পেলের মৃত্যুর খবর জানেন না তার শতবর্ষী মা

পেলে
  © ফাইল ফটো

মাতৃভক্ত ছিলেন পেলে। তার ফুটবলার হওয়ার বড় উৎসাহ ছিলেন মা। বাল্যকালে বাবার থেকে ফুটবল দীক্ষা নিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু মা ছিল তার সুখ-দুঃখের আশ্রয়স্থল। গৃহকাতর এডসন নাসিমেন্তো সান্তোসে ডাক পাওয়ার পরও ক্যাম্প ছেড়ে চলে আসতে চেয়েছিলেন। 

শুধু মায়ের কথা শুনে, মায়ের কষ্ট, অভাবের সংসারের কথা ভেবে কান্না চেয়ে সান্তোসে থেকে গিয়েছিলেন পেলে। ব্রাজিলের হয়ে তিনটি বিশ্বকাপ জয়ী ওই পেলে ৮২ বছর বয়সে ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। অথচ তার মা ডোনা সেলেস্তে বেঁচে আছেন।

তার মায়ের বয়স হয়েছে ১০০ বছর। শয্যাশায়ী হয়ে বেঁচে আছেন। বয়সের ভারে নুয়ে পড়েছেন। কিন্তু ছেলের মৃত্যুর ব্যাপারে কিছুই জানেন না মা ডোনা সেলেস্তে। বরং তাকে শোনানো হয়নি। এক সাক্ষাৎকারে এমনটাই বলেন, পেলের ৭৮ বছর বয়সী বোন মারিয়া লুসিয়া দো নাসিমেন্তো। খবর দ্যা সান, মিরর ইউকে, ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের।

কয়েক মাস আগেই মায়ের শতবর্ষ উপলক্ষে ছবি পোস্ট করেছিলেন পেলে। ব্রাজিলের পক্ষ থেকে সম্প্রতি 'ব্রাজিলিয়ান মাদার অব দ্য ইয়ার' সম্মাননা দেওয়া হয়েছে তাকে। সেই মাকে রেখে পেলে এখন অন্যলোকে। অথচ তিনি জানতেন যে, পেলে হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। কিন্তু এখনো মৃত্যুর ব্যাপারে অবগত নন দোনা।

পেলের বোন মারিয়া বলেন, 'আমরা কথা বলেছিলাম কিন্তু তিনি মৃত্যুর ব্যাপারে কিছু জানেন না। তার একটি নিজস্ব জগত আছে, সেখানে তিনি ভালোই আছেন। মাঝেমধ্যে আমি তাকে বলেছি, 'সেলেস্তিকা, দিকোকে (পেলে) দেখতে এমন লাগে এখন।' তিনি চোখ খুলে বললেন, 'তার জন্য প্রার্থনা করো। কিন্তু মৃত্যুর ব্যাপারে অবগত নন।'

মারিয়া বলেন, 'খুব কঠিনভাবে কাটছে সময়। আমরা কেউই চিরস্থায়ী না, তবে তার চলে যাওয়ার খবর আমাদের হৃদয়কে খুব শক্ত করে তুলেছে। এটা মেনে নেওয়া খুবই কঠিন। কিন্তু মৃত্যু জিনিসটা ইশ্বরের হাতে। আমরা তার সঙ্গে ছিলাম। জানতাম সে চলে যাচ্ছে। সে বলেছিল, ইশ্বর তাকে ডাকছে।'

সাও পাওলোর আলবার্ট আইনস্টাইন হাসপাতালেই পেলেকে শেষকৃত্যের জন্য প্রস্তুত করা হবে। পেলের শেষ ইচ্ছা অনুযায়ী, তার ক্লাব সান্তোসে নেওয়া হবে। সেখানে সাধারণ জনগণ এবং বিশিষ্ট ব্যক্তিরা তার প্রতি শেষ শ্রদ্ধা জানাবেন। এরপর প্যারেড করে তাকে নেওয়া হবে মায়ের কাছে। পরিবারের একান্ত জনদের নিয়ে তাকে সমাহিত করা হবে।