বাজারে ব্রয়লার মুরগির সরবরাহ কমে যাওয়ায় এই রেকর্ড দাম সৃষ্টি হয়েছে বলে জানান ব্যবসায়ীরা। 

ব্রয়লার মুরগি

তারা বলছেন, আন্তর্জাতিক বাজার ও ডলারের বাড়তি দামের কারণেই বাজারে স্বস্তি ফিরছে না। 

প্রতিবছর রমজান মাস সামনে রেখে মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে অসাধু সিন্ডিকেট। মাস খানেক আগে থেকেই বাড়িয়ে দেয়া হয় বিভিন্ন পণ্যের দাম। এবারও এর ব্যতিক্রম নয়। শবে বরাতের আগ থেকেই দফায় দফায় বাড়ছে নিত্যপণ্যের দাম।

আজ শুক্রবার (৩ মার্চ) গাজীপুর মহানগরের চৌরাস্তা, টঙ্গী বাজার, বোড বাজার, কোনাবাড়ি এবং রাজধানীর মিরপুর, কাওরান বাজারসহ বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, সপ্তাহের ব্যবধানে প্রতি কেজি ছোলার দাম ৫ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৯৫ টাকায়। প্রতি কেজি ডাল ১০ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ১৪০ টাকা। চিনির সংকট এখনও কাটেনি। ক্ষুব্ধ ক্রেতাদের অভিযোগ, সরকারের বেঁধে দেয়া দর মানছেন না ব্যবসায়ীরা। 

গেল বছর রমজানের আগে বিদেশি আদার কেজি ছিল ১২০ টাকা, এবার সেই আদার দাম ঠেকেছে ২৫০ টাকায়। বেড়েছে রসুন, এলাচ, লবঙ্গ, দারুচিনির মতো মসলার দামও। মুরগির দামও বাড়ছে সমানতালে। সপ্তাহের ব্যবধানে সোনালি মুরগীর দাম কেজিতে ২০ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৩৩০ টাকায়। ব্রয়লার মুরগীর কেজি এখন ২৫০। এতে আমিষের চাহিদা মেটানো নিয়ে শঙ্কায় ভোক্তারা।

বিক্রেতারা বলছেন, আন্তর্জাতিক পরিস্থিতির কারণে দেশের বাজারে নিত্যপণ্যের দাম কমছে না। বাজারে নজরদারি বাড়ানো না হলে রোজার সময় পণ্যের দাম আরও বেড়ে যাওয়ায় আশংকা করছেন ক্রেতারা।

এদিকে পেঁয়াজের দাম বেড়েছে। প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকায়। বড় রসুনের কেজি ১৪০ টাকা। ছোট রসুনের কেজি বিক্রি হচ্ছে ১২০-১৩০ টাকায়। আদার কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৪০ থেকে ১৬০ টাকায়।

বাজারে গরুর মাংস আগের বাড়তি দামেই বিক্রি হচ্ছে। প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৭৫০ টাকায়। অথচ দুই সপ্তাহ আগে বিক্রি হতো ৬৫০ থেকে ৭০০ টাকায়। খাসির মাংসের কেজি বিক্রি হচ্ছে ১০০০-১১০০ টাকায়। আগে বিক্রি হতো ৯০০ থেকে ১০০০ টাকায়।

সবজির বাজার ঘুরে দেখা যায়, আকারভেদে বাঁধাকপি ও ফুলকপি বিক্রি হচ্ছে ৩০-৩৫ টাকায়। প্রতি কেজি শসা ৫০-৬০, বেগুন ৬০-৮০, টমেটো ৩০-৪০, শিম ৫০-৬০ ও করলা ৮০-৯০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। চাল কুমড়া প্রতিটি ৫০-৬০, লাউ আকারভেদে ৬০-৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। মিষ্টি কুমড়ার কেজি ৪০ টাকা, চিচিঙ্গা ৬০, পটল ৮০, ঢেঁড়স ১০০, কচুর লতি ৬০-৭০, পেঁপে ৩০-৪০, বরবটি ১০০ ও ধুন্দুল ৫০-৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

তবে কমেছে কাঁচামরিচের দাম। প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৬০ টাকায়। গত সপ্তাহে কাঁচা মরিচের কেজি ছিল ১৯০ থেকে ২০০ টাকা।

বাজারে প্রতি কেজি আলু বিক্রি হচ্ছে ২৫ থেকে ৩০ টাকায়। খোলা চিনি প্রতি কেজি ১১৫ থেকে ১২০ টাকায়। খোলা আটার কেজি ৬০ টাকা। প্যাকেট আটা ৬৫ টাকা, যা আগে কেজি ছিল ৭০ টাকা। দুই কেজির প্যাকেট আটা বিক্রি হচ্ছে ১৩০ টাকায়। দেশি মসুর ডালের কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৪০ টাকায়। 

ইন্ডিয়ান মসুরের ডালের কেজি ১২০-১২৫ টাকা। বাজারে সয়াবিন তেলের লিটার বিক্রি হচ্ছে ১৮৭ টাকায়। লবণের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩৮-৪০ টাকায়।


মন্তব্য


সর্বশেষ সংবাদ