একটি দেশ স্বাধীন হয়েছিল ফুটবলের জন্য

ফুটবল
ফুটবল খেলে স্বাধীনতাযুদ্ধ  © সংগৃহীত

একটা ফুটবল ম্যাচকে কেন্দ্র করে যখন ভেঙে যায় একটি দেশ; জন্ম নেয় একটি নতুন সত্তার, নতুন রাষ্ট্রের। ফুটবলকে যেখানে শুধু একটা খেলাই নয় বরং রাষ্ট্রীয়ভাবেই বিবেচনা করা হয় জাতীয় চেতনা হিসেবে। তবে তার পেছনেও আছে এক অনবদ্য উপাখ্যান।

সময়টা ১৯৯০, ১৩ মে। অস্তমিত সূর্যের মতোই ভাঙনের মুখে তৎকালীন যুগোস্লাভিয়া। যেদিন স্থানীয় লিগে ক্রোয়েশিয়ার ডায়নামো জাগরেবের মুখোমুখি হয়েছিল সার্বিয়ার রেড স্টার বেলগ্রেড। তবে ম্যাচ ছাপিয়ে দুই ক্লাবের খেলোয়াড়, সমর্থকরা লিপ্ত হয় সংঘর্ষে। ঘটনা ভিন্ন দিকে মোড় নেয় যুগোস্লাভীয় পুলিশ ক্রোয়াট সমর্থকদের ওপর চড়াও হলে।

সেই ঘটনার পর ভিন্ন রূপ পায় ক্রোয়েশিয়ার স্বাধীনতার আন্দোলন। দাবানলের মতো যা ছড়িয়ে পরে সর্বত্র। ২৫ জুন নিজেদের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন ক্রোয়াটদের প্রথম প্রেসিডেন্ট ফ্রাঞ্জো তুদজম্যান।

এরপর ফুটবল আর ক্রোয়াট জাতীয়তাবোধ মিলেমিশে হয়ে গেছে একাকার। ভাবা যায় মোটে ২২ হাজার বর্গমাইলের একটি দেশ, যার জনসংখ্যা ৪০ লাখের কিছু বেশি, বিশ্ব ফুটবলে তাদের রাজত্বে বিপর্যস্ত পাঁচবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ব্রাজিলও।

অ্যাড্রিয়াটিক সাগরের কোল ঘেষা বলকান অঞ্চলের এই দেশটি প্রথম বিশ্বকাপে অংশ নেয় ১৯৯৮ সালে। প্রথম আসরেই বাজিমাত, দাভোর সুকের ম্যাজিকে তারা হয় তৃতীয়। সুকের জেতেন গোল্ডেন বুট।

২০০২ থেকে ১৮ পর্যন্ত কিছুটা পাদপ্রদীপের নিচেই থাকে ক্রোয়েশিয়ার ফুটবল। ২০১০ সালে তারা কোয়ালিফাই-ই করতে পারেনি বিশ্বকাপে। কিন্তু পাশার দান পাল্টে যায় রাশিয়া বিশ্বকাপে।

মানজুকিচ, প্যারিসিচ, র‌্যাকিটিচ কিংবা সোনার ছেলে মদ্রিচে ভর করে ব্লেজাররা পায় সোনালি প্রজন্ম। সেবার বিশ্বকে চমকে দিয়ে ফাইনালে ওঠে ক্রোয়েশিয়া। তবে সন্তুষ্ট থাকতে হয় রানার্সআপ হয়েই।

এবারও চলছে ক্রোয়াটদের রূপকথার উপাখ্যান। বেলিয়াম, কানাডা, জাপান আর ব্রাজিলকে বিদায় করে দিয়ে এরই মধ্যে তারা জায়গা করে নিয়েছে সেরা চারে। সেমি ফাইনালে তারা খেলবে আর্জেন্টিনার বিপক্ষে।