সুনামগঞ্জে পতিত জায়গায় মিষ্টি কুমড়া চাষে স্বাবলম্বী কৃষক

সুনামগঞ্জ
কুমড়া ক্ষেতে এক চাষী  © বাসস

সুনামগঞ্জ জেলার জামালগঞ্জ উপজেলায় ইরি ও বোরো ধান চাষাবাদের সঙ্গে জমির পতিত জায়গায় মিষ্টি কুমড়া চাষ হচ্ছে। এরই মধ্যে উপজেলায় প্রত্যন্ত অঞ্চলের পতিত জমিতে কুমড়ার চাষ করে অনেকেই অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হয়েছেন।

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার ৬টি ইউনিয়নের প্রতিটি এলাকায় মিষ্টি কুমড়ার চাষ হয়ে থাকে। এ  অঞ্চলের মাটি উর্বর হওয়ায় চাষিরা কুমড়ায় বেশ ভালো ফলন পেয়ে থাকেন। শুধু যে মিষ্টি কুমড়া এমনটা নয়, এ গাছের পাতা শাক হিসেবে বিক্রি হয়। এদিকে ইরি বোরো ধান চাষাবাদের পাশাপাশি উঁচু জমি পতিত না রেখে সাথী ফসল হিসেবে কম খরচে বেশী লাভবান  হওয়ায় কৃষকেরা জমিতে মিষ্টি কুমড়া চাষে উৎসাহিত হচ্ছেন বলে জানান উপজেলা কৃষি অফিসার মোহাম্মদ আলা উদ্দিন ।

স্থানীয় কামিনীপুর গ্রামের কৃষক জয়নাল আবেদীন জানান, আমি ২ বিঘা জমিতে টমেটো ও মিষ্টি কুমড়ার চাষ করেছি। প্রথমে টমেটো বিক্রি করেছি। তার পাশাপাশি টমেটো গাছের  পাশাপাশি মষ্টি কুমড়ার চাষ করেছি। একই জায়গায় দুই ফসলের লাভ। টমেটো চাষে আমার দুই বিঘা জমিতে ৬০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। বিক্রি করেছি এক লক্ষ টাকার উপরে। একই জমিতে মিষ্টি কুমড়া এখন বড় হয়েছে, আগামী সপ্তাহে বিক্রি করতে পারবো। কোন ধরনের দুর্যোগ না হলে আশা করি পঞ্চাশ হাজার টাকার মত মিষ্টি কুমড়া বিক্রি করতে পারবো। এছাড়াও প্রতিটি বাড়ির আঙ্গিনায় লাউ চাষের পর অনেক মহিলারা মিষ্টি কুমড়ার চাষ করেছেন।

কামিনীপুর গ্রামের পারুল বেগম, শারমিন সুলতানা, রাজিয়া খাতুনসহ অনেকেই মিষ্টি কুমড়ার চাষ করে এরই মধ্যে লাভবান হয়েছেন বলে জানান। তারা জানান, প্রতি মণ হাইব্রিড জাতের মিষ্টি কুমড়া এখন ১ হাজার টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। প্রতিটি কুমড়া ২-৪ কেজি ওজনের হয়ে থাকে। যা পাইকাররা স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে বিভিন্ন জায়গায় বিক্রি করেন। পাইকাররা সরাসরি জমি থেকেই কুমড়া কিনে নিয়ে যাচ্ছেন। এবার ফলন ভালো হওয়ায় বেশী বিক্রি হবে বলে জানান তারা।

সুনামগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক বিমল চন্দ্র সোম বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থা বাসসকে  বলেন, প্রধানমন্ত্রী  শেখ হাসিনা বলেছেন,দেশের এক ইঞ্চি জায়গাও পতিত রাখা যাবে না। এরই ধারাবাহিকতায় উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় পতিত থাকা জমিতে কম খরচে মিষ্টি কুমড়া চাষ করতে কৃষকদের উৎসাহিত করা হচ্ছে। চলতি বছর উপজেলায় ৭৫ হেক্টর জমিতে বারোমাসি, বারী মলিকাসহ স্থানীয় জাতের কুমড়া উৎপাদিত হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় অধিক ফলন হয়েছে। আগে বিভিন্ন এলাকা থেকে মিষ্টি কুমড়া আমদানী হতো। এখন এ উপজেলায় মিষ্টি কুমড়া অন্য উপজেলায় যাচ্ছে। আগামীতে কৃষকদের উৎসাহ বাড়াতে প্রণোদনাসহ সবধরনের সহযোগিতা করা হবে। সূত্র: বাসস


মন্তব্য


সর্বশেষ সংবাদ