আজ বিশ্ব ঘুম দিবস
- মোমেন্টস ডেস্ক
- প্রকাশ: ১৭ মার্চ ২০২৩, ০১:০৬ PM , আপডেট: ১৭ মার্চ ২০২৩, ০১:৩৬ PM

আজ ১৭ মার্চ, বিশ্ব ঘুম দিবস। মারাত্মক ঘুমের সমস্যায় ভুগছেন এমন মানুষকে সহায়তা এবং বিষয়টি নিয়ে সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে ২০০৮ সাল থেকে দিবসটি পালিত হয়ে আসছে। বিশ্বব্যাপী ৭০টিরও বেশি দেশে আনুষ্ঠানিকভাবে এটি পালন করা হয়।
এই দিবস ঘুম সম্পর্কিত বিভিন্ন ইস্যু যেমন- ঘুমের ওষুধ এবং অনিদ্রার সামাজিক প্রভাব নিয়ে কাজ করে। হালকা থেকে গুরুতর ঘুমের সমস্যা বর্তমান সমাজে অনেকের মাঝেই দেখা যায়। গুরুত্ব না দিলে এটি পুরো জীবনকে এলোমেলো করে দিতে পারে।
ঘুমের ওষুধ ও ঘুম নিয়ে গবেষণা করা একদল চিকিৎসাবিদের হাত ধরে এই দিবসের পথচলা শুরু।
চরম ব্যস্ততার যুগে ঘুম মাথায় উঠেছে বর্তমান প্রজন্মের। যার থেকে বাসা বাঁধছে নানা রোগ। সুস্থতার সঙ্গে ঠিক কী সম্পর্ক রয়েছে ঘুমের, আসুন দেখা যাক।
১. শুধু চোখের নীচে ডার্ক সার্কেল মুছতে বা মন ভালো রাখতেই যে ঘুমের প্রয়োজন তা নয়। পর্যাপ্ত ঘুম সুস্থ রাখে আপনার হৃত্পিণ্ড, নিয়ন্ত্রণে রাখে ওজন।
স্টাইলিশ হেয়ার ড্রায়ার ব্রাশ দিয়ে চুলে আনুন পরিবর্তন এবার আরও সহজে
২. ঘুমোলে আপনার স্মৃতিশক্তি বাড়বে। ডাক্তাররাই বলছেন, ভালো করে ঘুমোন, আপনার ভুলে যাওয়ার প্রবণতা কমবে। অতিরিক্ত অথবা খুব কম ঘুমোলে তার প্রভাব পড়বে আপনার আয়ুষ্কালের উপর। ২০১০-এর একটি গবেষণায় দেখা গিয়েছে, ৫০-৭৯ বছর বয়সে মৃত মহিলাদের মধ্যে বেশিরভাগেরই মৃত্যু হয়েছে কম বা বেশি ঘুমনোর জন্য। তাই ডাক্তারদের পরামর্শ, If you sleep better, yoy can certainly live better. অর্থাত্ পর্যাপ্ত ঘুমোন, ভালোভাবে বাঁচুন।
৪. হার্টের অসুখ, স্ট্রোক, ডায়াবেটিজ, অকাল বার্ধক্যের থেকে শরীরে জ্বলুনি অনুভূতি হয়। গবেষণা বলছে, যাঁরা রাতে ৬ ঘণ্টা বা তার কম ঘুমোন, তাঁরাই বেশিরভাগ এ ধরনের সমস্যায় ভোগেন। কারণ তাঁদের রক্তে ইনফ্লামেটরি প্রোটিনের পরিমাণ বেড়ে যায়। ২০১০-এর গবেষণায় দেখা গিয়েছে, যাঁরা কম ঘুমোন, তাঁদের শরীরে বেশি পরিমাণে দেখা দেয় সি-রিঅ্যাকটিভ প্রোটিন, যার ফলে হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি বাড়ে।
৫. ঘুমোলে বাড়বে সৃজনশীলতা। হার্ভার্ড ও বোস্টন বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা বলছেন, ঘুমানোর সময় স্মৃতি ও নানা কাল্পনিক বিষয় মাথায় ঘোরাফেরা করে। এজন্য ভালো ঘুম হলে তা সৃষ্টির কাজে বিশেষ সহায়ক হয়। বিশেষত ছবি আঁকার ক্ষেত্রে এটা বিশেষ প্রযোজ্য।
৬. আপনি যদি কোনও খেলোয়াড় হন, তবে আপনার সাফল্যের অন্যতম অস্ত্র নিঃসন্দেহে ঘুম। স্ট্যান্ডফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণায় দেখা গিয়েছে, কলেজের ফুটবল খেলোয়াড়রা, যাঁরা রাতে ১০ ঘণ্টা ঘুমান, ৬-৮ সপ্তাহ পর তাঁদের স্ট্যামিনা বেড়ে যায় কয়েক গুণ। দূরে চলে যায় যাবতীয় ক্লান্তি। গবেষণা বলছে, কলেজে যেসব ছাত্রছাত্রীরা পরীক্ষায় খুব ভালো ফল করেন, তাঁরা অন্যদের থেকে বেশি ঘুমোন। যাঁরা কম ঘুমোন, তাঁদের ফলাফল হয় খারাপের দিকে।
৮. ঘুম কম হলে শিশুরা অমনোযোগী হয়ে পড়ে। ২০০৯ সালের একটি গবেষণায় দেখা গিয়েছে, ৭-৮ বছরের শিশুরা রাতে ৮ ঘণ্টার কম ঘুমোলে বদরাগী ও অমনোযোগী হয়ে পড়ে।
৯. পর্যাপ্ত ঘুমিয়ে স্বাস্থ্যকর ওজন পান। আপনি যদি সুস্বাস্থের জন্য ডায়েট চার্ট মেন্টেন করেন, তবে ঘুমনোর ব্যাপারটিও মাথায় রাখুন। গবেষণা বলছে, ডায়েটের পাশাপাশি যাঁরা যথোপযুক্ত ঘুমোন তাঁদের ওজন অন্যদের থেকে ৫৬% বেশি কমে। স্ট্রেস কমাতে বিশেষ সহযোগী ঘুম। রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতেও ঘুমের জুড়ি মেলা ভার।
১১. ঘুম ভালো হলে দুর্ঘটনার প্রবণতাও কমে। ২০০৯সালের ন্যাশনাল হাইওয়ে ট্র্যাফিক সেফটি অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের রিপোর্ট বলছে, মদ্যপ অবস্থায় গাড়ি চালানোর থেকেও মারাত্মক দুর্ঘটনা বেশি হয় ক্লান্ত থাকার জন্য। এক রাত না ঘুমোলেই গাড়ি চালানোর সময় আপনার মনে হবে, মদ্যপান করেছেন।
১২. পর্যাপ্ত ঘুমোলে হতাশা কমে। ঘুমে ঘাটতি থেকে আসে হতাশা ও উদ্বেগ।
কাজেই আজকের দিনে একটাই কথা বলার। ভালো থাকতে ভালো ঘুমোন।