১ সেপ্টেম্বর ছাত্র সমাবেশ, ব্যাপক প্রচার-প্রচারণায় ছাত্রলীগ
- লিটন ইসলাম, ঢাবি প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ২৯ আগস্ট ২০২৩, ০৫:১৩ PM , আপডেট: ২৯ আগস্ট ২০২৩, ০৬:০০ PM

আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকার ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিজয় নিশ্চিতে আগামী ১ সেপ্টেম্বর রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ‘স্মরণকালের সর্ববৃহৎ’ ছাত্র সমাবেশ করার ঘোষণা দিয়েছে আওয়ামী লীগের ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগ। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার।
সমাবেশ সফল করতে সকল প্রকার প্রস্তুতি প্রায় সম্পন্ন করেছে সংগঠনটি। এ লক্ষ্যে মাইকিং করা, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার-প্রচারণা ও লিফলেট বিতরণ করতে স্ব স্ব ইউনিটকে ইতোমধ্যে নানা নির্দেশনা দিয়েছে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক।
সংগঠনের দপ্তর সেল সূত্রে জানা যায়, ছাত্র সমাবেশ সফল করতে নানা উদ্যোগ হাতে নিয়েছে ছাত্রলীগ। এ লক্ষ্যে ইতোমধ্যে প্রস্তুতি ও বর্ধিত সভা সম্পন্ন হয়েছে। কেন্দ্রীয় সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক বাদে ২৯৮ সদস্য বিশিষ্ট ১৮টি উপ-কমিটি গঠন করা হয়েছে। এছাড়াও কেন্দ্রীয় নেতাদের নেতৃত্বে ১২৭টি সমন্বয় টিম গঠিত হয়েছে। গত রবিবার সমাবেশ সফল করতে স্ব স্ব ইউনিটকে বিভিন্ন নির্দেশনাও দিয়েছে সংগঠনটির কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদ।
সভাপতি সাদ্দাম হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান স্বাক্ষরিত ওই বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ‘ছাত্রলীগের প্রতিটি কর্মী এই সমাবেশের খবর ছড়িয়ে দিতে আত্মনিয়োগ করবে, রোদ-বৃষ্টি- ঝড়কে উপেক্ষা করবে, রোগ-শোক-ব্যথাকে ভুলে যাবে। ছাত্রলীগই পেরেছে, ছাত্রলীগই পারবে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিবের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে স্মরণকালের সর্ববৃহৎ ছাত্র সমাবেশ সফল করার লক্ষ্যে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সকল ইউনিটকে স্ব স্ব ইউনিটে মাইকিং, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারণা এবং লিফলেট বিতরণের নির্দেশ দেয়া হলো।’
এদিকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম বিশেষ করে ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, টুইটারে বিভিন্নভাবে প্রচার-প্রচারণা চালাচ্ছেন ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীরা। ‘স্মরণকালের সর্ববৃহৎ ছাত্রসমাবেশ’ নামে ফেসবুকে একটি ইভেন্ট খুলেছে সংগঠনটি। এছাড়া, দেশের বিভিন্ন জায়গায় ‘চলো চলো ঢাকা চলো’ লেখা সম্বলিত পোস্টার বিতরণ করা হচ্ছে। ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা তাদের ব্যক্তিগত ফেসবুক অ্যাকাউন্টের মাধ্যমেও সমাবেশের বিভিন্ন আপডেট দিচ্ছেন।
