খরায় ঝরছে আমের গুটি, ফলন কমের আশঙ্কা

চাঁপাইনবাবগঞ্জে
  © ফাইল ছবি

টানা এক সপ্তাহের দাবদাহে চাঁপাইনবাবগঞ্জে ঝরে যাচ্ছে আমের গুটি। পানি সেচ ও নানা পদ্ধতি অবলম্বন করেও গুটি ঝরে পড়া ঠেকানো যাচ্ছে না। এতে বিপাকে পড়েছেন চাষিরা। তাঁরা বলছেন, প্রতিকূল আবহাওয়ার কারণে এবার আমের ফলনে বিপর্যয় ঘটবে। এতে চরম ক্ষতিগ্রস্ত হবেন চাষিরা। এদিকে গবেষকেরা বলছেন, প্রয়োজনীয় পরিচর্যার মাধ্যমে আমের গুটি ঝরা রোধ করা সম্ভব। 

চাষিরা জানান, একে তো এ বছর প্রতিকূল আবহাওয়া আর অফ ইয়ার, অর্থাৎ কম ফলনের বছর হওয়ায় আমের মুকুল এসেছে কম; তার ওপর খরায় আম ঝরে যাওয়ায় বিপাকে পড়েছেন চাষিরা। তবে খরা থেকে আম রক্ষার জন্য নিয়মিত পরিচর্যা করে যাচ্ছেন। এতে উৎপাদন খরচ বেড়ে যাচ্ছে। 

শিবগঞ্জের আম উদ্যোক্তা আহসান হাবিব বলেন, এবার বাগানে প্রায় ৭০ ভাগ গাছে মুকুল এসেছিল। মার্চ মাসের ২০ ও ২১ তারিখে যে বৃষ্টি হয়েছিল, সেই বৃষ্টিতে সব মুকুল নষ্ট হয়ে যায়। এ ছাড়া যে আমগুলো গাছে ঝুলছিল, এর সিংহভাগ খরায় ঝরে যাচ্ছে। এতে খরচ উঠবে না। 

শিবগঞ্জ উপজেলার বিনোদপুর এলাকার আমচাষি শাহাৎ হোসেন বলেন, চলতি বছর ছয় বিঘার একটি বাগানে অল্প গুটি এসেছিল। সেই গুটি ধরে রাখতে যুদ্ধ করতে হচ্ছে। প্রায় দিনই সেচসহ কীটনাশক স্প্রে করতে হচ্ছে। তার পরও গুটি ঝরা রোধ করা যাচ্ছে না। এতে আমের ফলন বিপর্যয় ঘটবে। 

সদর উপজেলার রাণীহাটি এলাকার বাগান ব্যবসায়ী এখলাসুর রহমান বলেন, ‘গত ফেব্রুয়ারি মাসে ৯ বিঘার একটি বাগান কিনি সাড়ে ৫ লাখ টাকায়। সেই বাগানে মুকুল ও গুটি কম এসেছে। এতে বাগানে ২ লাখ টাকারও আম উৎপাদন হবে না। চরম ক্ষতির মুখে পড়তে হবে।’

চাঁপাইনবাবগঞ্জ আঞ্চলিক উদ্যানতত্ত্ব গবেষণা কেন্দ্রের মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মোখলেসুর রহমান বলেন, খরার মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় চাষিদের খুবই সতর্কতার সঙ্গে গাছ পরিচর্যা করতে হবে। এ ক্ষেত্রে গাছের গোড়ায় নিয়মিত সেচ দিতে হবে। পাশাপাশি নানান ছত্রাকনাশক স্প্রে করতে হবে। 

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক ডা. পলাশ সরকার বলেন, চলতি মৌসুমে আমের অফইয়ার ধরা হয়েছে। কারণ গত বছর প্রচুর পরিমাণে আম এসেছিল। এবার মুকুল ও গুটি কম এসেছে। সেই গুটি টিকিয়ে রাখতে মাঠ পর্যায়ে চাষিদের নানান পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তারা কৃষকদের সঙ্গে কাজ করছেন। 

কৃষি বিভাগের সূত্রমতে, এবার চাঁপাইনবাবগঞ্জে ৩৭ হাজার ৬০৪ হেক্টর জমিতে আমবাগান রয়েছে। উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে প্রায় সাড়ে ৪ লাখ মেট্রিকটন আম। তবে প্রতিকূল আবহাওয়ার কারণে উৎপাদনর লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হবে না বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।


মন্তব্য


সর্বশেষ সংবাদ