এ বিষয়ে সংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটির তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক এবং সমাবেশ উপলক্ষে গঠিত তথ্য ও প্রযুক্তি বিষয়ক উপ-কমিটির সদস্য মুসান্না আল গালিব বাংলাদেশ মোমেন্টসকে বলেন, ছাত্র সমাবেশ উপলক্ষে দেশজুড়ে ব্যাপক প্রচার-প্রচারণা চলছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম- ফেসবুক , ইনস্টাগ্রাম, হোয়াটসঅ্যাপ থেকে শুরু করে বিভিন্ন মাধ্যমে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা প্রচারণা চালাচ্ছেন। যে যার প্রোফাইল থেকে বিভিন্ন আপডেট দিচ্ছে। শুধু তাই নয়, সমাবেশের উপরে ভিডিও ডুকমেন্টারি বানানো হচ্ছে। ফেসবুকে ইভেন্ট খুলা হচ্ছে। ’চলো চলো ঢাকা চলো ’ এই স্লোগানে মুখরিত হয়ে গেছে সারাদেশ।
সংগঠনের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান বাংলাদেশ মোমেন্টসকে বলেন, ছাত্রলীগের প্রতিটি ইউনিটকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে, ছাত্র সমাজের দ্বারে দ্বারে গিয়ে সমাবেশের বিষয়ে প্রচার প্রচারণা চালাতে। এ ক্ষেত্রে মাইকিং করা, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট দেয়া, লিফলেট বিতরণসহ বিভিন্নভাবে ছাত্র সমাজকে আগামী এক তারিখের সমাবেশে উপস্থিত হতে উদ্বুদ্ধ করার কথা বলা হয়েছে।
সমাবেশ সফল করতে সকল প্রকার প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে বলে জানান ইনান। তিনি বলেন, ‘ছাত্র সমাবেশ সফল করতে আমাদের সকল প্রস্তুতি প্রায় শেষের দিকে।'
এর আগে গত শনিবার দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে ছাত্রলীগ সভাপতি সাদ্দাম হোসেন ছাত্র সমাবেশে পাঁচ লাখ শিক্ষার্থী উপস্থিতির ঘোষণা দেন। সাদ্দাম বলেন, এর আগে অনেক মিছিল-মিটিং হয়েছে। কিন্তু শুধু শিক্ষার্থীদের জন্য কোনো সমাবেশ করা হয়নি। এ কারণে আমরা এটাকে বিশাল ছাত্র সমাবেশ বলে আখ্যায়িত করেছি। সারাদেশ থেকে প্রায় ৫ লাখ শিক্ষার্থী সমাবেশে যোগ দেবে।
তিনি আরও বলেন, 'আমরা ৩১ আগস্ট সমাবেশ করার পরিকল্পনা করেছিলাম। কিন্তু দুর্ভোগের কথা বিবেচনা করে এবং একই দিনে এইচএসসি পরীক্ষা থাকায় তারিখ পরিবর্তন করেছি। আমরা ১ সেপ্টেম্বর সমাবেশ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। সমাবেশে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জয় উপহার দিতে শপথ নেবে দলটির নেতাকর্মীরা।
সমাবেশ উপলক্ষে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানকে সাজানো হচ্ছে ভিন্ন সাজে। সমাবেশ স্থল তৈরির কাজ চলছে পুরোদমে। বুধবার সোহরাওয়ার্দী উদ্যান সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, মঞ্চ ও সার্বিক প্রস্তুতির কাজ প্রায় শেষের দিকে। কাজ তদারকিতে রয়েছেন ছাত্রলীগের নেতৃত্ব পর্যায়ের নেতারা।
এদিকে সমাবেশ উপলক্ষে সংগঠনের তৃণমূল পর্যায়ের নেতাকর্মীদের মাঝে বইছে উচ্ছ্বাস ও উদ্দীপনা। সমাবেশ সফল করতে দিন-রাত কাজ করে যাচ্ছেন এসব নেতৃবৃন্দ।
এ বিষয়ে নীলফামারী জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মো. মনিরুল হাসান শাহ আপেল বাংলাদেশ মোমেন্টসকে বলেন, ছাত্র সমাবেশ সফল করতে আমরা সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নিয়েছি। আমাদের নীলফামারী জেলা থেকে দুই হাজারের বেশি নেতা-কর্মী সমাবেশে যোগ দিবে। এ লক্ষ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আমরা প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছি। ইউনিয়ন, পৌরসভাগুলোতে গিয়ে আমরা প্রস্তুতি সভা সম্পন্ন করেছি। প্রতিটা ইউনিট থেকে শুরু করে একবারে ইউনিয়ন, ওয়ার্ড পর্যন্ত ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা সমাবেশে যোগদানে প্রস্তুত আছে এবং সবাই যাবে ইনশাআল্লাহ।